আফগানিস্তানে সার্বিক রাজনৈতিক সামাজিক পরিস্থিতি সম্প্রতি ব্যাপক রূপান্তরের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। চীন মনে করছে, এই পরিস্থিতে যুক্তরাষ্ট্র, তার মিত্র দেশসমূহ এবং অন্যান্য রাষ্ট্রের উচিত দেশটির সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো।
চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা সিনহুয়া নিউজের বরাত দিয়ে করা এক প্রতিবেদনে ভারতের বৃহত্তম বার্তাসংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই) জানিয়েছে, রোববার আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক অবস্থা ও করণীয় সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে টেলিফোনে আলোচনা ও মত বিনিময় করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই।
টেলিফোনে ওয়াং ই অ্যান্টনি ব্লিনকেন কে বলেন, ‘আফগানিস্তানের সার্বিক পরিস্থিতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটছে। আমরা মনে করছি, এই মুহূর্তে বিশ্বের সব রাষ্ট্রের উচিত তালেবানদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো।’
‘তা ছাড়া আর একটি ব্যাপার হলো, তালেবান বাহিনী দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে ছিল। তাদের সঙ্গে যদি যোগাযোগ বাড়ানো যায়, সেক্ষেত্রে তাদেরকে একভাবে রাষ্ট্র পরিচালানার বিষয়ে গাইড করাও সম্ভব হবে।’
টেলিফোনে ওয়াং ই আরও বলেন, ‘বাস্তব পরিস্থিতিতে এটি ইতোমধ্যে প্রমাণিত যে আফগানিস্তানকে জঙ্গিমুক্ত করতে ২০ বছর আগে যে অভিযান শুরু করেছিল যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো, তা ব্যর্থ হয়েছে। এখন দেশটি নতুন করে যেন জঙ্গিবাদের কেন্দ্র না হয়ে উঠতে পারে, সে বিষয়ে আমাদের সবারই দায়িত্বশীল হওয়া উচিত।’
তবে ওয়াং ইউয়ের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ব্লিনকেন কি বলেছেন- তা জানা যায় নি।
গত মাসে বেইজিংয়ে তালেবান প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠকে তালেবান বাহিনীর অন্যতম নেতা মোল্লা বারাদার তালেবান বাহিনীর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য চীনের সহযোগিতা কামনা করেন, অন্যদিকে চীন শর্ত রাখে- জিনজিয়াংয়ের উইঘুর মুসলিমদের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইস্ট তুর্কিস্তান ইসলামিক মুভমেন্টকে (ইটিআইএম) কোনো প্রকার সহযোগিতা করতে পারবে না তালেবান।
তালেবান বাহিনী প্রাথমিকভাবে ওই শর্ত মেনে নিয়েছিল।
তারপর ১৫ তারিখ কাবুল দখল করে তালেবান বাহিনী। বর্তমানে তারা সরকার গঠনের তৎপরতা শুরু করেছে। কিন্তু এক্ষেত্রে তালেবানদের সামনে সবচেয়ে বড় যে চ্যালেঞ্জটি উপস্থিত হয়েছে – তা হলো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, তারা তালেবান গঠিত সরকারকে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত নয়। রাশিয়, তুরস্ক ও আফগানিস্তানের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানসহ কয়েকটি দেশ বলেছে, এ ব্যাপারে তাদের আরও সময়ের প্রয়োজন।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদেশসমূহ এখনও এই ইস্যুতে নিজের অবস্থান পুরোপুরি স্পষ্ট করেনি।