বাঘারপাড়ায় স্বাস্থ্য সহকারীদের কর্মবিরতি: ভোগান্তিতে সেবাপ্রার্থীরা

বাঘারপাড়ায় স্বাস্থ্য সহকারীদের কর্মবিরতি: ভোগান্তিতে সেবাপ্রার্থীরা

অনুপম দে,বাঘারপাড়া (যশোর) প্রতিনিধি : নিয়োগবিধি সংশোধন ও বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মকসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসি¯ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে যশোরের বাঘারপাড়ায় স্বাস্থ্য সহকারীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেেছ।

এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন শিশু ও গর্ভবতী নারীসহ সেবাপ্রার্থীরা। গর্ভবতী মা ও শিশুরা সময়মতো দিতে পারছেন না তাদের নির্ধারিত টিকা। সেইসাথে ব্যাহত হচ্ছে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি-ইপিআইসহ হাম-রুবেলার টিকাদান কর্মসূচি।

প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত বাঘারপাড়া উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে সকল স্বাস্থ্য সহকর্মী এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।
মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) সকালে সরেজমিনে বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, ৫ম দিনের মতো স্বাস্থ্য সহকারীদের কর্মবিরতির কারণে টিকাদান কর্মসূচি বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন উপজেলার সেবাপ্রত্যাশীরা।

টিকা না দিয়েই স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে ফিরে যেতে হচ্ছে শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের। ইউনিয়ন কেন্দ্র ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘুরে ঘুরেও টিকা দিতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন তারা।
জানা যায়, শিশুদের সংক্রামক রোগগুলোর বিরুদ্ধে টিকাদানের মাধ্যমে শিশু মৃত্যুহার কমানোর লক্ষ্যে সরকারের সহায়তায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইপিআই কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছে। পোলিওমুক্ত বাংলাদেশ গঠনসহ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জনে স্বাস্থ্য সহকারীরা জোরালো ভূমিকা পালন করলেও এখন পর্যন্ত তাদের নিয়োগ বিধি সংশোধন ও বেতন গ্রেডে বৈষম্য দূর হয়নি।

এজন্য বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসি¯ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ২৬ নভেম্বর থেকে সারাদেশের ন্যায় বাঘারপাড়া উপজেলায় একযোগে কর্মবিরতি পালন করছেন স্বাস্থ্য সহকারী, স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শকরা। হেলথ অ্যাসি¯ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দের দাবি, নিয়োগবিধি সংশোধন, ¯œাতক সংযোজন ও বেতন বৈষম্য নিরসন সহ টেকনিক্যাল পদ মর্যাদার দাবিতে স্বাস্থ্য পরিদর্শক এর ১১ তম গ্রেড সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক দের ১২ তম গ্রেড এবং স্বাস্থ্য সহকারীদের ১৩তম গ্রেড ডিপ্লোমা শেষ করার পরে অটো আপগ্রেডেশন ১১ গ্রেড করতে হবে।

তাদের ‘যৌক্তিক দাবি মেনে নিলে দ্রুত কাজে ফিরে যেতে চান তারা।
বাঘারপাড়া উপজেলা হেলথ অ্যাসি¯ট্যান্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি বলেন, টিকাদান কর্মসূচিতে স্বাস্থ্য সহকারীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও টেকনিশিয়ানের মূল্যায়ন দেওয়া হয়নি।

১৯৯৮ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছিলেন আমাদের টেকনিক্যাল মর্যাদা দেওয়া হবে, তা ২২ বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি। আমরা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে এর দ্রুত বাস্তবায়ন চাই।


সংগঠনের উপদেষ্টা প্রনয় সরকার জানান, আমাদের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে বেতন বৈষম্য নিরসনসহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা, মূল বেতনের ৩০ শতাংশ মাঠ-ভ্রমণ ও ঝুঁকি ভাতা এবং প্রতি ৬ হাজার জনগোষ্ঠীর বিপরীতে একজন স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগসহ ১০ শতাংশ পোষ্য কোটা দিতে হবে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন