এমপি স্বপনের জানাজায় মানুষের ঢল

এমপি স্বপনের জানাজায় মানুষের ঢল

লাখো মানুষের অশ্রুজল ও ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে বাবা-মায়ের কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য হাসিবুর রহমান স্বপন।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে শুক্রবার বাদ জুমা শাহজাদপুর হাইস্কুল মাঠে এমপি স্বপনের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর পর বিকেল ৩টার পরে শাহজাদপুর চুনিয়াখালিপাড়া শাহ মখদুম কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।

এ সময় এমপিকে চিরকালের জন্য বিদায় দিতে এবং জানাজায় অংশ নিতে লাখো মানুষের ঢল নামে শাহজাদপুরে। এর আগে এদিন শেষবারের মতো শাহজাদপুরের দ্বারিয়াপুরের বাসায় আনা হয় গণমানুষের নেতা হাসিবুর রহমান স্বপনকে।

কফিনে মোড়ানো নিথর দেহে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সামরিক হেলিকপ্টারযোগে প্রথমে বেড়া খালেকুজ্জামান স্টেডিয়ামে আনা হয় এবং সেখান থেকে ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্সে করে শাহজাদপুরের দ্বারিয়াপুর বাসায় আনা হয়।

শাহজাদপুরের লাখো প্রাণের হৃদয়ের স্পন্দন, সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনের সংসদ সদস্য সাবেক শিল্প উপমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা হাসিবুর রহমান স্বপনকে (৬৭) শেষবারের মতো দেখতে সেখানে ভিড় করেন হাজার হাজার মানুষ।

অভিভাবক হারানোর বেদনা বুকে নিয়ে হাজার হাজার নেতাকর্মী এবং স্বজনরা স্তব্ধ নির্বাক হয়ে দেখতে থাকেন প্রিয় নেতাকে। এমনভাবে তারা অভিভাবকহারা হবেন, মেনে নিতে পারেননি কেউই।

এর আগে ২৫ জুলাই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে কিছুদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে তুরস্ক নেওয়া হয়। তুরস্কের ইস্তাম্বুল মেমোরিয়াল হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোর ৩টা ৩৩ মিনিটে মারা যান তিনি।

মৃত্যুর সংবাদটি পাওয়ার পর থেকেই প্রিয় ও শ্রদ্ধাভাজন অভিভাবককে একনজর দেখার জন্য ব্যকুল হয়ে প্রতীক্ষা করছিলেন শাহজাদপুরের মানুষ। হাসপাতালের সকল প্রক্রিয়া শেষে বিমানে করে শুক্রবার ভোরে ঢাকায় আনা হয় তার লাশ।

সেখানে রাষ্ট্রপতি, স্পিকার এবং প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বনানীতে প্রথম জানাজা অননুষ্ঠিত হয়। এর পর ঢাকা থেকে সামরিক হেলিকপ্টারযোগে বেড়া হয়ে স্বজনদের দেখানোর জন্য দ্বারিয়াপুরের বাসায় রাখা হয়।

এদিন বাদ জুমা শাহজাদপুর হাই স্কুল মাঠে দ্বিতীয় জানাযা শেষে শাহজাদপুর চুনিয়াখালি ড়া শাহ মখদুম কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে সমাহিত করা হয় এমপি স্বপনকে।

তিনি ১৯৯৬ সালে বিএনপি থেকে প্রথম এমপি নির্বাচিত হন। এর পর ১৯৯৮ সালে আওয়ামী লীগে যোগদান করে শিল্প উপমন্ত্রী হন। এর আগে তিনি ১৯৮৬ সালে তৎকালিন শাহজাদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ১৯৯২ সালে শাহজাদপুর পৌরসভার প্রথম মেয়র নির্বাচিত হন।

তিনি ২০০৯ সালে শাহজাদপুর উপজেলা চেয়ারম্যান, ২০১৪ ও ২০১৬ সালে পরপর দুইবার আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে এমপি নির্বাচিত হন। শেষনিঃশ্বাস ত্যাগের আগ পর্যন্ত তিনি সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও শাহজাদপুর আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন