মামুনুল হককে ঠেকাতে অক্সিজেন মোড়েও ছাত্রলীগের অবস্থান

মামুনুল হককে ঠেকাতে অক্সিজেন মোড়েও ছাত্রলীগের অবস্থান

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য দেওয়া হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে ঠেকানোর ঘোষণা দিয়ে চট্টগ্রাম নগরের অক্সিজেন মোড়েও অবস্থান নিয়েছে ছাত্রলীগ। শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) দুপুর ২টা থেকে অক্সিজেন মোড় চত্বরে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আরশেদুল আলম বাচ্চুর নেতৃত্বে শতাধিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী সড়কে অবস্থান নেন।

পরে নগর ছাত্রলীগ সভাপতি ইমরান আহম্মেদ ইমুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীরের সঞ্চলনায় বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে আরশেদুল আলম বাচ্চু বলেন, সকাল থেকে জিইসি মোড়, দুই নম্বর গেইট ও দুপর থেকে অক্সিজেন মোড় চত্বরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন। এই ধর্ম ব্যবসায়ী মামুনুল হক চিহিৃত জামায়াত-শিবিরের কর্মী। তিনি উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে জাতির দুশমন হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন। আমরা জানতে পেরেছি জঙ্গি কায়দায় ফেনী হয়ে গোপনে হাটহাজারীতে এসেছেন কুলাঙ্গার মামুনুল হক। প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই, এই জামায়াত কর্মীকে গ্রেপ্তার করুন।

হাটহাজারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমীন বলেন, সকাল ১১টায় মাহফিল আয়োজক কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছি। তারা জানিয়েছেন, মামুনুল হক এখনও হাটহাজারীতে এসে পৌঁছেনি। আমরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে কাজ করছি। এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।

অবস্থান কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বখতিয়ার সাঈদ ইরান, কাউন্সিলর প্রার্থী হাজী ইব্রাহিম, সাবেক ছাত্রনেতা সেলিম উদ্দিন জয়, মেজবাহ উদ্দিন মোরশেদ, মোসলেম উদ্দিন সিবলি, আবু সাঈদ সুমন, রাজিব হাসান রাজন, আশিকুন নবী চৌধুরী, মোহাম্মদ সেলিম, শওকত আলম, নগর ছাত্রলীগের সহ সভাপতি তারেব আলী, ইয়াছিন আরাফাত কচি, একরামুল হক রাসেল, উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তানভীর হোসেন তপু, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, চান্দগাঁও থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নুরুন নবী সাহেদ, ডবলমুরিং থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হায়দার, বন্দর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান বাবু, চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম, পতেঙ্গা থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেরাজ তোসিফ, আকবরশাহ থানা ছাত্রলীগের সভাপতি জুয়েল সিদ্দিকী, এমএইচ কলেজ ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল মাহমুদ প্রমুখ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপনে বিরোধীতাকারী মামুনুল হককে চট্টগ্রামে প্রতিহতের ঘোষণা দেওয়া হয় বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গনে ‘জঙ্গিবাদ বিরোধী ছাত্র ও যুব ঐক্য পরিষদ’ নামের সংগঠনের সমাবেশ থেকে। এরপর রাত থেকেই মামুনুল হকের উপস্থিতি নিয়ে নানা তথ্য ছড়াতে থাকে।

মামুনুল হক কোথায় জানতে চাইলে মাহফিল আয়োজনকারী আল আমিন সংস্থার সম্পাদক মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে উনার হাটহাজারী আসার কথা ছিল। তবে সন্ধ্যার পর থেকে উনার সাথে আর যোগাযোগ হয়নি। উনার মোবাইল বন্ধ।

প্রসঙ্গত, হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হাটহাজারী বড় মাদ্রাসায় সাম্প্রতিক ঘটনাবলী, প্রয়াত আমীর শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধ, নেতৃত্ব ছেড়ে দেওয়া, শফীর জানাজায় জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতি এবং আমীর পদে জুনাইদ বাবুনগরীর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় মামুনুল হকের নেপথ্যের ভূমিকার কথা বারবার আলোচনায় এসেছে।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব এবং বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মামুনুল হক সদ্য ঘোষিত হেফাজতে ইসলামের কমিটিতে যুগ্ম মহাসচিবের পদ পেয়েছেন।

নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঢাকার বিএমএ মিলনায়তনে রাজধানীর ধোলাইরপাড়ে জাতির পিতার ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধীতা করে তা অবিলম্বে বন্ধের দাবি করে মামুনুল হক।

ওই মন্তব্যের পর সরকার বা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তেমন কোনো প্রতিবাদ লক্ষ্য করা যায়নি।

এরপর ১৫ নভেম্বর চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী ও চট্টগ্রাম-৯ আসনের সাংসদ মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধীতাকারীরা ক্ষমা না চাইলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন