করোনা আতঙ্কে যশোরে দুই যৌনপল্লী বন্ধ ঘোষণা

বন্ধ করে দেয়া হলো যশোরের দুইটি পতিতাপল্লীর ৫টি গলি। শনিবার রাতে পতিতাপল্লীর সরদার্নীদের ডেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় যশোর পুলিশ।

সরিজমিনে দেখা যায়, শনিবার রাত থেকে পতিতা পল্লীগুলোতে তালা ঝুলছে। বাইরে থেকে কোন ব্যক্তি ভেতরে যেতে পারবে না। তেমনি ভেতরের বাসিন্দারাও বাইরে যেতে পারবে না।

পুলিশ প্রশাসক কর্তৃক নিদের্শ পাওয়ার পর যৌনপল্লী ছেড়ে রোববার সকালে অনেক চলে গেছেন। প্রতিদিন কাজ না করতে পারলে খাবার জুটবে না, এই ভেবে তারা চলে গেছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে পতিতাপল্লী দুইটিতে বসবাসকারী শিশুসহ ২শ’ জনকে খাদ্যসহ প্রয়োজনী সহয়তা প্রদানের জন্য অনুরোধ করেছে পতিতাপল্লী ভিত্তিক সংগঠন শক্তি উন্নয়ন সংঘ ও বঞ্চিতা সমাজ কল্যাণ সংস্থা নামক দুইটি সংগঠন। তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছে।

অন্যদিকে, ঝালাইপট্টির যৌনপল্লীর দুই ঘর মালিক যৌনকর্মীদের কাছে থেকে কোন ভাড়া নেবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। যতদিন সরকারের ঘোষিত লকডাউন থাকবে, ততদিন কোন ভাড়া নেয়া হবে না।

শক্তি উন্নয়ন সংঘের সভাপতি নুর নাহার রানু জানিয়েছেন, সরকার ইতোমধ্যে টাঙ্গাইল ও দৌলদিয়ার পতিতাপল্লী লকডাউন করে দিয়েছে। যশোরের প্রশাসনের নির্দেশ পাওয়ার পর যশোরের দুইটি স্থানের যৌনকর্মীরা তাদের ঘরে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেছেন, যশোরের দুইটিতে মোট ১২০ জন যৌনকর্মী বসবাস করেন। তাদের সন্তান সন্তানাদি নিয়ে মোট ২শ’ বাসিন্দা রয়েছে। তাদের খাবারের জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে টাঙ্গাইল ও দৌলদিয়ায় প্রশাসনের পক্ষে চাল বিতরণ করা হয়েছে।

নুরনাহার রানু জানিয়েছে, ঝালাইপট্টিতে তার ৯টি ও শাহাবুদ্দিন নামে আরো একজনের ১৯টি ঘর রয়েছে। প্রত্যেক যৌনকর্মীর কাছ থেকে প্রতিদিন ঘর ভাড়া বাবদ ২শ’ করে টাকা পেতেন। এখন যেহেতু কোন কাজ নেই, তাই কারো কাছ থেকে ভাড়া নেয়া হবে না।

এছাড়া মাড়য়ারি মন্দির সংলগ্ন পতিতাপল্লীর ১ নম্বর গলিতে ২৪টি ২ নম্বর গলিতে ১৭টি এবং ৩ নম্বর গলিতে ২৮টি ঘর রয়েছে। প্রত্যেক ঘর মালিক যাতে ভাড়া না নেন, সেজন্য বলা হবে।

তবে পতিতাপল্লীর একটি সূত্র জানিয়েছে, রোববার সকালে মাড়য়ারি মন্দির সংলগ্ন পতিতালয় থেকে অনেক যৌনকর্মী অন্যত্র চলে গেছেন। লকডাউনের সংবাদ পেয়ে তারা সেখানে থাকেননি।

এ বিষয়ে কোতয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শেখ তাসমীম আলম জানিয়েছেন, করোনা ঝুঁকির মধ্যে যৌনপল্লীগুলো রয়েছে। দেশের অন্য অঞ্চলের যৌনপল্লীগুলো লকডাউন করে দেয়ার পরে যশোরের দুইটি যৌনপল্লী অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আরিফ বলেন, আমি তাদের সংগঠনগুলোর সাথে কথা বলেছি। তার যদি আবেদন করে, সাহায্যের ব্যবস্থা করা হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন