পিকে হালদারের আত্মসমর্পণের প্রস্তাবে সরকারকে কৌশলী হওয়ার তাগিদ

দেশে ফিরে অর্থ উদ্ধার করে সব প্রতিষ্ঠানের দায় পরিশোধ করবেন, পিকে হালদারের এমন আবেদনে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদরা। দেশে ফেরা বা মূলত কেন ফিরতে চান পিকে হালদার, সে বিষয়টি ‘অধরা’ বলছেন তারা। এদিকে, যে কোন মূল্যে আত্মসাৎ করা টাকা ফেরত চান বিনিয়োগকারীরা। 

দেশ ছাড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও কৌশলে পালিয়ে যান প্রশান্ত কুমার বা পিকে হালদার। কিন্তু এবার ইতিহাস পাল্টে কানাডা থেকে ফিরতে চান দেশে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেডের টাকা উদ্ধারে সহযোগিতা করতে চান স্ব-উদ্যোগেই। পিকে হালদারের পাঠানো এমন চিঠি গত ৭ সেপ্টেম্বর আদালতে উপস্থাপন করেন আইএলএফএসএলের আইনজীবী।

যদিও চিঠিতে শর্ত জুড়ে দিয়েছেন, পুলিশি নয়, আদালতের হেফাজতে নিরাপদে দেশে ফিরে তার সব প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করবেন এবং আইএলএফএসএলসহ অন্যান্য সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দায়-দেনা মিটিয়ে ফেলবেন।

আপাত দৃষ্টিতে তার দেশে ফেরার কারণ সৎ উদ্দেশ্যে মনে হলেও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিষয়টি নিয়ে সরকারকে হতে হবে কৌশলী।

এ প্রসঙ্গে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুরের বক্তব্য, ‘এই চিঠির কতখানি মূল্য আছে আমি জানি না। এই চিঠির মূল্য তখনই পাওয়া যাবে, তার উদ্দেশ্য ‘সৎ’ তখনই প্রমাণিত হবে যখন তিনি (পিকে হালদার) শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করে সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করবেন এবং সরকারকে সহযোগিতা করবেন।

এই অর্থনীবিদ বলেন, লোপাটকৃত অর্থ নিয়ে কোন জটিলতা হওয়াতেই পিকে হালদার দেশে ফিরছেন কি না, তা নিয়েও রয়েছে সন্দেহ। তিনি যদি টাকা সরিয়েই থাকেন তাহলে কেন দেশে আসবেন? এবং কেন নিজেকে আইনে সোপর্দ করবেন? এ বিষয়টা কিন্তু এখনও পরিষ্কার না। তার লাভটা কোথায়? এর একটা সদুত্তর তো থাকতে হবে।

এদিকে, পিকে হালদারের কাছ থেকে দ্রুত অর্থ উদ্ধার করে সরকার যেন ডিপোজিটরদের ফিরিয়ে দেয় সেই দাবি জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।

এখন পর্যন্ত পিকে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা করেছে দুদক। যদিও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেড থেকে অন্তত সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

আপনি আরও পড়তে পারেন