কোরআন-হাদিসে বর্ণিত ক্ষমা লাভের ৪ উপায়

কোরআন-হাদিসে বর্ণিত ক্ষমা লাভের ৪ উপায়

মানুষ গুনাহ করে, ভুলত্রুটি করে। গুনাহ করা মানুষের গুণ, আর ক্ষমা করা আল্লাহর গুণ। অবশ্য তাই বলে সব সময় গুনাহ করা হবে— ব্যাপারটা তেমন নয়। বরং গুনাহ আর না করার নিয়তেই ক্ষমা প্রার্থনা করতে হয়।

আল্লাহর কাছে একনিষ্ঠ চিত্তে ক্ষমা প্রার্থনা করলে তিনি ক্ষমা করে দেন। আর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা প্রত্যেক মানুষেরই অপরিহার্য কর্তব্য। আল্লাহর ক্ষমা লাভ করার অনেক উপায় বর্ণিত হয়েছে। তন্মধ্যে কয়েকটি উপায় এখানে উল্লেখ করা হলো—

এক. ঈমান ও নেক কাজ

যারা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে ও নেক আমল করবে, আল্লাহ তাদের ক্ষমার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, ‘যারা ঈমান আনে ও সত্কর্ম করে, আল্লাহ তাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ক্ষমা ও মহাপুরস্কারের।’ (সুরা ফাতহ, আয়াত : ২৯; সুরা মায়েদা, আয়াত : ৯)

অন্যত্র তিনি বলেন, ‘আর যারা ঈমান আনে ও সত্কর্মসমূহ সম্পাদন করে, তাদের জন্য আছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।’ (সুরা ফাতির, আয়াত : ৭)

দুই. আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা

আল্লাহর ক্ষমা লাভের জন্য তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। আল্লাহ বলেন, ‘আর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৯)

তিনি আরও বলেন, ‘যে কেউ দুষ্কর্ম করে অথবা স্বীয় জীবনের প্রতি অবিচার করে, অতঃপর আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী হয়, সে আল্লাহকে ক্ষমাশীল ও দয়ালু পাবে।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ১১০)

হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ বলেন, হে আদম সন্তান! যত দিন তুমি আমাকে ডাকবে এবং আমার কাছে ক্ষমার আশা রাখবে, আমি তোমাকে ক্ষমা করব, তোমার অবস্থা যা-ই হোক না কেন। আমি কারো পরোয়া করি না। হে আদম সন্তান! তোমার গুনাহ যদি আকাশ পর্যন্তও পৌঁছায় অতঃপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। আমি ক্ষমা করার ব্যাপারে কারো পরোয়া করি না। হে আদম সন্তান! তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ গুনাহ নিয়ে আমার দরবারে উপস্থিত হও এবং আমার সঙ্গে কাউকে শরিক না করে আমার সামনে আসো, আমি পৃথিবী পরিমাণ ক্ষমা নিয়ে তোমার কাছে উপস্থিত হব। (তিরমিজি, হাদিস, ৩৫৪০)

তিন. তাওবা করা ও ফিরে আসা

আল্লাহর ক্ষমা লাভের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে পাপ করার পরই তার কাছে অনুতপ্ত হয়ে তাওবা করা। আল্লাহ বলেন, ‘তিনিই তাঁর বান্দাদের তাওবা কবুল করেন ও পাপ মোচন করেন।’ (সুরা শুরা, আয়াত : ২৫)

তিনি আরো বলেন, ‘এর পরও কি তারা আল্লাহর দিকে ফিরে আসবে না (অর্থাৎ তাওবা করবে না) ও তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে না? অথচ আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত : ৭৪)

চার. আল্লাহভীতি অর্জন করা

আল্লাহর নির্দেশিত বিষয় প্রতিপালন ও নিষিদ্ধ বিষয় পরিহার করার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন করা, যা ক্ষমা লাভের অন্যতম উপায়। আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদাররা! যদি তোমরা আল্লাহভীরু হও, তাহলে তিনি তোমাদের জন্য সত্য-মিথ্যা পার্থক্য করার পথ বের করে দেবেন এবং এর ফলে তোমাদের পাপ মোচন করবেন ও তোমাদের ক্ষমা করে দেবেন। বস্তুত আল্লাহ হলেন মহা অনুগ্রহশীল।’ (সুরা আনফাল, আয়াত : ২৯) অন্যত্র তিনি বলেন, ‘যারা দৃষ্টির অগোচরে তাদের প্রতিপালককে ভয় করে, তাদের জন্য আছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।’ (সুরা মুলক, আয়াত : ১২)

 

আপনি আরও পড়তে পারেন