পুলিশের নির্দেশনা অমান্য করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আনন্দ মিছিল

পুলিশের নির্দেশনা অমান্য করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আনন্দ মিছিল

কোপা আমেরিকার ফাইনাল ম্যাচ ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত হলেও টানটান উত্তেজনা ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়। যার ফলে উত্তেজনা থেকে যেন সংঘাত সৃষ্টি না হয়, সেজন্য পাঁচ শতাধিক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে জেলায়। তবে প্রিয় দল দীর্ঘ ২৮ বছর পর কোপার শিরোপা জেতায় বাধভাঙা উচ্ছ্বাস ছিল আর্জেন্টাইন সমর্থকদের মাঝে। আর তাই পুলিশের নির্দেশনা অমান্য করেই ব্রাজিলকে হারিয়ে আর্জেন্টিনার শিরোপা জেতার আনন্দ মিছিল হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়।

রোববার (১১ জুলাই) সকাল ৮টার দিকে জেলা শহরের দক্ষিণ মৌড়াইল, পূর্বপাইকপাড়া ও কাজীপাড়া এলাকায় আর্জেন্টিনা সমর্থকরা আনন্দ মিছিল করেন। তবে পুলিশের ভয়ে কোনো মিছিলই শহরের প্রধান সড়কে করতে পারেনি সমর্থকরা। তবে খেলায় হারের পর ব্রাজিল সমর্থকদের কোনো তৎপরতা চোখে পড়েনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা জেতার আনন্দে ম্যাচ শেষ হওয়ার পর পরই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের দক্ষিণ মৌড়াইলের বৌবাজার মোড় থেকে ২০-২৫ জন আর্জেন্টাইন সমর্থক আনন্দ মিছিল বের করেন। এ সময় মিছিলকারীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে উল্লাস করতে থাকেন। তবে মিছিল শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই পুলিশ চলে আসায় মিছিলকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন। এ ছাড়া শহরের পূর্বপাইকপাড়া ও কাজীপাড়ায়ও আনন্দ মিছিল করেন আর্জেন্টিনার সমর্থকরা।

এ দিকে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচকে ঘিরে সংঘাতের আশঙ্কায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশ। পুরো জেলায় মোতায়েন করা হয় পাঁচ শতাধিক পুলিশ সদস্য। এ ছাড়া শনিবার সারা জেলায় মাইকিং করে ঘরে বসে খেলা দেখার জন্য সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। বড় পর্দায় খেলা দেখার আয়োজন এবং খেলার পর আনন্দ মিছিল ও পটকা ফাটিয়ে উল্লাসেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। পুলিশের এ নিষেধাজ্ঞার কারণে এবার জেলার কোথাও বড় পর্দায় খেলা দেখার আয়োজন করতে পারেনি ফুটবলপ্রেমিরা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিক্তি পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউন কার্যকর করতে পুলিশের বিশেষ টিমগুলো আগে থেকেই মাঠে কাজ করছিল। তবে কোপা আমেরিকার ফাইনাল ম্যাচ ঘিরে ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার সমর্থকদের মধ্যে হামলা ও পাল্টা হামলার ঘটনায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেজন্য ম্যাচকে কেন্দ্র করে কেউ যেন কোনো বিশৃঙ্খলা করতে না পোরে, সেজন্য বিট পুলিশের ১১৬টি টিম এবং ২৫টিরও বেশি বিশেষ টিম পুরো জেলায় মোতায়েন ছিল’।

উল্লেখ্য, গত ৬ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের দামচাইল বাজারে নোয়াব মিয়া (৬০) নামে এক ব্যক্তি আর্জেন্টিনা সমর্থক মো. জীবন ও তার সঙ্গীদের দ্বারা হামলার শিকার হন। নোয়াবের ভাতিজা রেজাউল ব্রাজিলের সমর্থক। খেলা নিয়েই রেজাউল ও জীবনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও হাতহাতির ঘটনা ঘটে। এর জের ধরেই রেজাউলের চাচাকে মারধর করেন জীবন ও তার সঙ্গীরা। এ ঘটনায় পাল্টা হামলা হিসেবে ওই দিন রাতেই জীবনের তিন সঙ্গীকে ধরে মারধর করে ব্রাজিল সমর্থকরা।

আপনি আরও পড়তে পারেন