বিবাহিত ও বহিষ্কৃতদের দিয়ে চলছে জামালপুর জেলা ছাত্রলীগ

জামালপুর জেলা ছাত্রলীগের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে ৪ বছর হলো। দীর্ঘ এই সময় ধরে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই দেশের বৃহৎ এই ছাত্র সংগঠনটির জামালপুর জেলা শাখা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। বর্তমানে জেলা ছাত্রলীগের প্রায় ১৯ জন নেতা বিবাহিত, ৪ জন সাময়িক বহিষ্কৃত ও ১ জন আজীবনের জন্য বহিষ্কৃত।

মেয়াদোত্তীর্ণ জেলা কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রম যেমন স্থবির হয়ে পড়েছে, তেমনি অন্যদিকে জেলা, উপজেলা ও কলেজ কমিটির পদ প্রত্যাশীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। এদিকে জেলা ছাত্রলীগ বলছে, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি ও জেলা আওয়ামী লীগের দিক নির্দেশনা পেলেই জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। আসবে নতুন নেতৃত্ব।

ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামালপুর জেলা শাখা ছাত্রলীগের এক বছর মেয়াদী কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণার পরপরই উপজেলা ও কলেজ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো। বিভিন্ন সময়ে উপজেলা ও কলেজ কমিটি গঠনের জন্য নেতাকর্মীদের উদ্যোগ নেওয়া হলেও অজ্ঞাত কারণে তা বাস্তবে রুপ নেয়নি।

 

মেয়াদোত্তীর্ণ জামালপুর জেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ছবি: সংগৃহীত

এ নিয়ে নেতাকর্মীদের একাংশ হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। উপজেলা, কলেজ এবং জেলা কমিটির পদপ্রত্যাশী কয়েকজন নাম প্রকাশ না করে বলেন, নতুন কমিটি না হওয়ায় মিছিল-মিটিংসহ সাংগঠনিক কার্যক্রমে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি অনেক কমে গেছে।

ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশীরা দীর্ঘদিন থেকে পরিশ্রম ও সময় দিলেও কোন ফল পাচ্ছেন না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা কমেটির পদ প্রত্যাশী এক ছাত্রনেতা বলেন, গঠনতন্ত্র অমান্য করে তারা অবৈধভাবে জেলা ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন দীর্ঘদিন। সহ-সভাপতি সহ অনেক ছাত্রলীগের নেতারাই এখন বিবাহিত।

সংগঠনটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, জেলা শাখার মেয়াদ এক বছর। জেলা শাখাকে এই সময়ের মধ্যেই নবনির্বাচিতদের হাতে দায়িত্বভার বুঝিয়ে দিতে হবে। বিশেষ পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের অনুমোদনক্রমে ৯০ দিন সময় বৃদ্ধি করা যাবে। এই সময়ের মধ্যে সম্মেলন না হলে জেলা কমিটি বিলুপ্ত বলে গণ্য হবে। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ আহ্বায়ক/অ্যাডহক কমিটি গঠন করে ৯০ দিনের মধ্যে সম্মেলন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করবেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হলে আহ্বায়ক/অ্যাডহক কমিটি বাতিল বলে গণ্য হবে এবং কেন্দ্রীয় সংসদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সে হিসেবে জেলা শাখার জন্য নির্ধারিত নীতিগুলো কমিটির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

 

মেয়াদোত্তীর্ণ জামালপুর জেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ছবি: সংগৃহীত

গত ২৮ ফেব্রুয়ারি রাতে জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে জেলা ছাত্রলীগের কমিটির ৫ বছরপূর্তি উপলক্ষে আলোচনাসভা ও কেক কাটার আয়োজন করা হয়। আর এ ছবিগুলো নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে সমালোচনার ঝড়।

হিসেব অনুযায়ী, ৪ বছর পূর্বেই জামালপুর জেলা শাখার মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও পরবর্তী জেলা সম্মেলন কবে হবে তা এখনও ধোঁয়াশাই রয়ে গেছে। ফলে ক্ষোভ সৃষ্টির পাশাপাশি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিজেদের মধ্যে গ্রুপিংয়ে জড়িয়ে পড়ছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিহাদুল ইসলাম নিহাদ পূর্বপশ্চিমকে বলেন, আমার জানা মতে বর্তমান কমিটিতে ১২/১৩ জন বিবাহিত ছাত্রলীগের নেতা রয়েছেন। আর আমরা সদা প্রস্তুত। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি ও জেলা আওয়ামী লীগের দিক নির্দেশনা পেলেই জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। আসবে নতুন নেতৃত্ব।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব এডভোকেট মুহাম্মাদ বাকি বিল্লাহ বলেন, সম্মেলন অবশ্যই হবে। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশ পেলেই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন