গাংনীতে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে গৃহ প্রদান প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে। মামলা জটিলতায় ৩ টি ঘরের নির্মাণ কাজ আপাতত বন্ধ

গাংনীতে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে গৃহ প্রদান প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে। মামলা জটিলতায় ৩ টি ঘরের নির্মাণ কাজ আপাতত বন্ধ

গাংনীতে মুজিব বর্ষ উপলক্ষে প্রধান মন্ত্রীর উপহার ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে গৃহ প্রদানের লক্ষে গৃহ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে চলমান রয়েছে। মামলা জটিলতায় ৩ টি গৃহের নির্মাণ কাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছ।

জানা গেছে, প্রকল্প বাস্তবায়নে ১ম পর্যায়ে সামান্য জমি আছে, ঘর নাই শুধুমাত্র তাদের জন্য ১৭ টি গৃহের বরাদ্দ দেয়া হয়। বরাদ্দকৃত গৃহগুলি গাংনী উপজেলা প্রশাসনের নিবিড় তত্বাবধানে নির্মাণ শেষে উপকার ভোগীদের মাঝে সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। ২ কক্ষ বিশিষ্ট টিন শেডের গৃহ পেয়ে উপকারভোগীরা সবাই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। জানা গেছে,অসহায়  দুস্থ সেই মানুষগুলো পরিবার পরিজন নিয়ে খুব খুশীতে দিনযাপন করছেন। একইভাবে প্রধান মন্ত্রীর উপহার হিসাবে ২য় পর্যায়ে আবারও  ৬২ টি গৃহ  নির্মাণের বরাদ্দ পাওয়া যায়। এবারে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য ২ শতাংশ সরকারী খাস জমির উপর  গৃহ নিমার্ণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে গাংনী উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নে প্রকৃত দুস্থ অসহায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের তালিকা প্রণয়ন করে গৃহ নিমার্ন কাজ চলমান রয়েছ। মানসম্মত নির্মান সামগ্রী ব্যবহার করার কারনে  নির্মাণাধীন গৃহে কোথাও কোন ফাটল বা ভেঙ্গে পড়েনি।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গাংনী উপজেলায় সর্বমোট ৭৯ টি গৃহ নির্মাণের বরাদ্দ পাওয়া গেছে। তন্মধ্যে ১ম পর্যায়ের ১৭ টি গৃহ নির্মাণ কাজ শেষ করে উপকারভোগীদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে। ২য় পর্যায়ে ৬২ টি গৃহের মধ্যে ৪১ টি নির্মিত হয়েছে, ৩০ টির গৃহের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে শতকরা ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাদবাকী ৮ টি গৃহের মধ্যে ৩ টি মামলা জনিত কারনে এবং ৫ টি জমি সংক্রান্ত জটিলতার কারণে নির্মাণ কাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। উপজেলার ষোলটাকা ইউনিয়নের অন্তর্গত কাষ্টদহ পশ্চিদ পাড়া গ্রামে ৩ টি গৃহের কাজ শতকরা ৮০ ভাগ নিমার্ণ করার পর একটি স্বার্থান্বেষী মহল আদালতে মামলা (যার নং-৫৭/২০২১) করায়  আদালতের নির্দেশে কাজ স্থগিত রাখা হয়েছ।এসব গৃহ নিমার্ণ এখনও শেষ হয়নি চলমান রয়েছে।গৃহের কাজ শেষে বিদ্যুত সংযোগ, সুপেয় পানির জন্য টিউবওয়েল, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার জন্য রিং স্লাব পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। ইতোমধ্যেই অবিলম্বে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে সংশ্লিষ্ট  প্রতিষ্ঠানকে তাগিদ দেয়া হয়েছে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিরঞ্জন চক্রবর্তী জানান,এক শ্রেণির কুট প্রবৃত্তির মানুষ প্রধান মন্ত্রীর উপহার এই প্রকল্প নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করে ফেইস বুকে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে।প্রধান মন্ত্রীর মান ও ভাবমূর্তী ক্ষুন্ন করতেই নানা কমেন্টস তুলে ধরেছেন। যা আদৌ সঠিক নয়। এসব গৃহ নির্মাণ সরেজমিনে জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলম খান, উপজেলা নিবার্হী অফিসার মৌসুমী খানম  সংশ্লিষ্ট  প্রকৌশলীদের নিয়ে পরিদর্শন করে কাজের মানে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এছাড়াও মামলা জটিলতায় ৩ টি ঘর নিমার্ণের স্থানটিও সরেজমিনে প্রধান মন্ত্রীর দপ্তরের পরিচালক মহোদয় পরিদর্শন করেছেন।

এব্যাপারে গাংনী উপজেলা নিবার্হী অফিসার ও গৃহ নির্মান প্রকল্পের  সভাপতি  মৌসুমী খানম জানান, গাংনীতে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের মাঝে ঘর বরাদ্দ  থেকে শুরু করে সব কিছু স্বচ্ছতার ভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধান মন্ত্রীর উপহার প্রকৃত ভূমিহীন পরিবারকে গৃহ নির্মান করে দেয়া হচ্ছে। বরাদ্দকৃত ১লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয়ে বসবাসযোগ্য এলাকা এবং লোকালয় সংলগ্ন সুন্দর মনোরম পরিবেশে জমি নির্বাচন করে গৃহ নিমার্ণ করা হচ্ছে। ঘর গুলো দেখে মনে হচ্ছে সুন্দর পরিবেশে ডাকবাংলো গড়ে উঠেছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রেখে গৃহ নির্মিত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সেসব অসহায় পরিবারের মাঝে গৃহ বরাদ্দ করা হয়েছে তারা অত্যন্ত খুশী। অসহায় পরিবারগুলো ঘর পেয়ে প্রধান মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে দোয়া করেছেন। জমি সংক্রান্ত জটিলতা/সমস্যায় আমরা ৫ টি ঘর এবং মামল জনিত কারনে ৩ টি ঘর নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারিনি। অবিলম্বে সমস্যা সমাধান করে গৃহ নিমার্ণের কাজ সম্পন্ন করা হবে। সম্প্রতি মাননীয় প্রধান মন্ত্রী ভাচ্যুয়াল  কনফারেন্সের মাধ্যমে গাংনীতে ৩৯ টি গৃহের জমি সহ কাগজপত্র প্রদান করেছেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন