নারায়ণগঞ্জে ‘ধর্ষণ ও হত্যার’ শিকার পঞ্চম শ্রেণির এক শিশু শিক্ষার্থীর জীবিত ফিরে আসার ঘটনার সার্বিক বিষয়ে বিচারিক অনুসন্ধানে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এছাড়া নারায়ণগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ওই ঘটনার এফআইআর, জবানবন্দি, ভিকটিম, আসামি সবার বক্তব্য দিয়ে প্রতিবেদন ৪ নভেম্বরের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এ ঘটনায় ২৫ আগস্ট নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় করা মামলা এবং মামলা পরবর্তী প্রক্রিয়ার শুদ্ধতা, বৈধতা এবং যৌক্তিকতা নিয়ে মামলার নথি তলব চেয়ে পাঁচ আইনজীবী হাইকোর্টে আবেদন জানান
পরে ২৭ আগস্ট শুনানি শেষে ছাত্রীর জীবিত ফিরে আসার ঘটনায় সাবেক তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেন হাইকোর্ট। এ মামলার নথিসহ হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তাকে। সে অনুসারে তারা হাজির হয়ে ১৭ সেপ্টেম্বর ব্যাখ্যা দেন। এরপর আদালত ২৪ সেপ্টেম্বর আদেশের জন্য দিন রাখেন।
পাঁচ আইনজীবীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মোহাম্মদ শিশির মনির। সাবেক তদন্ত কর্মকর্তার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন।
আবেদনকারী পাঁচ আইনজীবী হলেন: আইনজীবী মো. আসাদ উদ্দিন, মো. জোবায়েদুর রহমান, মো. আশরাফুল ইসলাম, মো. আল রেজা আমির এবং মো. মিসবাহ উদ্দিন।
প্রসঙ্গত: গত ২৪ আগস্ট ‘ধর্ষণের পর নদীতে মরদেহ ফেলে দেয়া স্কুলছাত্রীর ৪৯ দিন পর জীবিত ফিরে আসার খবর প্রকাশ হয়।
ঘটনার বিবরণী উল্লেখ করে আইনজীবী শিশির মনির বলেন, গত ৪ জুলাই পঞ্চম শ্রেণির ওই ছাত্রী নিখোঁজ হয়। গত ৬ আগস্ট নিখোঁজ স্কুলছাত্রীর বাবা নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ আব্দুল্লাহ, রকিব এবং খলিল নামে তিন জনকে গ্রেফতার করেন। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। স্বীকারোক্তিতে তারা বলেন, যে তারা ওই ছাত্রীকে গণধর্ষণের পর হত্যা করে মরদেহ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছেন।
জবানবন্দি নেয়ার পর আসামিদের জেলে পাঠানো হয়। তবে ২৩ আগস্ট ওই ছাত্রী বাড়ি ফিরে আসে। পরে তার বাবা-মা তাকে নিয়ে থানায় হাজির হন। এখন প্রশ্ন উঠেছে, আসামিরা কীভাবে ধর্ষণ ও হত্যা সম্পর্কিত স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, যেখানে ওই ছাত্রী অক্ষত অবস্থায় ফেরত এসেছে?
আবেদনে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপার, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, বাদী এবং আসামিদের বিবাদী করা হয়।
