ভিক্ষুকের কাছ থেকে ১৭ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়া মেম্বর গ্রেপ্তার

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে গ্রামীণ হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ প্রকল্পের সুবিধাভোগী রাহেলা বেগম (৬০) নামের এক ভিক্ষুকের কাছ থেকে ১৭ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ায় মোস্তাফা বেগম নামের এক ইউপি মেম্বরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মেম্বর।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুবনা ফারজানা জানান, ইউপি মেম্বর মোস্তফা বেগম প্রকল্পের সুবিধাভোগী ভিক্ষুক রাহেলা বেগমকে বরাদ্দকৃত ঘর বুঝে পেতে তাকে টাকা দিতে হবে-এই কথা বলে ১৭ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে ঘর বুঝিয়ে দিতে বিলম্ব হওয়ায় রাহেলা বেগম তার অফিসে লিখিত অভিযোগ দিলে তিনি বিষয়টি জানতে পারেন।

 

অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি শনিবার বিকেলে এলাকা পরিদর্শনে যান এবং অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ওই ইউপি মেম্বরকে আটক করে উপজেলা কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। এ সময় ইউপি মেম্বর মোস্তফা বেগম টাকা গ্রহণের কথা স্বীকার করেন। পরে রাতেই ওই ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. মুশিউজ্জামান বাদী হয়ে আটক মোস্তফা বেগমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভৈরব উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান রাশেদ জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় গ্রামীণ হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণের জন্য তৃতীয় ধাপে এই উপজেলার জন্য ৩৬টি ঘরের বরাদ্দ আসে। এর মধ্যে গজারিয়া ইউনিয়ন বরাদ্দ পায় ৬টি। প্রতিটি ঘর তিন লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হচ্ছে।

ওই ইউনিয়নের পুরানগাঁও গ্রামের মৃত জাবেদ আলীর স্ত্রী বৃদ্ধা রাহেলা বেগমের নামে একটি ঘর বরাদ্দ হয়। ভিক্ষাবৃত্তি হলো যার পেশা। এমন একজন অসহায় নারীর নিকট থেকে টাকা গ্রহণ করা খুবই দুঃখজনক বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তিনি আরও বলেন, এই বাসগৃহ নির্মাণ প্রকল্পের সভাপতি হিসেবে স্ব স্ব ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বরদের তত্ত্বাবধানে ঘরগুলি নির্মাণ করা হয়। অভিযুক্ত এই মহিলা মেম্বরের নামে আগেও নানা অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে দুইবার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।

গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব গোলাম সারোয়ার গোলাপ বলেন, খবর পেয়ে তিনি উপজেলা কমপ্লেক্সে গিয়েছিলেন। অভিযুক্ত মহিলা মেম্বর মোস্তফা বেগমকে অভিযোগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। তিনি তাকে জানিয়েছেন, বরাদ্দকৃত ঘরটির আরও কিছু কাজ বাকি আছে। বিল পেয়ে পরিশোধ করে দেবেন মর্মে তিনি ওই টাকাটা হাওলাত হিসেবে নিয়েছিলেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন