ঘাটাইলে কে এই অদম্য বালুখেকো কথা শুনছে না প্রশাসনের

ঘাটাইলে কে এই অদম্য বালুখেকো কথা শুনছে না প্রশাসনের

সৈয়দ মিঠুন, ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
ফসলি জমিতে বাংলা ড্রেজার। ভাঙ্গছে জমি, কাঁদছে কৃষক। কোথায় নিষিদ্ধ ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে প্রশাসনের তা অজানা নয়। বেশ কয়েকবার বন্ধও করে দেয় প্রশাসন। সকালবেলায় বন্ধ করা হলে বিকেলে ফের চালু করে বালুখেকোরা। অনেকটাই অদম্য তারা। টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার লোকেরপাড়া ইউনিয়নের ছয়ানী বকশিয়া মৌজাসহ অন্যান্য স্থানে ড্রেজার দিয়ে ফসলি জমি থেকে অবাধে চলছে বালু উত্তোলনের কাজ। এ পর্যন্ত ওই ড্রেজারটি চারবার বন্ধ করেছিল প্রশাসন। প্রশাসন কিভাবে বন্ধ করে, যা আবার চালু হয়? এমন প্রশ্ন ভুক্তভোগীদের। কোনো উপায় না দেখে বালুখেকোদের হাত থেকে ফসলি জমি রক্ষার জন্য ২ ফেব্রুয়ারি ইউএনও’র কাছে লিখিত আবেদন করেন ছয়ানী বকশিয়া গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান খান।


লিখিত ওই অভিযোগ থেকে জানা যায়, উপজেলার ছয়ানী বকশিয়া গ্রামের আবু সাঈদ তালুকদার খসরু প্রথমে তার প্রায় ২ বিঘা ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি ইটের ভাটায় বিক্রি করেন। পরে সেই জমিতে বাংলা ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করতেছেন। ড্রেজারের মালিক প্রভাবশালী হওয়ায় আশেপাশের দরিদ্র কৃষকরা তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। ফসলি জমির পাশে থেকে বালু তোলা হচ্ছে, এমন খবর স্থানীয় প্রশাসনের কানে আসলে চার চারবার তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রভাবশালী বলে কথা, প্রশাসনের সঙ্গে অনেকটাই চোর-পুলিশ খেলার মতো। ড্রেজার সকালে বন্ধ করা হলে ফের বিকেলে চালু হয়। ইউএনও’র নির্দেশে তিনবার ড্রেজার বন্ধের কাজ করেন লোকেরপাড়া ইউনিয়ন উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, বন্ধ করার পর আবার চালু হয়েছে কিনা তা আমার জানা নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছয়ানী বকশিয়া গ্রামের কয়েকজন কৃষক কান্না জরিত কণ্ঠে জানান, বালু তোলার ফলে তাদের জমি ভাঙ্গতে বসেছে। কিছু বলতে গেলেই ড্রেজার মালিক গালিগালাজ করে বলেন, আমার জমিতে আমি যা ইচ্ছা তাই করব।


একই ঘটনা ঘটে উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের কাউঠো বিলে। সেখানেও ফসলি জমি থেকে ড্রেজার বসিয়ে বালু তুলে বিক্রি করেন রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। পরে এ নিয়ে মোতালেব হেসেন নামে একজন ২৩ ডিসেম্বর ইউএনও বরাবর ড্রেজার উচ্ছেদ চেয়ে আবেদন করেন। সেখানেও প্রশাসন দুইবার বালু তোলা বন্ধ করে কিন্তু ফের চালু করেন মালিকপক্ষ।

উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ড্রেজার বন্ধ করার পরও কিভাবে ফের চালু হয় ? এমন প্রশ্নের জবাবে ইউএনও অঞ্জন কুমার সরকার  বলেন, এক স্থানেই ড্রেজার চারবার বন্ধ করেছি, কেউ কথা শুনেনা। তাদের এককথা, দেশ স্বাধীন করেছি আমরা, আমাদের জমিতে যা খুশি তাই করবো, কার বাবার সাধ্য আছে ঠেকাবে। 

আপনি আরও পড়তে পারেন