বিশ্বের কাছে করোনা সহায়তার আকুতি মিয়ানমারের জান্তার

বিশ্বের কাছে করোনা সহায়তার আকুতি মিয়ানমারের জান্তার

করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা চেয়েছে মিয়ানমারের জান্তা কর্তৃপক্ষ। করোনার নতুন ঢেউয়ের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় এশিয়ার দারিদ্রপীড়িত এই দেশটির জান্তা সরকার বিশ্বের সহায়তা চেয়েছে বলে বুধবার মিয়ানমারের সরকারি গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে।

গত ফেব্রুয়ারিতে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে সেনাবাহিনী ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশটিতে অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়। অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে অনেক মেডিকেল কর্মী চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় দেশটির ভঙ্গুর চিকিৎসা ব্যবস্থা করোনার প্রকোপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে।

বাড়িতে থাকার নির্দেশনা জারি হলেও করোনার উত্থান থামাতে ব্যর্থ হয়েছে মিয়ানমার। করোনায় মৃতদের সৎকারে শ্মশানগুলো পূর্ণ সক্ষমতা নিয়ে কাজ করছে। অনেক স্বেচ্ছাসেবী বাড়িতে মৃতদের দেহ বের করে আনতে অবিরাম কাজ করে চলেছেন।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে মিয়ানমারের জান্তা প্রধান মিন অং হ্লেইং একটি সমন্বয় বৈঠক করেছেন। বৈঠকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোকে নিয়ে গঠিত কোভিড-১৯ মোকাবিলা তহবিলের কাছে মিয়ানমারের অর্থ সহায়তা চাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

দেশটির সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার বলছে, আসিয়ান এবং অন্যান্য বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করছে মিয়ানমার। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনও তথ্য দেয়নি দেশটির সরকারি এই সংবাদমাধ্যম।

বুধবারও দেশটিতে প্রায় ৫ হাজার মানুষ নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন; যা গত মে মাসের শুরুর দিকের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি। কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, মিয়ানমারে করোনার প্রকৃত চিত্র অনেক বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের গঠিত স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিলের মতে, দেশটির ৫ কোটি ৪০ লাখের নাগরিকের মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ১০ লাখ ৭৫ হাজার জনকে করোনা টিকা দেওয়া হয়েছে।

জান্তা কর্তৃপক্ষ বলছে, গত সপ্তাহে চীনের পাঠানো সিনোফার্মের উপহারের টিকার চালান মিয়ানমারে পৌঁছেছে। এই টিকা চীন-মিয়ানমার সীমান্তের কাছে বাসিন্দাদের অগ্রাধিকারভিত্তিতে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। অভ্যুত্থান-সহিংসতায় বিপর্যস্ত মিয়ানমারের সীমান্ত অঞ্চলের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে ১০ হাজারের বেশি ডোজ টিকা সহায়তা দিয়েছে চীন।

চলতি মাসের শুরুর দিকে মিয়ানমার জানায়, মহামারি মোকাবিলায় চীনের কাছে ৪০ লাখ ডোজ টিকার অর্ডার দিয়েছে জান্তা সরকার। এছাড়াও অতিরিক্ত ২০ লাখ ডোজ টিকা উপহার হিসেবে পাঠাবে বেইজিং। চলতি বছরের শুরুর দিকে ভারতের কাছ থেকেও প্রায় ১৫ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন সহায়তা পায় মিয়ানমার।

আপনি আরও পড়তে পারেন