বলাৎকার নিয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি

বলাৎকার নিয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি

সমগ্র পৃথিবীতে অগণিত প্রাণী রয়েছে। যাদেরকে সৃষ্টি করা হয়েছে মানবজাতির সেবাশুশ্রূষা করার জন্য। তাদের কল্যাণ সাধনের নিমিত্তে। কারণ মানুষ অতি সম্মানী প্রাণী। তামাম সৃষ্টি জগতের মধ্যে শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী। তাদের রয়েছে সুশৃঙ্খল ও পরিপাটি জীবনব্যবস্থা। কুকুর, বিড়াল এবং অন্যান্য প্রাণীর মতো লাগামহীনভাবে আহার, যৌন চাহিদা নিবারণ তাদের জন্য সমীচীন নয়।

এ জন্য মানুষকে মেনে চলতে হয় বিভিন্ন নিয়মকানুন। বৈধ সম্পর্কের জালে আবদ্ধ হয়ে তৈরি করতে হয় স্থায়ী জীবনব্যবস্থা। মানুষ থেকে শুরু করে প্রাণীরাও যৌন চাহিদার খাতিরে বিপরীত লিঙ্গের দ্বারস্থ হয়। পূরণ করে নিজেদের যৌন কামনা। মানুষ তো দূরের কথা কুকুর বিড়াল পর্যন্ত সমলিঙ্গের সঙ্গে যৌনকর্মে অনীহা প্রকাশ করে। কেননা বলাৎকার বা সমকামিতা মানবসমাজ ও চতুষ্পদ জন্তুর কাছেও একটি ঘৃণিত কাজ। এর ক্ষতি ও অপকার সর্বজনস্বীকৃত।

এ প্রসঙ্গে কোরআনে আল্লাহ এরশাদ করেছেন, আমি লুতকে প্রেরণ করেছি। যখন সে স্বীয় সম্প্রদায়কে বলল, তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করছ; যা তোমাদের পূর্বে সারা বিশ্বের কেউ করেনি? তোমরা তো কামনাবশত; পুরুষদের কাছে গমন কর নারীদেরকে ছেড়ে। বরং তোমরা সীমা অতিক্রম করেছ। -সুরা আরাফ।

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহ বলেন, সারা জাহানের মানুষের মধ্যে তোমরাই কি পুরুষদের সঙ্গে কুকর্ম কর? এবং তোমাদের পালনকর্তা তোমাদের জন্য সঙ্গিনী হিসেবে যাদের সৃষ্টি করেছেন তাদেরকে বর্জন কর? বরং তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী সম্প্রদায়। – সুরা শুয়ারা।

বলাৎকার বা সমকামিতা গর্হিত কাজ। কোনো সভ্য মানুষ এটা সমর্থন করতে পারে না। হাদিসে এর ভয়াবহতার কথা এসেছে,  হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা যদি কাউকে পাও যে লুতের সম্প্রদায় যা করত তা করছে, তবে হত্যা কর যে করছে তাকে আর যাকে করা হচ্ছে তাকেও। – আবু দাউদ।

এমনিভাবে অন্য হাদিসে হযরত আবু সাঈদ আল খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, একজন পুরুষ আরেক পুরুষের যৌনাঙ্গ দেখবে না। এক নারী আরেক নারীর যৌনাঙ্গ দেখবে না, একজন পুরুষ আর একজন পুরুষের সঙ্গে একই চাদরের নিচে ঘুমাবে না। এক নারী আরেক নারীর সঙ্গে কখনও একই চাদরের নিচে ঘুমাবে না। – আবু দাউদ।

ইসলাম কত সতর্কতার সঙ্গে নারী-পুরুষদের একসঙ্গে থাকতে নিষেধ করেছেন। যাতে করে বলাৎকার বা সমকামিতার সম্ভাবনাই না থাকে।

অন্য হাদিসে এসেছে, হজরত জাবির (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি আমার কওমের জন্য সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটা আশঙ্কা করি সেটা হলো লুতের কওম যা করত সেটা যদি কেউ করে। – তিরমিজি।

বলাৎকার বা সমকামিতার শাস্তি খুবই কঠিন। হাদিস এসেছে, হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, অবিবাহিত কাউকে যদি সমকামিতায় পাওয়া যায় তাহলে তাকে পাথর মেরে হত্যা করতে হবে। – আবু দাউদ।

অন্য হাদিসে আরো এসেছে, যে কাউকে লুতের কওমের মতো করতে দেখলে যে দিচ্ছে আর যে পাচ্ছে দুজনকেই হত্যা কর। – তিরমিজি।

অন্য হাদিসে আরো এসেছে, হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অভিশপ্ত সে, যে কিনা কোনো পশুর সঙ্গে সেক্স করে, আর অভিশপ্ত সে, যে কিনা সেটা করে যা লুতের সম্প্রদায় করত। – মুসনাতে আহমাদ।

অন্য হাদিসে আরো এসেছে, হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, হযরত আলি (রা.) তার সময়ে দুজন সমকামীকে পুড়িয়ে দেন। আর হজরত আবু বকর (রা.) তাদের ওপর দেয়াল ধসিয়ে দেন। – মিশকাত।

আপনি আরও পড়তে পারেন