শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি ফেরি সার্ভিস বন্ধ, ক্ষতি কোটি কোটি টাকা

শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে নাব্য সংকটে ৫ম দিনের মতো ফেরি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। অনেকে গাড়িসহ ঘাটে এসে ফিরে যাচ্ছেন বা গাড়ি রেখেই লঞ্চে বা স্পিডবোটে ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা পার হচ্ছেন। এ কারণে লঞ্চ ও স্পিডবোটে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।

সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) আটকাপড়া পণ্যবাহী ট্রাক অর্থাভাবে পাটুরিয়া যেতে পারছে না। দিনের পর দিন খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন চালক-হেলপারা। অপেক্ষা শুধু ফেরি পারাপারের।

সকালে গিয়ে দেখা যায়, নাব্য নিরসনে বিআইডব্লিউটিএয়ের ৯টি ড্রেজার ও পদ্মার সেতুর উচ্চ ক্ষমতার একটি ড্রেজার পলি অপসারণ করছে।

বিআইডব্লিউটিএয়ের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) মো. ছাইদুর রহমান সময় সংবাদকে জানান, পদ্মা সেতুর ড্রেজারটি ঠিকঠাক মতো চালু থাকলে ৩ দিন পর ফেরি চলতে পারবে।

সেতু কর্তৃপক্ষের এরিয়া হচ্ছে সেতুর দু’পাশ মিলে আধা কিলোমিটার নদী। তারা শুধু খুঁটির নিচেই নাব্য সংকট নিরসন করছে।

অপরদিকে সেতু কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২৫ ও ২৬ নম্বর খুঁটির নিচের নাব্যতা ফিরানোর ৯০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে। আর ১০ শতাংশ সোমবার রাতই শেষ হবে। এরপরই মঙ্গলবার ফেরি চলাচল উপযোগী হবে সেতু এলাকা।

তবে দু’পাশে সেতুর আধা কিলোমিটার নদী সেতু কর্তৃপক্ষের অধিগ্রহণকৃত থাকলেও সেগুলো বিআইডব্লিউটিএর নাব্য ফেরাতে ড্রেজিংয়ে বাধা নেই। সেতু কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনেই চ্যানেলে পানির গভীরতা নৌ চলাচলের উপযোগী রাখার দরকার। তবে সেটা প্রয়োজন অনুযায়ী, পুরোটাতো নয়। যেহেতু ফেরি বন্ধে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

জানা গেছে, চ্যানেল সংশ্লিষ্ট ২৬ নম্বর খুঁটি থেকে ২৪ নম্বর খুঁটি পর্যন্ত ৩শ’ মিটার এলাকা ও আশপাশে এখন ১৮ফুট গভীর করে ড্রেজিং করা হচ্ছে। এরপরই ২৫ফুট গভীর করে কেটে রাখা হবে। যাতে শীত মৌসুমেও সমস্যা না হয়। কারণ কয়েক দিনের মধ্যেই পানি আরও কমে যাবে। আর ড্রেজিং করা বালু ফেলা হচ্ছে বহু দূরের অধিগ্রহণকৃত ৩ নম্বর ব্লকে। এ বালু বা পলি এমনভাবে ফেলা হচ্ছে যে বৃষ্টিতেও কোনোভাবে আর নদীতে আশার সুযোগ নেই।

এদিকে বিআইডব্লিউটিএর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সময় সংবাদকে আরও জানান, পদ্মা সেতুর এলাকায় তাদের ৩টি ড্রেজার লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। লৌহজং টার্নিং চ্যানেল প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকা ১৫০ ফুট প্রশস্ত এবং ১৫/১৬ ফুট গভীর করে কাটা হয়েছে। তাদের পুরো এলাকার ড্রেজিং সম্পন্ন, এখন পদ্মা সেতুর এলাকার ড্রেজিং বাকি শুধু।

তবে সেতু কর্তৃপক্ষ এ কথা মানতে নারাজ। তারা জানায়, বিআইডব্লিউটিএয়ের দায় আমাদের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, এটি ঠিক হচ্ছে না। মনে রাখা উচিত ফেরি রুট চালু রাখার দায়িত্ব বিআইডব্লিউটিয়ের। পদ্মা সেতুর কাজের প্রয়োজনেই শুধু ড্রেজিং করার কথা।

বিআইডব্লিউটিসির মহাব্যবস্থাপক মো. আতিকুজ্জামান বলেন, চ্যানেল চলাচল উপযোগী না থাকায় ফেরি চলতে পারছে না। এতে রাজস্ব ক্ষতি ছাড়াও দুর্ভোগ বাড়ছে।

মুন্সিগঞ্জ শহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আরিফুর রহমান জানান, ফেরি বন্ধ থাকায় ব্যবসা-ব্যাণিজ্যে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন