নৌকায় ২ দিন আটকে রেখে গৃহবধূকে গণধর্ষণ

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় একটি জলমহালের পাহারাদারের নৌকায় এক গৃহবধূকে (২৪) বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে তুলে নিয়ে দুদিন আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে ধর্ষিতা ওই গৃহবধূ নিজেই বাদী হয়ে উপজেলার ‘মুকশেদপুর দিঘর’ নামে ওই জলমহালের ছয়জন পাহারাদারকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্মপাশা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে উপজেলার নওধার গ্রামের মৃত আব্দুল হেকিমের ছেলে মানিক মিয়া (৩২) ও একই উপজেলার ঘিরইল গ্রামের মৃত দুলাল মিয়ার ছেলে নিজাম উদ্দিন (২০) নামে দুই পাহারাদারকে গ্রেপ্তার করে।

 

মামলার বাকি আসামিরা হলেন উপজেলার বানারশিপুর গ্রামের শুক্কুর আলী মেম্বারের ছেলে আয়নাল হক (৩৮), একই গ্রামের সিদ্দিক মিয়ার ছেলে নূরুল হক (৩৫), আব্বাস আলীর ছেলে বাচ্চু মিয়া (৪২) ও একই উপজেলার বীর দক্ষিণ গ্রামের কদ্দুস মিয়ার ছেলে অলি উল্লা (৪০)। আসামিরা সবাই ওই জলমহালের পাহারাদার বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর সকালে ওই গৃহবধূকে তাঁর ১৮ মাস বয়সের এক পুত্রসন্তানসহ পাশের সাচনা বাজার ট্রলারঘাট থেকে নিজ বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে জলমহালসংলগ্ন রাজনাভিটা নামক নির্জন স্থানে তাকে দুদিন নৌকায় আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করার পরদিন বিকেলে মা ও ছেলেকে মুক্ত করে দেন পাহারাদাররা।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, গত ২৭ সেপ্টেম্বর ভোরে ওই গৃহবধূ তার শিশু সন্তানকে নিয়ে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার মাখরগাঁও গ্রামের বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়ি ধর্মপাশা উপজেলার সরস্বতীপুর গ্রামে আসার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পরে ওই দিন সকাল ১১টার দিকে তিনি পাশের সাচনা বাজার ট্রলারঘাটে পৌঁছান এবং সেখানে তিনি ট্রলারের জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। এ সময় ওই ট্রলারঘাটে স্বামীর বাড়ির এলাকার পরিচিত ওই জলমহালের পাহারাদার মানিক মিয়া ও নিজাম উদ্দিনের সঙ্গে দেখা হয়। তখন তারা ওই গৃহবধূকে তাদের ট্রলারে করে স্বামীর বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে নিয়ে আসে। পরে তারা তাকে বাড়ি পৌঁছে না দিয়ে তাদের জলমহলসংলগ্ন রাজনাভিটা নামক নির্জন স্থানে নিয়ে তাকে ট্রলারে দুই দিন আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে এবং এ বিষয়ে কাউকে কিছু জানালে তাকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিয়ে মা-ছেলেকে মুক্তি দেয়। এরপর থেকেই ওই গৃহবধূ তার সাথে ঘটে যাওয়া এ বিষয়টি নিয়ে মারাত্মক দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন। একপর্যায়ে তিনি গত সোমবার বিষয়টি তাঁর স্বামীর কাছে খুলে বলেন এবং মঙ্গলবার রাতে তাঁরা থানায় এসে এ মামলাটি দায়ের করেন।

ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মামলার পরপরই এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামি নিজাম উদ্দিন পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছে। ধৃত দুই আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ওই গৃহবধূকেও ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য সুনামগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন