‘শুধু গবেষণা করলেই চলবে না, ফলাফল কী জানতে চাই’

প্রযুক্তিবান্ধব উন্নত দেশ গড়তে সরকারের নানা উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে, বিজ্ঞানমনস্ক জাতি হিসেবে গড়ে উঠতে হবে।

তিনি বলেন, শুধু গবেষণা করলেই চলবে না, এই গবেষণার ফলাফলটা কী সেটা জানতে চাই। সেটাও (ফলাফল) যে দেশের কাজে লাগছে সেটাও নিশ্চিত হতে চাই। গবেষণার জন্য আমরা যে অর্থ ব্যয় করছি সেটার রেজাল্টা কি সেটাও দেখতে চাই যে আমরা কী পেলাম।

বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে, শিক্ষার্থী ও গবেষকদের মাঝে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ, এনএসটি ফেলোশিপ ও বিশেষ গবেষণা অনুদান প্রদান শেষে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

দেশকে এগিয়ে নিতে সরকার বিভিন্ন সেক্টরে গবেষণার গুরুত্ব দিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, গবেষণায় আমরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। আমরা চাই আমাদের দেশ এগিয়ে যাক। আর এক্ষেত্রে আমি সব সময় মনে করি গবেষণা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

শেখ হাসিনা বলেন, যেকোনো দেশের উন্নতির জন্য বিজ্ঞান ও গবেষণা একান্তভাবে অপরিহার্য। গবেষণা ছাড়া আসলে কোনো উন্নতি করা যায় না।

গবেষণায় বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠন এবং দক্ষ ও বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্ন বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ ও গবেষক তৈরির উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মরণে আমরা গঠন করেছি ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ ট্রাস্ট’। এই ট্রাস্টের আওতায় প্রতিবছর বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশে-বিদেশে এমএস, পিএইচডি ও পিএইচডি-উত্তর অধ্যয়ন/গবেষণার জন্য ফেলোশিপ দেওয়া হচ্ছে।

২০১০-১১ অর্থ-বছর থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছর পর্যন্ত ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ ট্রাস্ট’ থেকে ৫১৯ জনকে ১৫৫ কোটি ৪৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা ফেলোশিপ দেওয়া হয়েছে বলে জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ ছাড়াও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে এমফিল, পিএইচডি ও পিএইচডি-উত্তর পর্যায়ে শিক্ষার্থী ও গবেষকদের মধ্যে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ দেওয়ার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত ১৩ হাজার ২২৫ জন ছাত্র-ছাত্রী ও গবেষকের মধ্যে ৮২ কোটি ৬২ লাখ টাকা ফেলোশিপ দেওয়া হয়েছে। বর্তমান ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩ হাজার ২০০ জনকে ১৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ফেলোশিপ দেওয়া হচ্ছে।

বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্পে সহায়তার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ফেলোশিপের পাশাপাশি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে গবেষণা ও উন্নয়ন কাজে উৎসাহ ও সহায়তার লক্ষ্যে গবেষণা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিজ্ঞানী-গবেষকদের মধ্যে গবেষণা অনুদান দেওয়া হচ্ছে। বিজ্ঞান গবেষণায় এ কর্মসূচি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

গত ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত ৩ হাজার ২৪২টি প্রকল্পের অনুকূলে ১৩০ কোটি ৯৩ লাখ টাকা গবেষণা অনুদান দেওয়া হয়েছে এবং বর্তমান ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৫৬১ প্রকল্পে ১৬ কোটি টাকা গবেষণা অনুদান দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল, ২৮টির অধিক হাই-টেক পার্ক, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২, গভীর সমুদ্রবন্দর, পদ্মাসেতু, এলএনজি টার্মিনাল, এক্সপ্রেসওয়ে, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প বাস্তনায়নসহ বিভিন্ন সেক্টরে সরকারের উন্নয়ন-অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ পৃথিবীর বুকে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’। আমাদের এ উন্নয়ন অভিযাত্রায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অন্যতম হাতিয়ার।

অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান সভাপতিত্ব করেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন