প্যান্ট খুলে অঙ্গ দেখানো যৌন নির্যাতন নয়: বোম্বে হাইকোর্টের রায়

প্যান্ট খুলে অঙ্গ দেখানো যৌন নির্যাতন নয়: বোম্বে হাইকোর্টের রায়

প্যান্টের জিপ খুলে রাখা অথবা যৌনাঙ্গ দেখানো যৌন নির্যাতনের আওতায় পড়ে না। বম্বে হাইকোর্টের পকসো আইনের অধীনে দেওয়া এ রায় নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত আছে। এর আগে জোর করে হাত ধরে রাখলেও সেটি যৌন নিগ্রহের আওতায় পড়ে না বলে রায় দিয়েছেন নাগপুর বেঞ্চার বিচারপতি পুষ্পা গানেদিওয়ালা।

বম্বে হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানান কেন্দ্রীয় সরকার। ওই রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বুধবার (২৮ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্টে জানতে চান অ্যাটর্নি জেনারেল। শুনানির পর রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জিনিউজের খবরে বলা হয়েছে, বুধবার কেন্দ্রীয় সরকারের আবেদনের শুনানি চলাকালীন কেন্দ্রীয় অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল বলেন, বম্বে হাইকোর্টের রায় অত্যন্ত বিরক্তিকর। এই রায় একটি বিপজ্জনক নজির সৃষ্টি করবে।

এর আগে ৫০ বছরের ব্যক্তি এক পাঁচ বছরের শিশু কন্যাকে জোর করে ধরে, তার সামনে প্যান্টের জিপ খুলে যৌনাঙ্গ প্রদর্শন করে। এতে অভিযুক্তকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা ও ৫ বছরের কারাদণ্ড দেন সেশন কোর্ট।

কিন্তু বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চের বিচারপতি আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ এবং ৩৪২ নম্বর ধারা মোতাবেক ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন অভিযুক্তকে। বিচারপতি পুষ্পা গানেদিওয়ালা আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, প্যান্টের জিপ খুলে রাখা অথবা যৌনাঙ্গ প্রদর্শন করা যৌন নির্যাতনের আওতায় পড়ে না। কারণ ত্বকের সঙ্গে সংস্পর্শ হয়নি। তাই এটিকে যৌন হয়রানির আওতায় ফেলা যায় না।

শিশুকন্যার মায়ের অভিযোগ, ৫০ বছরের ওই ব্যক্তি তার ৫ বছরের মেয়ের হাত ধরে টানাটানি করে তাকে বিছানায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এর মাঝে প্যান্টের জিপ খুলে যৌনাঙ্গ প্রদর্শন করেন।

তার অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথমে সেশন কোর্টে পকসো আইনের আওতায় ওই অভিযুক্ত ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া হলেও তা বাতিল হয়ে যাবে বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চে। তিনি আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে যুক্তি দেন, এই ঘটনায় ত্বকে স্পর্শ ও পেনিট্রেশন (অঙ্গপ্রবেশের মতো ঘটনা) ঘটেনি।  

এদিকে ১২ বছরের একটি কিশোরীর যৌন হেনস্থা নিয়ে শুনানির রায় দিতে গিয়ে নাগপুর বেঞ্চের বিচারপতি পুষ্পা গানেদিওয়ালা বলেন, ‘কোনও নাবালিকার যৌন নিগ্রহ প্রমাণ করতে গেলে শারীরিক সংস্পর্শ হয়েছে তার প্রমাণ দিতে হবে। অন্যদিকে, জামাকাপড় না খুলে, যদি স্তনে হাত দেওয়া হয় তাহলেও সেটি যৌন নিগ্রহের আওতায় পড়বে না। পকসোর-র ৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী এই রায় দেওয়া হয়েছে। 

এই ঘটনায় মেয়েটিকে বাড়িতে ডেকে তার সঙ্গে অসভ্য আচরণ করেন ওই ব্যক্তি। তার স্তনে হাত দিয়ে পোশাক খোলার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেই মুহূর্তে তার মা এসে যাওয়ায় মেয়েটিকে ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে অভিযুক্ত। তার নামে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়।

আপনি আরও পড়তে পারেন