তামিম, সাকিব, মুশফিকরা বিসিবিতে না এলে বিশাল ক্ষতি

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের আসন্ন নির্বাচন শেষমুহূর্তে এসে বেশ জমে উঠেছে। ২৩টি পরিচালক পদের বিপরীতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন সর্বমোট ৩২ জন। তারা সবাই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। ৬ অক্টোবরের ভোট যুদ্ধে সবাই লড়তে চান। এবার প্রথমবারের মতো নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট। লড়বেন রাজশাহী বিভাগ থেকে। যেখানে তার প্রতিদ্বন্দ্বী বিসিবির বর্তমান পরিচালক সাইফুল আলম স্বপন।

নির্বাচনকে ঘিরে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে কথা বলেছেন খালেদ মাসুদ পাইলট। জানিয়েছেন নিজের ভাবনার কথা। কথা বলেছেন বোর্ডের কাঠামোগত দিক নিয়ে। ক্রিকেট ছাড়ার পর বিসিবির পরিচালনা পর্ষদে আসতে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অর্জনের সিংহভাগ এসেছে যাদের হাত ধরে সেই সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিমদের কতটা কাঠখড় পোড়াতে হবে সে বিষয়ে নিজের ভাবনার কথা জানিয়েছেন তিইনি।

প্রশ্ন: আপনি এর আগেও কাউন্সিলর ছিলেন, তবে এবারই নির্বাচনে প্রথমবার। কী ভাবনা থেকে নির্বাচনের লড়াইয়ে নেমেছেন?

পাইলট: এবার নির্বাচন করব সেই ভাবনা থেকে এসেছি। আগেও আমি কাউন্সিলর ছিলাম, গতবার সাবেক অধিনায়কের কোটায় কাউন্সিলর হয়েছিলাম। কিন্তু সেবার আমি নির্বাচন করিনি। এবার আমার মূল লক্ষ্যই ছিল নির্বাচন করা। এজন্য আমি আমার বিভাগীয় কোটা থেকে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। আমার মূল ইচ্ছে বোর্ড পরিচালক হওয়া। এর কারণ, আপনি পরিসংখ্যান দেখেন। আগে রাজশাহী ক্রিকেট বাংলাদেশের খুব ভালো একটা অবস্থানে ছিল। জাতীয় লিগে আমরা টানা চ্যাম্পিয়ন ছিলাম কয়েকবারের। খেলা ছাড়ার পর বর্তমানের রাজশাহী ক্রিকেটের কাঠামো দেখলে খুব কষ্ট লাগে, যেহেতু আমি ক্রিকেটের সঙ্গেই আছি। আমার মনে হয় ক্রিকেটটা আরও বড় পরিসরে ছড়িয়ে দেওয়া দরকার রাজশাহীতে। যেটা হচ্ছে না। শেষ ৮-৯ বছর ধরে খুব বাজে অবস্থা। এখন দেখেন জাতীয় দলে খুলনা বিভাগের ক্রিকেটাররা বেশি প্রতিনিধিত্ব করছে। একসময় এটা রাজশাহীর ছিল। এগুলো দেখলে খুব কষ্ট লাগে। আমার কাছে মনে হয়েছে এখন যিনি রাজশাহী বিভাগের পরিচালক আছেন, উনি কাজ করছেন না। আমাদের বোর্ড সভাপতি পাপন ভাই জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে যেভাবে জড়িয়ে থাকেন, খবর নেন ভালো-মন্দের, তেমনিভাবে বিভাগীয় পরিচালকের কাছ থেকে খেলোয়াড়রা কিন্তু এটাই আশা করে যে তোমরা ভালো করছ না কেন, কি লাগবে তোমাদের, ভালো কোচ লাগবে কিনা, ভালো পরিবেশ লাগবে কিনা। আমাদের বর্তমান যিনি পরিচালক আছেন রাজশাহী বিভাগের, উনি শেষ ৮-৯ বছরের কখনো এই কাজটি করেননি। কখনোই না। এই যে দূরত্ব, কাঠামোগত বা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার এই জায়গাটা দেখে আমার মনে হয়েছে বোর্ডের দায়িত্বে আসা উচিত, পরিচালক হওয়া উচিত। না হলে তো হচ্ছে না। রাজশাহীর ক্রিকেটটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

প্রশ্ন: সংগঠক হিসেবে রাজশাহীর ক্রিকেটে বেশ অবদান আছে আপনার। সেখানে একটি ক্রিকেট একাডেমিও গড়ে তুলেছেন। সেখান থেকে জাতীয় দলের কয়েকজন ক্রিকেটার উঠে এসেছে। এবার পরিচালক নির্বাচিত হলে কোন ঠিক বিষয় নিয়ে কাজ করতে চান?

পাইলট: আমার তো নিজস্ব একটা একাডেমি আছে রাজশাহীতে। আমি বিভিন্ন ক্রিকেট ইভেন্ট আয়োজন করি। আমি রাজশাহীতে বেশি থাকি। সেখানে ক্রিকেট কার্নিভাল আয়োজন করি, জুনিয়র টুর্নামেন্ট করি, স্কুল টুর্নামেন্টে করি। খেলাধুলার উন্নয়নের সব কাজই করি। নির্বাচনের উদ্দেশ্য ছিল মূলত যখন আপনি এই কাজগুলো একা একা করবেন, তখন এক ধরনের হবে, যখন বোর্ডের আপনি একজন পরিচালক হবেন তখন কিন্তু আপনি এটার লাইসেন্স পেয়ে গেলেন। বোর্ডের পক্ষ থেকে আপনি ওই বিভাগে কাজ করার জন্য একটা সার্টিফিকেট পেলেন। এই কাজের জন্য ঐ চেয়ারটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। চেয়ারটা দেখানোর জায়গা না যে আমি বোর্ডের একজন পরিচালক। ঐ চেয়ারটার ব্যবহার জানতে হবে। ঐ চেয়ারটা আপনার কাজের পরিধি বাড়িয়ে দেবে। আমি এই জায়গাটাতে আসতে চাই এজন্য যে, আমি আমার কাজের পরিধি বাড়াতে চাই, কাজের গতি বাড়াতে চাই। আগে আমি শুধু রাজশাহী জেলাকে নিয়ে চিন্তা করতাম। এখন আমার ভাবনায় পুরো রাজশাহী বিভাগ।

প্রশ্ন: নির্বাচনে জিতলে খালেদ মাসুদ পাইলটের মূল ভূমিকা কি থাকবে?

পাইলট: এটা ঠিক যে রাজশাহীতে ঢাকার মতো ফ্যাসিলিটিজ নাই। তবে রাজশাহী কোন অংশে পিছিয়ে নেই। কারণ রাজশাহীতে সারাবছরই অনুশীলন হয়। সমস্যাটা হচ্ছে ওখানে যে টুর্নামেন্টগুলো হওয়া উচিত, বিভিন্ন লিগ সেগুলো হচ্ছে না। শুধু রাজশাহী জেলাতেই নয়, রাজশাহী বিভাগের বাকি যে জেলাগুলো আছে সেগুলোতেও ক্রিকেট লিগগুলো নিয়মিতভাবে হচ্ছে না। আমার এখানে একটা একাডেমি আছে। সেখানে ৩০০ জনের মতো ক্রিকেটার অনুশীলন করে। সেখান থেকে জাতীয় দলের কয়েকজন ক্রিকেটার উঠে এসেছে। এরকম যদি আরও কিছু একাডেমি করা যায়, রাজশাহী বিভাগের অন্যান্য জেলা থেকেও আরও অনেক ক্রিকেটার উঠে আসবে।

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন