সেনাবাহিনীর পুনর্গঠন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ : আফগান প্রেসিডেন্ট

সেনাবাহিনীর পুনর্গঠন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ : আফগান প্রেসিডেন্ট

তালেবান সদস্যদের অগ্রযাত্রা প্রতিহত করতে সাফল্যের পরিচয় দিতে পারেনি আফগানিস্তানের সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। রোববার পরক্ষোভাবে এ কথা স্বীকার করেছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি।

শনিবার টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে আফগান রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা আমাদের সশস্ত্র ও নিরাপত্তা বাহিনীকে পুনর্গঠনকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি। এ বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং হচ্ছে।’

দুর্বল অব্যবস্থাপনার অভিযোগে গত ১২ আগস্ট আফগানিস্তানের সেনাপ্রধানের পদ থেকে ওয়ালি আহমেদজাইকে সরিয়ে দিয়েছে আফগান সরকার, যাকে দু’মাস আগে আফগান সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন আশরাফ গনি।

তার জায়গায় বর্তমানে নতুন সেনাপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে হায়বাতুল্লাহ আলীজাইকে।

চলতি বছর ২০ এপ্রিল আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

তিনি বলেছিলেন, ২০২১ সালের ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব মার্কিন ও ন্যাটো সেনাসদস্যকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। পরে এই সময়সীমাকে আরও এগিয়ে ৩১ আগস্ট করা হয়।

বাইডেনের এই ঘোষণার পর থেকেই নতুন উদ্যমে আফগানিস্তান পুনরায় নিজেদের দখলে নিয়ে আসার অভিযান শুরু করেছে কট্টরপন্থি ইসলামি গোষ্ঠী তালেবান। ইতোমধ্যে আফগানিস্তানের ৩৪ টি প্রদেশের ১৮ টিরই পতন হয়েছে তালেবানগোষ্ঠীর হাতে।

শুক্রবার সকালে কান্দাহার ও লস্কর গাহ দখল করার পর তালেবান এদিন বিকেলে ঘোর প্রদেশের রাজধানী ফিরুজ কোহ, উরুজগানের রাজধানী টেরেনকোট, লোগারের রাজধানী পুল-ই-আলম ও বাদঘিসের রাজধানী কালা-ই নাও দখল করে নিয়েছে।

আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তালেবানের সদস্যরা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল দখলে নিতে পারে বলে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দারা আগে যে অনুমান করেছিলেন; সেটি ভুল প্রমাণিত হতে চলেছে। মার্কিন ওই নিরাপত্তা সূত্র বলেছে, মার্কিন গোয়েন্দাদের ধারণার আগেই কাবুলের নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে যাওয়ার হুমকি রয়েছে।

মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে তালেবানের অবিশ্বাস্য সামরিক সাফল্যের দিকে আফগান সরকার তো বটেই, পুরো বিশ্বই অবাক হয়ে তাকিয়ে রয়েছে। কোথাও কোথাও লড়াই ছাড়াই তালেবানের কাছে পরাজয় স্বীকার বা আত্মসমর্পণ করছে সরকারি বাহিনী।

শনিবারের ভাষণে অবশ্য দেশের সেনা সদস্যদের সমালোচনা করেননি গনি, বরং প্রশংসা করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘তারা সাহসিকতা ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞার সঙ্গে তাদের দায়িত্ব পালন করেছে।’

বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি ও বিদেশি অংশিদারদের সঙ্গে তিনি পরামর্শ করছেন উল্লেখ করে শনিবারের বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে সংঘাতে বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষ ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন এবং আমরা তা আরও বাড়ানোর পক্ষপাতী নই।’

‘বর্তমান পরিস্থিতি থেকে কীভাবে উত্তরণ ঘটা সম্ভব- তা নির্ধারণে ইতোমধ্যে আমি দেশের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছি এবং সবার পরামর্শ চাইছি।’

আপনি আরও পড়তে পারেন