মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত করায় জিয়ার খেতাব বাতিল হচ্ছে : নৌ প্রতিমন্ত্রী

মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত করায় জিয়ার খেতাব বাতিল হচ্ছে : নৌ প্রতিমন্ত্রী

মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত ও কলুষিত করায় সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান এবং বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীদের খেতাব বাতিল হচ্ছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ১৬ কোটি মানুষ এটাকে সমর্থন করবে বলে মন্তব্য করেছেন নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন: গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধকে যারা কলুষিত করেছিল, যারা কলঙ্কিত করেছিল- যে জিয়াউর রহমান- আমি মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাই। জামুকা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যারা মুক্তিযুদ্ধকে কলঙ্কিত করেছে, মুক্তিযোদ্ধাদেরকে যারা হত্যা করেছে, অপরাধীদের যারা পুনর্বাসিত করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের তারা পদক্ষেপ নিয়েছে। অবশ্যই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ১৬ কোটি মানুষ এটাকে সমর্থন করবে।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধকে আমাদের গর্বের জায়গায় রাখতে চাই। পৃথিবীর খুব কম দেশ আছে যারা মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বিজয় অর্জন করেছে। বাংলাদেশ সে রকম একটি দেশ। ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। সে বিজয় কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর কারণে কলঙ্কিত হবে সেটা বাংলাদেশের মানুষ কখনোই মেনে নেবে না।
পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র হয়েছিল মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা অনেক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এখানে এসেছি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পরে জিয়াউর রহমানরা ভেবেছিল এবং তারা সে ধরনের কর্মকাণ্ডের মধ্যে দেশ পরিচালনা করেছিল যেন, বঙ্গবন্ধুর কথা কখনো উচ্চারিত না হয়। সেজন্য জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর খুনীদেরকে পুরস্কৃত করেছিল। একাত্তরের অপরাধীদের মন্ত্রী বানিয়েছিল। রাজনৈতিকভাবে পুনর্বাসিত করেছিল। দালাল আইন বাতিল করেছিল। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের সঙ্গে মিলে দেশ পরিচালনা করেছে। একই ধারায় এরশাদ-খালেদা জিয়াও চলেছে। বঙ্গবন্ধুকে তারা মুছে ফেলতে পারে নাই। বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে হত্যা করতে পারে নাই। আজকের বাংলাদেশ সেটাই প্রমাণ করে। বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধকে ধারন করেছে বলেই, পদ্মাসেতু হচ্ছে, মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর হচ্ছে, পায়রা বন্দর হচ্ছে। সিক্স লেন হচ্ছে, ফোর লেন হচ্ছে, ১০ লেনের রাস্তার স্বপ্ন আমরা দেখছি। আমরা আরো আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছি। এটা সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে ধারন করার জন্যই।
বিএনপির সমালোচনা করে নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা আজকে আলজাজিরার সমর্থন করছে। আলজাজিরা কারা, যারা লাদেনের মতো একজন সন্ত্রাসীর সাক্ষাতকার ছাপিয়ে বাণিজ্য করেছে। আলজাজিরার সঙ্গে সন্ত্রাসী লাদেনের সম্পর্ক আছে। আলজাজিরার সঙ্গে একুশে আগস্টে গ্রেনেড হামলাকারী, জঙ্গী শায়খ আব্দুর রহমান, বাংলা ভাইদের সম্পর্ক থাকবে এটাই স্বাভাবিক। আল জাজিরার সঙ্গে বিদেশে পলাতক দণ্ডিত তারেক রহমান এবং দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়ার সম্পর্ক থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এতে বাংলাদেশের মানুষ বিচলিত নয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনাও বিচলিত নয়। 
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে তাবত দুনিয়ায় উপস্থাপন করার জন্য গণমাধ্যম একটি বিরাট ভূমিকা রাখছে। এটাতে কোন সন্দেহ নাই। পাশাপাশি; এই যে বিরাট সম্ভাবনা ও এগিয়ে যাবার গল্প এগুলোকে আড়াল করার জন্য আরেকটি গ্রুত নেতিবাঁচক ভূমিকায় নামছে। এই যে আল জাজিরা একটি গুজব বানোয়াট কাহিনী বানিয়ে ছেড়ে দিল, তাদের উদ্দেশ্য হল, আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর ও জাতির পিতার শতবর্ষ আমাদের গর্বের জায়গা, যেখানে আমরা দাঁড়িয়েছি সেটা প্রশ্নবিদ্ধ করা। 
তিনি বলেন, পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে যারা রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে বেনিফিসিয়ারি তারা এটাতে মদত দিচ্ছে। একটাই কারণ, বাংলাদেশ যাতে এগিয়ে যেতে না পারে। পদ্মাসেতু নিয়ে বলা হয়েছে, এ সেতু জরাজীর্ণ, এ সেতুতে চলা যাবেনা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে কখনো একটি রিপোর্টও করেনি আলজাজিরা। ২০০১ সালের পর বিএনপি-জামায়াতের সংখ্যালঘু নির্যাতন, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা নিয়ে আলজাজিরা কোন রিপোর্ট করেনি। ডেভিড বার্গম্যানের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সে সব সময় যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে। সে এখন বাংলাদেশবিরোধী অথরিটি।
সংগঠনের সভাপতি শামীম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু, আক্তার হোসাইন, লাবণ্য ভূইয়া প্রমুখ।

আপনি আরও পড়তে পারেন