বেইজিং অলিম্পিক ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের দেখানো পথে ব্রিটেন-কানাডা

বেইজিং অলিম্পিক ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের দেখানো পথে ব্রিটেন-কানাডা

২০২২ সালে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিতব্য শীতকালীন অলিম্পিক যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিকভাবে বয়কটের ঘোষণা দেওয়ার পর একই পথে হেঁটেছে ব্রিটেন এবং কানাডাও। চীনের মানবাধিকার ইস্যুতে গত সোমবার বেইজিংয়ের এই ইভেন্টটি কূটনৈতিকভাবে বয়কটের ঘোষণা দেয় ওয়াশিংটন। এরপর মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়া এবং বুধবার ব্রিটেন ও কানাডা একই পদক্ষেপ নিলো।

এদিকে পশ্চিমা এই দেশগুলোর এই পদক্ষেপকে ‘রাজনৈতিক প্রহসন’ এবং কালিমা লেপনের কর্মকাণ্ড বলে আখ্যায়িত করেছে বেইজিং।

গত সোমবার হোয়াইট হাউস জানায়, ২০২২ সালে চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিতব্য শীতকালীন অলিম্পিকে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রতিনিধি দল পাঠানো হবে না। চীনের মানবাধিকার রেকর্ড নিয়ে উদ্বেগের কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অবশ্য কূটনৈতিকভাবে বেইজিং অলিম্পিক বয়কটের ঘোষণা দেওয়া হলেও হোয়াইট হাউস বলছে, মার্কিন অ্যাথলেটরা ইভেন্টে অংশ নিতে বেইজিংয়ে যেতে পারেন এবং এ বিষয়ে মার্কিন সরকারের পুরোপুরি সহযোগিতা থাকবে।

এর আগে গত নভেম্বর মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছিলেন যে, ২০২২ সালের শীতকালীন বেইজিং অলিম্পিক বয়কটের বিষয়ে তিনি চিন্তাভাবনা করছেন। এরপরই চীন জানিয়েছিল যে, যুক্তরাষ্ট্র বেইজিং অলিম্পিক বয়কটের সিদ্ধান্ত নিলে ‘দৃঢ় পাল্টা ব্যবস্থা’ নেবে চীনা প্রশাসন।

এরপর মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন সাংবাদিক সম্মেলনে জানান, বেইজিংয়ে শীতকালীন অলিম্পিকে অস্ট্রেলিয়া  কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে পাঠাবে না। চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কূটনৈতিক দূরত্ব তৈরি করাই এর কারণ। তবে কর্মকর্তারা অংশ না নিলেও ৪০ জন খেলোয়াড় বেইজিং অলিম্পিকে অংশ নেবেন বলেও জানানো হয়।

বুধবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, চীনে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমা দেশগুলোর যে উদ্বেগ রয়েছে বেইজিংয়ের এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে। আর তাই বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিতব্য শীতকালীন অলিম্পিকে আমরা যদি কোনো কূটনৈতিক প্রতিনিধি দল না পাঠাই, তাহলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।

এদিকে কানাডায় অবস্থিত চীনা দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা ট্রুডো মিথ্যা দাবি করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন।

এছাড়া গত মঙ্গলবার চীন জানিয়েছে, বেইজিং অলিম্পিক বয়কটের সিদ্ধান্তের কারণে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘চড়া মূল্য’ দিতে হবে। একইসঙ্গে দেশটির বিরুদ্ধে ‘দৃঢ় পাল্টা ব্যবস্থা’ নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে চীনা প্রশাসন। তবে যুক্তরাষ্ট্রকে কী ‘চড়া মূল্য’ দিতে হবে বা কোন ধরনের পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সে বিষয়ে কিছু জানায়নি বেইজিং।

উল্লেখ্য, চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিশেষত জিনজিয়াং প্রদেশে লাখ লাখ মুসলিম উইঘুরদের আটক এবং হংকংয়ে গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীদের ওপর দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই সমালোচনা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।

এই পরিস্থিতিতে ওয়াশিংটনের পর অস্ট্রেলিয়া এবং সর্বশেষ ব্রিটেন ও কানাডা বেইজিংয়ের শীতকালীন অলিম্পিক কূটনৈতিকভাবে বয়কটের কথা জানানোর পর দেশগুলোর সঙ্গে চীনের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আগামী ৪ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বেইজিংয়ে শীতকালীন অলিম্পিক গেমস অনুষ্ঠিত হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন