নরসিংদীতে বিআরটিএ অফিসে ঘুষ,দুর্নীতি, জালিয়াতি ও অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ

নরসিংদীতে বিআরটিএ অফিসে ঘুষ,দুর্নীতি, জালিয়াতি ও অনিয়মের গুরুতর অভিযোগ

সাইফুল ইসলাম রুদ্র, নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি:
নরসিংদী জেলার বিআরটিএ অফিসে দুর্নীতি চরম রূপ ধারণ করেছে। ঘুষ ছাড়া মোটরযান রেজিস্ট্রেশন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া হয়ে পড়েছে আমাবস্যার চাঁদ। এছাড়া এই অফিসে ৩০০ টাকার রানার কার্ড করতে লাগে ২ হাজার টাকা যার অভিযোগ উঠেছে সিল মেকানিক মিল্টন এর বিরুদ্ধে।
জেলার বিভিন্ন অভ্যন্তরীন রুটে চলাচলকারী আনফিট গাড়ি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ফিটনেস সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে বলে অভিযোগ উঠেছে সিল মেকানিক মিল্টন এর বিরুদ্ধে।

অন্যদিকে রায়পুরা উপজেলার মরজাল এলাকার আবু তাহের এর নিকট থেকে এই অভিযুক্ত মিল্টন ৩ শত টাকার রানার কার্ড এর জন্য ২ হাজার টাকা নিয়েছে বলে অভিযোগ নিরীহ আবু তাহেরের। শুধু তাই নয়, এই বিআরটিএ অফিসের ৫ পর্বের মধ্যে ১ম পর্বেই বেরিয়ে এসেছে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য।

এছাড়া ও গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে আসা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অবৈধভাবে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেয়া হয়। এ ব্যাপারে কেউ মোটা অঙ্কের টাকা দিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলে নানান হয়রানির শিকার হতে হয়। দালাল ছাড়া কাজ হয় না। দালালদের প্রধান মিল্টন। মিল্টন যেন এ অফিসের অঘোষিত মালিক। তার কথায় সহকারী পরিচালকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারী ওঠে-বসে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মিল্টনের কথার বাইরে এক চুল পরিমান কাজ হয় না এ অফিসে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ও ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে আসা সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে প্রতিদিন। এ কারণে দিন দিন সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েই চলছে নরসিংদী জেলার এই বিআরটিএ অফিসে। নরসিংদী বিআরটি এ অফিসে অনুসন্ধানকালে মোটরযান রেজিস্ট্রেশন করতে আসা একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রত্যেকটি মোটরযান রেজিস্ট্রেশনের সময় সরকারি ফি ছাড়াও অতিরিক্ত দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা এবং ক্ষেত্র বিশেষে আরও বেশি টাকা নেয়া হয়ে থাকে। আর এ টাকা নির্ধারণ করে থাকে দালাল সিল মেকানিক মিল্টন। এছাড়া অফিসের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সকল কর্মচারী ওই অবৈধ আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা হ্মমতার অপব্যবহার করে লাখ লাখ টাকা অবাধে ঘুষ নিয়ে যাচ্ছে বলে বিশেষ সূত্রে জানা যায়।
এ বিষয়ে সংবাদ কর্মী রুদ্র দালাল চক্রের প্রধান মিল্টন এর নিকট থেকে ঘটনার বিস্তারিত জানতে চাইলে তিনি এই ঘুষ বাণিজ্যের বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন। কিন্তু সংবাদ কর্মী রুদ্র অফিস থেকে বের হয়ে অনেক ভুক্তভোগীর আকুতি মিনতি শুনেন। তারা জানান যে, প্রতিনিয়ত আমরা সিল মেকানিক দালাল মিল্টন এর কারণে এই অফিসে হয়রানির শিকার হচ্ছি। সে সাধারণ মানুষদের নিকট থেকে লাইসেন্স করে দেওয়ার নামে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আরও একটি সুত্রে জানা গিছে যে অফিসের বাইরে থাক গাড়ির শো-রুমের লোকজনও এ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেয়া হলেও বিভিন্ন অজুহাতে রেজিস্ট্রেশন পত্র দিতে ঝামেলা করা হয়। মোটরযান চালকদের পেশাদারিত্ব ও দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ ও ওরিয়েন্টেশন বাবদ প্রতি বছর অনেক টাকা বরাদ্দ দেয়া হলেও সাধারণ মানুষের কোনো প্রশিক্ষণ ও ওরিয়েন্টেশন করা হয় না। ভুয়া বিল ভাউচার করে তা আত্মসাৎ করেন কয়েকজন অসাধু কর্মচারী যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে অফিসার ও কর্মচারীদের মধ্যে চলছে নানা প্রকার ঝামেলা। এ বিষয়ে এই অফিসের কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম বলেন, অফিসের ভেতরের একটি চক্র এসব অপঃপ্রচার শুরু করেছে। এখানে কোন অনিয়ম বা দুর্নীতির কোন সুযোগ নেই। অথচ মোয়াজ্জেম নিজেই অবৈধ কাজের সাথে জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য পেতে আগামী সংখ্যায় চোখ রাখুন।

আপনি আরও পড়তে পারেন