রাণীনগরে জরাজীর্ণ ভবনে চলছে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম; দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা

রাণীনগরে জরাজীর্ণ ভবনে চলছে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম; দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা

বিকাশ চন্দ্র প্রাং, নওগাঁ প্রতিনিধি: দেশের স্থানীয় পর্যায়ে অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ন ও শক্তিশালী একটি প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন পরিষদ। কিন্তু জনগুরুত্বপূর্ণ এই সেবা প্রতিষ্ঠান জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে নওগাঁর রাণীনগরে। উপজেলার ৬কালীগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের জরাজীর্ণ অবস্থা হলেও নজর নেই কর্তৃপক্ষের। জীবনের ঝুকি নিয়ে প্রতিদিনই সেবা দিয়ে আসছে পরিষদের চেয়ারম্যান, সচিব ও সদস্যরা। সেবা নিতে আসা শত শত মানুষ আতঙ্কে থাকেন কখন যেন মাথার উপর ভেঙ্গে পড়বে ভবনের বিভিন্ন অংশ।

পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, পরিষদের জন্মলগ্ন থেকে ব্যক্তি মালিকানা বাড়ি ভাড়া নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চলতো। এরপর বিগত জোট সরকারের আমলে খাঁনপুকুর নামক স্থানে চৌধুরী পুকুরের পাশে ৬৬শতাংশ জমি ক্রয় করে তৎকালীন সরকার একটি দ্বিতল ও পাশে একটি একতলা ভবন নির্মাণ করে। দীর্ঘদিন যাবত এই ভবনগুলোর কোন সংস্কার কিংবা মেরামত না করার কারণে বর্তমানে দুটি ভবনই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ন হয়ে পড়েছে। প্রায় প্রতিদিনই ভবনের ছাদ থেকে পলেস্তার খুলে পড়ছে। খুলে পড়ছে পোকায় নষ্ট হওয়া দরজা-জানালাসহ অন্যান্য উপকরনগুলো। জানালার গ্রিলগুলো মরিচায় নষ্ট হয়ে গেছে। পরিষদের গ্রাম আদালত কক্ষ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ন হওয়ার কারণে বর্তমানে এজলাস কক্ষে পরিষদের সকল প্রকারের বিচার কার্য পরিচালনা করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এছাড়াও পরিষদের চারদিকে নিরাপত্তা বেষ্টনী নড়বড়ে হওয়ার কারণে রাতের বেলায় এখানে মাদকসেবীদের আড্ডা বসে। পরিষদের অনেক মূল্যবান জিনিস রাতের আঁধারে চুরিও হয়ে গেছে। অনেক সময় পরিষদে সেবা নিতে আসা বিভিন্ন মানুষের মাথায় ছাদের পলেস্তার খুলে পড়ে একাধিকবার ঘটেছে দুর্ঘটনা। তবুও জনগুরুত্বপূর্ন এই প্রতিষ্ঠানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়তই সেবা দিয়ে আসছে সংশ্লিষ্টরা।

পরিষদে সেবা নিতে আসা রাতোয়াল গ্রামের রহিদুল ইসলাম রাইপ, আব্দুর রাজ্জাক, মাসুদ রানাসহ অনেকেই বলেন পরিষদে কোন সেবা নিতে আসলে ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়। তাই সেবা নেওয়ার সময় পর্যন্ত পরিষদের বাহিরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বর্তমান সরকারের সবকিছুতে আধুনিকতা ও ডিজিটাল উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও এমন জনগুরুত্বপূর্ন প্রতিষ্ঠানে এখন পর্যন্ত উন্নয়নের কোন ছোঁয়াই স্পর্শ করেনি। এটি এই ইউনিয়ন বাসীদের জন্য অত্যন্ত দু:খজনক। দেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে শহরের সুবিধা পৌছে দেওয়ার আগে এই ইউনিয়ন পরিষদকে আধুনিকায়ন করা অত্যন্ত জরুরী এবং সময়ের দাবী।

পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বাবলু বলেন, আমি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর নিজ উদ্যোগে ঝুঁকিপূর্ন পুরো ভবনের মধ্যে চেয়ারম্যানের বসার ঘরটি কোন মতে সংস্কার করেছি। পরিষদের পুরো ভবনগুলো সংস্কার করার মতো বিপুল পরিমাণ অর্থ জোগান দেওয়া পরিষদের পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু সেবা দেওয়া জরুরী বলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা প্রতিদিনই চেষ্টা করছি পরিষদে আসা মানুষদের মানসম্মত সেবা দিতে। পরিষদ ভবনের এমন জরাজীর্ণ অবস্থা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানিয়েছি। কর্তৃপক্ষরা শুধুমাত্র আশা দিয়েই রেখেছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি এবং পরিষদ ভবন পরিদর্শন করে বিষয়টি জেলা প্রশাসক স্যারকে জানিয়েছি। স্যার এমন জনগুরুত্বপূর্ন প্রতিষ্ঠানটি দ্রুত সংস্কার কিংবা মেরামত কিংবা নতুন করে ভবন নির্মাণ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানাবেন বলে জানিয়েছেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন