“সেফহোম ” নির্মান করছে উত্তরন ফাউন্ডেশন।

"সেফহোম " নির্মান করছে উত্তরন ফাউন্ডেশন।

মোঃ সিরাজুল ইসলাম।গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী। 

রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নে নির্মিত হচ্ছে সুবিধা বঞ্চিত অসহায় মানুষদের থাকার জন্য আশ্রয়ন। দৌলতদিয়ায় অবস্থিত দেশের সর্ববৃহত যৌনপল্লির সুবিধা বঞ্চিত অসহায় শিশুদের পাশাপাশি পল্লিতে বসবাসরত বয়স্ক নারী এবং এলাকার দরিদ্র পরিবারের অসহায় শিশুদের জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা উত্তরণ ফাউন্ডেশন নির্মাণ করছে “সেফ হোম”।


শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের উপমহা পুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) ও উত্তরণ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান সেফ হোম এর জায়গা ফিতা কেটে ও দুটি ফলদ গাছ রোপন করে কার্যক্রম উদ্ধোন করেন। তার আগে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ ও স্থানীয়দের পক্ষ থেকে তাঁকে ফুলের তোড়া দিয়ে অভিবাদন জানানো হয়।

ইউপির উত্তর চর পাচুরিয়ায় অবস্থিত প্রায় ৪০ শতাংশ ক্রয়কৃত জমির ওপর এটি নির্মিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে সেখানে মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। জানুয়ারী মাসেই ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করবে সংস্থাটি। গোয়ালন্দ শহর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে দেবগ্রামের গ্রামীন পাকা সড়ক সংলগ্ন মনোরম পরিবেশে এই আবাসন ব্যবস্থাটি তৈরী হচ্ছে।

পরিদর্শন শেষে ডিআইজি হাবিবুর রহমান-পিপিএম, বিপিএম বার বলেন, দৌলতদিয়া যৌনপল্লিতে বসবাসরত সুবিধা বঞ্চিত অনেক শিশু আছে যারা নানা মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। পেটের দায়ে যৌন পেশায় থাকা ওই সব পরিবারের সন্তানদের ভিন্ন পরিবেশে মানুষ হিসেবে বেড়ে ওঠার সুযোগ তৈরী করে দিচ্ছে উত্তরণ ফাউন্ডেশন।

যৌনপল্লিতে দীর্ঘদিন ধরে বাস করেন অনেক বয়স্ক নারী রয়েছেন যারা এখন পেশায় নেই বা কাজ করতে পারেননা। তাদের মতো বয়স্ক নারীদের এখানে রাখার ব্যবস্থা করা হবে। সাথে সমাজের দরিদ্র ঘরের অনেক প্রতিবন্ধী সন্তান এখানে থাকা-খাওয়ার সুযোগ পাবে।

প্রাথমিক পর্যায়ে ২৫০ জন শিশুর সাথে আরো ৫০ জনের মতো বয়স্ক নারী সম্পূর্ণ বিনামূল্যে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা পাবে। শিশুদের দেখভালের পাশাপাশি ওই নারীরা থাকা-খাওয়ার সুন্দর পরিবেশে আমৃত্যু পর্যন্ত থাকার ব্যবস্থা পাচ্ছেন।

দেবগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম বলেন, রাজবাড়ী জেলার ৪২টি ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে অবহেলিত, দরিদ্র এবং নদী ভাঙন কবলিত ইউনিয়ন দেবগ্রাম। একটি অবহেলিত ইউনিয়নে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান তৈরী হওয়াতে এলাকায় প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। একদিকে অপরাধীদের আনাগোনা রোধ পেয়েছে।

পাশাপাশি এলাকার মানুষের মাঝে কর্মচঞ্চলতা ফিরে পেয়েছে। শহরমূখী না হয়ে গ্রামীন পরিবেশে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান আরো বেশি বেশি হওয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।
পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান-পিপিএম বলেন, ডিআইজি হাবিবুর রহমান স্যারের আন্তরিক প্রচেষ্টায় ও সবার সার্বিক সহযোগিতায় রাজবাড়ী জেলায় এ ধরনের একটি প্রতিষ্ঠান হওয়াতে এলাকার মানুষ অনেক উপকৃত হবে। সবাইকে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান তৈরীতে আরো আগ্রহ বাড়ানো দরকার।


এ সময় ডিআইজি হাবিবুর রহমান-পিপিএম, বিপিএম বার ছাড়াও পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান-পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশন) মো. সালাহ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) শেখ শরীফুজ্জামান, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) রাজবাড়ীর উপ-পরিচালক শরীফুল ইসলাম, গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর, দেবগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম, দৌলতদিয়া যৌনপল্লির অসহায় নারী ঐক্যের সভানেত্রী ঝুমুর বেগম, তরুণ সমাজ সেবক, মোস্তফা মেটাল ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড এর পরিচালক মো. সেলিম মুন্সী সহ উত্তরণ ফাউন্ডেশন এর কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন