নিয়ামতপুরে মসজিদের জমি আত্মসাৎ ও মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রামবাসীকে হয়রানীর অভিযোগ

নিয়ামতপুরে মসজিদের জমি আত্মসাৎ ও মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রামবাসীকে হয়রানীর অভিযোগ

মোঃ জাবেদ আলী নিয়ামতপুর উপজেলা প্রতিনিধিঃ মসজিদকে জমি দান করে পূর্বপুরুষ। সেই জমি এসএস ও আরএস রেকর্ডভুক্তও হয় মসজিদের নামে। অথচ তারই ওয়ারিশরা এখন সেই জমি আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে পুরো গ্রামবাসীকে হয়রানীর করা হচ্ছে। এমনটাই অভিযোগ পাওয়া গেছে উপজেলার হাজিনগর ইউনিয়নের কুন্তইল গ্রামে। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কুন্তইল জামে মসজিদের নামে নন্দীগ্রাম, পাঁচপুকুরিয়া ও চিনড়া মৌজায় ৮১, ১৭ এবং ৫০ নম্বর খতিয়ানে ৫ একর ২৩ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় সাড়ে ১৭ বিঘা জমি এসএ এবং আরএস রেকর্ডভুক্ত হয়। জিম্মাদার হিসাবে দায়িত্বে থাকেন মৃত হাজি মাবুদ বক্স ও তার স্ত্রী কছিরণ। মসজিদটি ১৯৩৫ সালে নির্মাণ করা হয়। সেই থেকে ২০২১ সালের মে মাস পর্যন্ত প্রথমে মাবুদ বক্স, পরবর্তীতে তাঁর ছেলে আঃ জব্বার, আকবর আলী, সামাদ মন্ডল ও ইসমাইল মসজিদের দায়িত্ব পালন করেন। এর পর আকবর আলীর ছেলে সালাম  ও ইসমাইল হোসেনের ছেলে জালাল ২০০৪ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৪ সাল থেকে ২০২১ সালের মে মাস পর্যন্ত  সামাদ মন্ডলের ছেলে আসাদুজ্জামান স্টার সভাপতি ও আব্দুর জব্বারের ছেলে প্রভাষক মিজানুর রহমান বাবু সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। অর্থাৎ মসজিদ সৃষ্টি হতে ২০২১ সালের মে মাস পর্যন্ত জমি দাতা মাবুদ বক্সের ছেলে ও নাতিরাই মসজিদ পরিচালনা করে আসছিল। সেই সুযোগে তারা প্রথম জমি দখলের জন্য রেকর্ড সংশোধনীর মামলা আদালতে করলে তা খারিজ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে ২৬৭, ২৬৮, ২৬৯ নামে তিনটি মামলা হয়। মামলার প্রেক্ষিতে ২০১০ সালে ২০১১ সালে এবং ২০১৪ সালে সভাপতি আসাদুজ্জামান স্টার ও সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু থাকা সত্ত্বেও তারা বিভিন্ন প্রন্থা অবলম্বন করে নিজেরাই বাদী এবং বিবাদী সেজে ভূয়া সোলেনামা করে আদালতে একতরফা ডিক্রী নেন। এ বিষয়ে বর্তমান মসজিদ কমিটির সভাপতি মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে তাইজুল ইসলাম বলেন, গ্রামবাসী আসাদুজ্জামান স্টার ও মিজানুর রহমান বাবুর কাছ থেকে বিগত এক বছর যাবত মসজিদের হিসাব চাইলে তারা টালবাহানা করে। এত গ্রামবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের বাদ দিয়ে আমাকে সভাপতি ও আব্দুল হান্নানকে সম্পাদক করে নতুন কমিটি গঠন করে। আমরা দায়িত্ব পাওয়ার পর মসজিদের জমির সন্ধান করতে গেলে এই সমস্ত অনিয়ম ধরা পড়ে। তারা মসজিদের বেশ কিছু জমি বিভিন্নভাবে বিক্রি করে দেন।  বিক্রিত জমির উপর তারা বসতবাড়ী পর্যন্ত নির্মান করে নিয়েছে। আমরা জমির কাগজপত্র সংগ্রহ করি এবং মসজিদ কমিটির পক্ষ হতে জমিতে ধান রোপন করি। এত গ্রামবাসীকে হয়রানী করার জন্য সম্প্রদায়িক পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য একটি হিন্দু ব্যক্তিকে দিয়ে ৩৭জনকে আসামী করে লুটপাট ও টাকা ছিনতাই এর একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। আমাদের একজনকে পুলিশ ১১ জুলাই রাতে আটক করলে আমরা গ্রামবাসী সবাই রাতে থানায় গিয়ে হাজির হই এবং স্বেচ্ছায় কারা বরণ করতে চাই। পরবর্তীতে পরিবেশ বুঝে আমরা বাড়ী ফিরে আসি এবং পরদিন ১২ জুলাই আদালতে জামিন হই। মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু বলেন, মসজিদটি আমাদের পূর্ব পুরুষরা তৈরী করেছে। মাবুদ বক্স ও তার স্ত্রী কছিরন এর সম্পত্তি ভুলবশত মসজিদের নামে রেকর্ড হয়। যা পরবর্তীতে সোলেনামার মাধ্যমে আমরা ডিক্রী পাই। সম্পত্তি আগেও আমাদের দখলে ছিল এখনও আছে। মসজিদ কখনওই এই সম্পত্তি ভোগদখল করে নাই।

আপনি আরও পড়তে পারেন