মাদরাসাসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আহ্বান হেফাজত আমিরের

মাদরাসাসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আহ্বান হেফাজত আমিরের

কওমি মাদরাসাসহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমির ও দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসার শায়খুল হাদিস আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান।

বাবুনগরী বলেন, ‘দেশের সার্বিক আর্থসামাজিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সরকার ১১ আগস্ট থেকে অফিস, হাট-বাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালুর অনুমতি এবং সীমিত পরিসরে গণপরিবহন খুলে দিয়েছে। এছাড়া আগামী ১৯ আগস্ট থেকে পর্যটন, বিনোদনকেন্দ্র, চিড়িয়াখানা ও গণপরিবহন চলাচলে সব বিধিনিষেধ তুলে নিচ্ছে। সরকারের এ সিদ্ধান্তকে আমরা বাস্তবসম্মত ও জনচাহিদার প্রতিফলন হিসেবে দেখছি। এ পরিস্থিতিতে দেশের ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবকদের সঙ্গে সরকারের কাছে আমরাও জোর আহ্বান জানাই যে, ছুটি আর দীর্ঘায়িত না করে অবিলম্বে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হোক।’

হেফাজত আমির বলেন, ‘শিক্ষার ধারাবাহিকতা থেকে দীর্ঘদিন দূরে থাকার কারণে দেশের প্রতিটা শিক্ষার্থী, তাদের অভিভাবক এবং শিক্ষকরা আজ দিশেহারা। বই-পুস্তকের সঙ্গে কোমলমতি ছোট শিক্ষার্থীদের যেমন ব্যাপক ফারাক তৈরি হয়েছে, তেমনি কিশোর বয়সের শিক্ষার্থীরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে ওঠছে। যে সময়টা তারা বই-পুস্তক ও নৈতিকতার অনুশীলনে ব্যয় করত, সেটা তারা পার করছে মোবাইল-ইন্টারনেটের ক্ষতিকর ব্যবহার অথবা বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে অহেতুক আড্ডা দিয়ে। পাশাপাশি নানা ধরনের কিশোর অপরাধ আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলেছে। অভিভাবকরা সন্তানদের বিপথগামিতা ও ভবিষ্যত ভেবে গভীর উৎকণ্ঠায় ভুগছেন।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা থেকে শুরু করে দেশের স্বাস্থ্যবিভাগ থেকেও বলা হচ্ছে, করোনায় কম বয়সীদের তেমন ক্ষতি হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে সবকিছু উন্মুক্ত রেখে শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কোনো যৌক্তিকতা থাকে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে দেশের আলেম সমাজও সরকারের প্রতি মাদরাসাগুলো খুলে দিতে বারবার আহ্বান জানিয়ে আসছেন। যাতে করে লাখ লাখ মাদরাসা ছাত্রের শিক্ষার ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ থাকে। পাশাপাশি কুরআন-হাদিস ও ইসলামি জ্ঞান চর্চার বরকতে করোনাসহ সকল বিপদাপদ থেকে দেশ ও জাতি রক্ষা পায়।’

হেফাজতের আমির বলেন, ‘সরকার গত বছরের আগস্ট থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত কওমি মাদরাসাগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার অনুমতি দিয়েছিল। এই আট মাসে কোনো মাদরাসায় করোনা ছড়িয়ে পড়ার নজির ছিল না। কওমি মাদরাসাগুলোর এই ইতিবাচক অভিজ্ঞতার আলোকে শুধু মাদরাসা নয়, বরং কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই বন্ধ রাখা বাস্তবসম্মত নয়। সুতরাং মাদরাসাসহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করতে সরকারের প্রতি আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।’

আপনি আরও পড়তে পারেন