প্রকল্পের কাজ শেষ না হতেই ভেঙে গেল সিসি ব্লক

প্রকল্পের কাজ শেষ না হতেই ভেঙে গেল সিসি ব্লক

প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার আগেই রাজবাড়ীর পদ্মা নদীর তীর রক্ষায় ভাঙন প্রতিরোধে প্রায় ১৫০ মিটার বাঁধের সিসি ব্লক ধসে পড়েছে। কাজে অনিয়মের কারণে বাঁধ ধসে গেছে, এমনটাই অভিযোগ স্থানীয়দের।

মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজবাড়ী সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের গোদারবাজার এলাকার এনজিএল ইট ভাটার কাছে প্রায় ১৫০ মিটার বাঁধের ধস হয়।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, গোদার বাজার ইট ভাটার পাশে ১৫০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পদ্মা নদীর শহর রক্ষা বাঁধের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ চলমান থাকাকালীন এই ভাঙন শুরু হয়। এতে ওই এলাকার এনজিএল ইটভাটা হুমকির মধ্যে রয়েছে। এ ছাড়া ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে রাজবাড়ী শহর রক্ষা বাঁধ। এ সময় ভাঙন প্রতিরোধে সিসি ব্লক ও বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার ব্যবস্থা করতে দেখা যায় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো)।

এর আগে গত ১৬ জুলাই গোদার বাজার চরসিলিমপুর এলাকার নদীর তীর এলাকার প্রকল্পের স্থানের কাজ শেষের দুই মাস না যেতেই প্রায় ২০ মিটার অংশের ব্লকে ধসে যায়। পরে ব্লক ও জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙনরোধ করে পাউবো।

পাউবো সূত্র জানায়, ভাঙনরোধে ২০১৮ সালের জুন মাসে রাজবাড়ীর পদ্মা নদীর শহর রক্ষা বাঁধের ডান তীর প্রতিরক্ষার কাজ (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাটে তিন ও মিজানপুরে দেড় কিলোমিটারসহ সাড়ে চার কিলোমিটার এবং ২০১৯-এর জুলাইয়ে শুরু হওয়া (প্রথম সংশোধিত) শহর রক্ষা বাঁধের গোদার বাজার অংশের আড়াই কিলোমিটারসহ মোট সাত কিলোমিটার এলাকায় ৪৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এতে দ্বিতীয় পর্যায়ের সাড়ে চার কিলোমিটারে ৩৭৬ কোটি ও প্রথম সংশোধিত ১৫২৭ মিটারে ৭৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়। প্রকল্পের জন্য ৮.৩ কিলোমিটার অংশে ৪৯ লাখ ঘনমিটার ড্রেজিং করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না কারার শর্তে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিসি ব্লক বসানোর কাজের শুরু থেকেই অনিয়ম চলে আসছিল। যার কারণে ব্লক বসানোর কয়েক মাসের মধ্যে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

নদীতীরের ভাঙনকবলিত কয়েকজন বাসিন্দা জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভাঙন প্রতিরোধ বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হলে আশায় অনেক বুক বেঁধেছিলাম। কিন্তু কাজের শুরুতেই অনিয়ম হতে দেখেও মুখ খুলে কিছু বলতে পারিনি। এ অনিয়মের কারণে আজ ব্লক ধসে নদীতে বিলীন হচ্ছে। তাদের দাবি, যাতে আগামীতে ব্লক বসানোর কাজ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নজরদারিতে রেখে শেষ করে।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর আহাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় হঠাৎ এনজিএল ইটভাটা এলাকায় ১৫০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। তাৎক্ষণিক সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ও সিসি ব্লক ফেলানোর ব্যবস্থা করি।

কাজে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্লক ধসে যাওয়া অনিয়মের কোনো বিষয় নয়। এখনো কাজটি শেষ হয়নি। জিও ব্যাগ এবং ঠেস ব্লক, যা নদীতে ফেলার কথা ছিল, তা এখনো ফেলা হয়নি। তাই বসানো ব্লক ধসে পড়েছে। আপাতত নদীতীরের সড়ক রক্ষার্থে ব্লকগুলো দেওয়া হয়েছিল। বৃষ্টি শেষে নিয়ম অনুযায়ী সব কাজ সম্পন্ন করা হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন