ফ্লাইওভারে সুতার ফাঁদ, অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনতাই করে ওরা ৭ জন

ফ্লাইওভারে সুতার ফাঁদ, অস্ত্র ঠেকিয়ে ছিনতাই করে ওরা ৭ জন

নির্জন রাত। দ্রুত গতিতে ছুটে চলেছে মোটরসাইকেল। চট্টগ্রামের ফ্লাইওভারে উঠতেই টাঙানো সুতায় বেধে আচমকা পড়ে গেল।

মারাত্মক আহত হয়ে বা ব্যথায় গোঙাতে থাকা চালক হয়ত সাহায্যের প্রত্যাশা করছেন। এমন সময় দেখা গেল কয়েকজন তরুণ এগিয়ে আসছেন। তাদের তখন দেবদূত বলে মনে হতে পারে। কিন্তু আরও কাছে এলে দেখা যায় তাদের হাতে ছোরা, চাকু, অস্ত্র। মুহূর্তে তারা আহতের সব কিছু ছিনিয়ে দ্রুত চম্পট দেন।

চট্টগ্রামে ভয়ঙ্কর এই ছিনতাইচক্রের সাত সদস্যকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৮ আগস্ট) ভোরে নগরীর কোতোয়ালী থানার জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদের পাশ থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা বহদ্দারহাট থেকে লালখান বাজারগামী ফ্লাইওভারের গার্ডারে ছিনতাই ও ডাকাতি করার জন্য ওৎ পেতে থাকতেন। তারা ফ্লাইওভারের দুই পাশে সুতা বেঁধে ফাঁদ পাততেন। এই সুতায় মোটরসাইকেল আরোহীরা আটকে পড়ে গেলে তারা অস্ত্র, ছোরা নিয়ে এসে সর্বস্ব ছিনিয়ে পালিয়ে যান।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. হৃদয় হোসেন (১৯), শহিদুল ইসলাম মনা(২২), চাঁন মিয়া (২১), মো. হাসান (১৯), মো. আরিফ (১৯), আনিচ (১৯) এবং মো. মহসিন উদ্দিন ওরফে টুকু (৩০)। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি এলজি, ৫টি ছোরা, দুইটি লোহার ছেনি উদ্ধার করা হয়।

কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার ভোরে ওয়াসা জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদের দক্ষিণ পাশের মাঠের কাছে পরিত্যক্ত একটি পাকা ঘর থেকে ছিনতাইচক্রের এই সাত সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের আসামিরা জানিয়েছেন, তারা বহদ্দারহাট থেকে লালখান বাজারগামী ফ্লাইওভারের গাডারে ছিনতাই ও ডাকাতি করার জন্য ওৎ পেতে থাকতেন। তারা ফ্লাইওভারের দুই পাশে সুতা বেঁধে ফাঁদ পাততেন। এই ফাঁদে আটকে গেলে সুযোগ বুঝে তারা ছিনতাই করেন।

ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন আরও বলেন, এছাড়া তারা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র এলজি ও টিপ ছোরাসহ অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে রাতের বেলায় ফ্লাইওভারের নিচে নির্জন এলাকায় এবং ঘটনাস্থলের আশপাশসহ চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে ডাকাতি করেন। আসামিরা পুলিশের হাত থেকে বাঁচার জন্য ফ্লাইওভারের গার্ডারের ভিতরে স্ল্যাবের কোনায় বিশেষ কায়দায় বসবাস করেন। পুলিশ আসার সন্ধান পেলেই ফ্লাইওভারের গার্ডারের পাশে ফাঁকা অংশ দিয়ে পাইপ বেয়ে নিচে নেমে বা ফ্লাইওভারের ওপরে উঠে পালিয়ে যান।

গ্রেফতারকৃত প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন