টাঙ্গাই‌লে ত্রাণের অপেক্ষায় বানভাসি মানুষ

টাঙ্গাই‌লে ত্রাণের অপেক্ষায় বানভাসি মানুষ

টাঙ্গাই‌লে যমুনা নদীসহ বি‌ভিন্ন নদীর পা‌নি বৃ‌দ্ধি অব্যাহত হ‌য়ে‌ছে। জেলায় বন্যা প‌রি‌স্থি‌তি অবন‌তির পাশাপা‌শি বাড়‌ছে বানভাসিদের দুর্ভোগ। নিম্নাঞ্চ‌লের মানুষজন দীর্ঘদিন ধ‌রে পা‌নিব‌ন্দি হ‌য়ে মান‌বেতর জীবনযাপন কর‌লেও সরকা‌রিভা‌বে পৌঁছায়‌নি কোনো ত্রাণসহায়তা।

য‌দিও জেলা প্রশাস‌নের দাবি, বন্যার্তদের জন্য ত্রাণসহায়তা বরাদ্দ দেওয়া হ‌য়ে‌ছে। পা‌নিব‌ন্দি মানু‌ষের ম‌ধ্যে ত্রাণসহায়তা বিতরণ করা হ‌চ্ছে। বৃহস্প‌তিবার (২ সে‌প্টেম্বর) জেলায় যমুনা নদী‌তে ২৪ ঘণ্টায় ৮ সে‌ন্টি‌মিটার পা‌নি বৃ‌দ্ধি পে‌য়ে‌ছে। এ‌তে বিপৎসীমার ৫৯ সে‌ন্টি‌মিটা‌রের ওপর দি‌য়ে পা‌নি প্রবাহিত হ‌চ্ছে।

এ‌দি‌কে পা‌নি বৃ‌দ্ধির সঙ্গে জেলার পুং‌লি নদীর অব্যাহত ভাঙ‌নে টাঙ্গাইল সদর উপ‌জেলার পাছ বেথইর এলাকার শহররক্ষা বাঁধ হুম‌কির মু‌খে প‌ড়ে‌ছে। ই‌তোম‌ধ্যে ভাঙ‌নে শতা‌ধিক প‌রিবার গৃহহীন হ‌লেও ভাঙন‌রো‌ধে কোনো উ‌দ্যোগ নি‌চ্ছে না পা‌নি উন্নয়ন বোর্ড দাবি ক‌রে‌ছে স্থানীয়‌রা।

স‌রেজ‌মি‌নে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার গালা ইউনিয়নের পাছ বেথইর এলাকায় দেখা গে‌ছে, পুং‌লি নদীর ভাঙ‌নে নদীপা‌ড়ের মানুষের ঘরবা‌ড়ি ভাঙন শুরু হ‌য়ে‌ছে। ভাঙ‌তে ভাঙ‌তে নদী আঘাত কর‌ছে টাঙ্গাইল শহররক্ষা বাঁধ সড়ক। সড়‌কের ভাঙন শুরু হ‌লেও সে‌টি রো‌ধে কোনো উ‌দ্যোগ নেওয়া হয়‌নি।

স্থানীয়‌দের অ‌ভি‌যোগ, পুং‌লি নদীর সদর উপ‌জেলার পাছ বেথইর এলাকার শহর রক্ষা বা‌ধের সড়ক ভাঙনরো‌ধে দ্রুত ব‌্যবস্থা না নেয়া হ‌লে যে‌কোন মুহু‌র্তে সে‌টি ভে‌ঙে নদী‌তে বিলীন হ‌বে এবং শহর ত‌লি‌য়ে যা‌বে।

জানা গে‌ছে, যমুনাসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে টাঙ্গাইল সদরসহ ৬টি উপজেলায় নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এছাড়া পা‌নি বি‌ভিন্ন উপ‌জেলার নিম্নাঞ্চ‌লে প্রবেশ করায় স্রো‌তে কালভার্ট ও সড়ক ভে‌ঙে যাওয়ায় যোগা‌যোগ ব্যবস্থা বন্ধ হ‌য়ে গে‌ছে।

জেলা কৃ‌ষি কার্যালয় সূ‌ত্রে জানা গে‌ছে, এবছর বন্যার পানিতে ভেসে গেছে ৭৫০ হেক্টর জমিতে লাগানো রোপা-আমন ও ১০ হেক্টর সবজিক্ষেত। ফ‌লে ক্ষ‌তিগ্রস্ত হ‌য়ে‌ছেন কৃষক।

বন্যাকব‌লিতরা জানান, পা‌নি প্রবেশ করায় ঘরবা‌ড়ির পাশাপা‌শি টিউবও‌য়েল ত‌লি‌য়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবারের তীব্র সংকট দেখা দি‌য়ে‌ছে। ত‌বে এখন পর্যন্ত কোনো ত্রাণসহায়তা পাওয়া যায়‌নি।

গালা ইউ‌পি চেয়ারম্যান রাজ কুমার ব‌লেন, পাছ বেথইর এলাকায় নদী ভাঙ‌নের বিষয়‌টি স্থানীয় এমপি, জেলা প্রশাসন ও পা‌নি উন্নয়ন বোর্ডকে অব‌হিত করা হ‌লেও ভাঙন‌রো‌ধে উ‌দ্যোগ নেওয়া হ‌চ্ছে না। স্থানীয় প্রশাস‌নের পাশাপা‌শি সংসদ সদ‌স্যের য‌দি স‌দিচ্ছা থা‌কে তাহলে ভাঙন‌রো‌ধ সম্ভব হ‌বে।

জেলা প্রশাসক ড. আতাউল গনি জানান, জেলার নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে নদীতীরবর্তী এলাকার মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। জেলায় ইতোমধ্যে এসব অসহায় মানুষের মাঝে নগদ ১০ লাখ ৬০ হাজার নগদ টাকা এবং ২০ টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন