চাঁদপুরে মন্দিরগুলোতে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি

এক বছর পর আবার দরজায় কড়া নাড়ছে পূজার আগমনী বার্তা। আগামী ৬ অক্টোবর মহালয়ার মধ্য দিয়ে ঢাক-ঢোল আর কাসের শব্দে শুরু হবে পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা। পূজা শুরু হবে ১১ অক্টোবর মহাপঞ্চমী তিথিতে আর শেষ হবে ১৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার দুর্গোৎসবকে পরিপূর্ণ রূপ দিতে মন্দিরগুলোতে চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।

দেবী দুর্গার অনিন্দ্যসুন্দর রূপ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাঁদপুরের প্রতিমা শিল্পীরা। বর্তমানে চলছে কাঁদা-মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ। এরপর প্রতিমাতে দেওয়া হবে রং-তুলির আঁচর। পাশাপাশি সুষ্ঠুভাবে পূজা সম্পন্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। এ বছর চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় ২১১টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।

শহরের গোপাল জিউর আখড়া, কালীমন্দির, শ্রীশ্রী শীতলা মায়ের মন্দিরসহ কয়েকটি মন্দিরে ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি মন্দিরেই প্রতিমা তৈরির কাজ অনেকটা সম্পন্ন হয়ে গেছে। কারিগররা ছুটছেন এক মন্দির থেকে আরেক মন্দিরে। একাধিক অর্ডার নেওয়ায় অনেকের রয়েছে কাজের চাপ। তবে সময়মত প্রতিমা হস্তান্তরে আশাবাদী তারা। আর সেই লক্ষ্যে দিনরাত কাজ করছেন তারা।

মূলত চাঁদপুরে উল্লেখযোগ্য তেমন মৃৎশিল্পী না থাকায় ফরিদপুর বা শরীয়তপুর থেকে এসব কারিগররা চাঁদপুরে এসে প্রতিমা তৈরির কাজ করে থাকেন। যদিও করোনা পরিস্থিতিতে অর্ডার কিছুটা কম। এছাড়া প্রয়োজনীয় মালামালের দাম বৃদ্ধির কারণে অর্ডার কিছুটা কম। তাই অনেক কর্মচারীকেই বাড়িতে রেখে এসেছেন বলে জানান বাসুদেব পাল। তিনি জানান, অর্ডার কম ও মালামালের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় নিজেদের পরিবারের কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে চলে এসেছি।

ফরিদপুর থেকে আসা জীবন কৃষ্ণ পাল নামের এক কারিগর জানান, গত দুই বছরের তুলনায় প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যবহৃত মালামালের দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু সব মালামাল এবং কারিগরের খরচ বাড়লেও প্রতিমা তৈরির মূল্য এখনো বাড়েনি। তিনি আরও জানান, সব গ্রাহক শুধু করোনার কথা বলে কত কম দিতে পারে সে দিকেই তাকায়। আমাদের দিকে কেউ তাকায় না। ২ বছর আগে যে সমস্ত প্রতিমা অর্ডার নিয়েছি ১ লাখ টাকায়, বর্তমানে সেগুলো ৮০ থেকে ৮৫ হাজার টাকার মধ্যেই করতে হচ্ছে।

চাঁদপুর জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে মণ্ডপভিত্তিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা কাজও শুরু করেছেন। করোনার প্রাদুর্ভাবে গত বছর পূজাটি একরকম অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়েই পালন করেছি। করোনা সংক্রমণ এখনো রয়ে গেছে। তাই সরকারি নির্দেশনা মাথায় রেখেই পুরো জেলায় পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মিলন মাহমুদ বলেন, দুর্গাপূজা সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আশা করছি সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবেই পূজা সম্পন্ন হবে। তবে সব ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত পুলিশ প্রতিটি কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করবে।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন