ঢাকার অদূরে ডেমরায় প্রায় ১১৫ একর জমিতে সিটি হাই-টেক পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে সিটি গ্রুপ প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। পার্কটি চালু হলে প্রায় ১৫ হাজার কর্মসংস্থান হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এতে হাইটেক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ এবং সিটি হাই-টেক পার্ক লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. হাসান স্বাক্ষর করেন।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বেসরকারি এ হাই-টেক পার্কটি চালু হলে প্রায় ১৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এর আগে, গত ৩১ মে ‘সিটি হাই-টেক পার্ক’-কে বেসরকারি হাই-টেক পার্ক হিসেবে ঘোষণা করে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। এ পার্কে বিনিয়োগকারীরা ১৪টি প্রণোদনা সুবিধাসহ বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ওয়ান-স্টপ সার্ভিস পাবে।
হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের জনসংযোগ শাখা থেকে বলা হয়, এ চুক্তি সইয়ের মাধ্যমে সিটি গ্রুপকে পার্ক ডেভেলপার হিসেবে স্বীকৃতি দিল বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম সিটি গ্রুপকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, সিটি গ্রুপ দেশ-বিদেশে জনপ্রিয় একটি নাম। সিটি গ্রুপ এর মতো বড় প্রতিষ্ঠান হাই-টেক পার্ক স্থাপনে এগিয়ে আসায় দেশের অন্য কোম্পানিগুলোও উৎসাহিত হবে। সিটি গ্রুপ দ্রুততম সময়ে এই পার্ক ডেভেলপ করে কর্মচঞ্চল পরিবেশ সৃষ্টি করবে।
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, দেশে এ মুহূর্তে পাঁচটি হাই-টেক পার্ক বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত এবং আরও তিনটি পার্ক উদ্বোধনের অপেক্ষায়। গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে ৩৫৫ একর জমিতে বিভিন্ন কোম্পানি কাজ করছে। এখান থেকে উৎপাদিত পণ্য বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত হাই-টেক পার্কসমূহে ১৪০টির অধিক স্থানীয় স্টার্টআপ কোম্পানিকে বিনামূল্যে স্পেস/কো-ওয়ার্কিং স্পেস বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ আইটি ইন্ডাস্ট্রির জনবলের চাহিদার দিক বিবেচনা করে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মধ্যমে আইসিটি খাতে দক্ষ হিসেবে তৈরি হয়েছেন ২৮ হাজার ৫০০ জন। বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আইসিটি খাতে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রায় ২১ হাজার জনের প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে ।
সিটি গ্রুপকে প্রাইভেট হাই-টেক পার্ক ঘোষণা দেওয়ায় বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. হাসান। এ সময়ে তিনি বলেন, যেসব ইলেকট্রনিক্স এবং প্রযুক্তিপণ্য বাংলাদেশে তৈরি করার কথা কেউ চিন্তাও করতে পারেনি, আমরা সেগুলো তৈরি করব। মাইক্রো প্রসেসর, চিপ ডিজাইন, সার্কিট ডিজাইন, মোবাইল, ল্যাপটপ, টিভি, ফ্রিজ উৎপাদন/সংযোজন, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল অ্যান্ড টেকনোলজি কনসালটেনশন ফার্ম, নেটওয়ার্কি, ডাটা সেন্টার, সাইবার সিকিউরিটি, প্রোগ্রামিং, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট, মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য ট্রেনিং ইনস্টিটিউট স্থাপনসহ আইটি শিল্প ইউনিট স্থাপনে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদেরকে উৎসাহিত করা হবে। এছাড়া ডরমিটরি ও সাইন্স পার্ক স্থাপন করা হবে। সিটি হাই-টেক পার্কে আনুমানিক ৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে এবং ১৫ হাজার লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
