মেসি-বার্সা ইস্যুতে নাটকীয় মোড়!

পাশার দান যেন হুট করেই উল্টে গেল! গতকালও মেসিকে তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে তার সঙ্গে বৈঠকে বসতে চেয়েছিলেন ক্লাব সভাপতি হোসে মারিয়া বার্তোমিউ। তবে দেখা করতে রাজি হননি আর্জেন্টাইন তারকা। এবার ঝামেলা এড়াতে বোর্ড কর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে চাইছেন মেসি, তবে রাজি হচ্ছেন না ক্লাব কর্তারা।

তারা শর্ত বেঁধে দিয়েছেন, মেসিকে ক্লাবে থাকতে হবে অথবা অন্য কোথাও যেতে হলে বাই আউট ক্লজের ৭০০ মিলিয়ন ইউরোর পুরোটাই পরিশোধ করতে হবে।

করোনা পরবর্তী দুর্মুল্যের বাজারে এই পাহাড়সম অংক দেয়ার সামর্থ্য নেই কারো সেটি বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পারছে বার্সেলোনা ক্লাব কর্তৃপক্ষ। আর সেই প্যাঁচেই তারা ফেলছে ক্লাব মহাতারকাকে।

মেসি চাইছিলেন ক্লাব কর্তাদের সঙ্গে বসে ট্রান্সফার মানি কমানোর বিষয়ে আলোচনা করতে। তবে সেই সুযোগ পাচ্ছেননা তিনি। ক্লাব সভাপতি বার্তোমিউ সোজা জানিয়ে দিয়েছেন, বাই আউট ক্লজের পুরোটাই পরিশোধ করতে হবে মেসিকে পেতে হলে।

প্রিয় ক্লাবের সঙ্গে দলবদল সংক্রান্ত যেসব ঝামেলা তৈরি হয়েছে তাতে কোনোভাবেই জড়াতে চান না লিওনেল মেসি। তবে ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকছেন তিনি। আর সে হিসেবে ক্লাব কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে রাজি আর্জেন্টাইন সুপারস্টার।

গেল মঙ্গলবার ব্যুরোফ্যাক্সের মাধ্যমে মেসি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন, ন্যু ক্যাম্পের সঙ্গে ২০ বছরের সম্পর্ক ছিন্ন করতে চান তিনি।

গেল কয়েক মাস ধরেই ক্লাবের সঙ্গে বিরোধ চলছিলো ক্লাবটির সর্বকালের সেরা ফুটবলারের। ক্লাব সভাপতির বেশকিছু সিদ্ধান্তে বেশ ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি। বিশেষ করে নেইমারকে বিক্রি করা এবং আবারো কিনতে ব্যর্থ হওয়া, মৌসুমের শুরুতেই কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দেকে বহিষ্কারসহ নানা ঘটনার প্রতিবাদ জানান মেসি।

চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ৮-২ গোলের হারের পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন মেসি।

ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত জানানোর পরই নানা আইনি ঝামেলা চলে আসে সামনে। আগামী বছর পর্যন্ত ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি আছে মেসির। সে হিসেবে ক্লাব তাকে ছাড়তে না চাইলে চুক্তি শেষ না হওয়া পর্যন্ত অন্য কোথাও যেতে পারবেননা ৬ বারের ব্যালন ডি অর জয়ী তারকা। তাছাড়া ক্লাব ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা জানানোর সময়ও পেরিয়ে এসেছেন মেসি, এমন যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে ক্লাবের পক্ষ থেকে।

সবকিছু মিলিয়ে নিজের প্রিয় ক্লাবটির সঙ্গে একধরণের বিরোধে জড়ানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বলা হচ্ছে, দুপক্ষের এমন রেষারেষি শেষপর্যন্ত গড়াতে পারে আদালতেও।

তবে সেসব চাননা মেসি। প্রিয় ক্লাবের সঙ্গে শেষটা এমন হোক চাননা তাই প্রয়োজনে বোর্ড কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেই বিষয়টির সমাধান চান আর্জেন্টাইন তারকা।

এরইমধ্যে তার ঘোষণার পর ন্যু ক্যাম্পের সামনে বিক্ষোভ শুরু করেছে সমর্থকরা। তাদের দাবি মেসির থাকা এবং সভাপতি বার্তোমিউয়ের পদত্যাগ। বিশ্বজুড়েই মেসির সমর্থকরা নানাভাবে জানাচ্ছেন প্রতিবাদ। তারপরও নিজের সিদ্ধান্তে অটল থেকে মেসি চাইছেন এর শান্তিপূর্ণ সমাধান।

ইউরোপিয়ান সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, ক্লাবের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বসে সহজ একটি সমাধান চাইবেন মেসি। ট্রান্সফার ফি কমানো এবং আইনি জটিলতা এড়িয়ে তাকে যেতে দেয়ার কথা জানাবেন তিনি।

এরইমধ্যে অনেক সংবাদমাধ্যম লিখেছে, শিগগিরই মৌনতা ভেঙে জনসম্মুখে নিজের সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করবেন লিওনেল মেসি। তবে কবে নাগাদ সেটি হবে তাও এখনো জানা যায়নি। তবে একটি সংবাদমাধ্যম বলছে, বিদায়ের সবকিছু চূড়ান্ত হলে সমর্থকদের উদ্দেশে কিছু কথা বলতেই প্রকাশ্যে আসবেন সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন