জসিম উদ্দিন ইতি ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে ২৩৬ টি এবং সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২৩৬ টি সহ মোট ৪৭২ টি আসনের বিপরীতে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করেন। ২৫/১১/২০২১ সকাল ১১টা থেকে শুরু হওয়া এই আবেদন চলে ০৮/১২/২০২১ বিকাল ৫ ঘটিকার পর্যন্ত। যাতে অনলাইনের মাধ্যমে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী আবেদন করলেও আসন অনুযায়ী ক্রমান্বয়ে বালক ও বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২৩৬ জন করে চান্স পায়। কিন্তু লটারি সিস্টেমের কারণে গত বারের ন্যায় এবারো বাদ পড়ে যায় শত শত মেধাবী শিক্ষার্থী।
গ্রাম থেকে শহরে এসে বাচ্চাকে কোচিং করানো ও গৃহশিক্ষক থেকে শুরু করে যাবতীয় গাইডলাইন এবং ২৪ ঘন্টা বাচ্চাকে নিজের নজর রেখে পরিশ্রম করা সচেতন মা-বাবাদের লক্ষ্য ছিল আমার বাচ্চা যেন জেলা স্কুলে চান্স পায়। কিন্তু এ লটারি সিস্টেম এর কারণে বাদ পড়ে যায় শত শত মেধাবী শিক্ষার্থী। এই সচেতন মা-বাবাদের একটাই দাবি সারা বাংলাদেশে যেখানে স্বাভাবিকভাবে চলছে, সেখানে শুধু বাচ্চাদের জীবন নিয়ে কেন এত ছিনিবিনি।
যেখানে সারা দেশজুড়ে সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, বিসিএস পরীক্ষা, এইচ এস সি পরীক্ষা, এসএসসি পরীক্ষা, বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে জনসমাগম ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান সমস্ত কিছুই তো চলছে। নিজ সন্তান যেন জেলার একটি ভাল প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করে, ভবিষ্যৎ জীবনটা যেন ভালোভাবে গড়তে পারে সেই লক্ষ্যে অক্লান্ত পরিশ্রম করা মা-বাবাদের দাবি- সবকিছুই চলছে কিন্তু বাচ্চাদের বেলায় এমন কেন, সচেতন মা-বাবাদের দাবি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাচ্চাদের পরীক্ষা নেওয়া যেত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাবা বলেন, আমার সন্তান নয় বছর বয়স হলেও স্কুলে এখনো ক্লাস ৩য় শ্রেণিতে উঠতে পারে নাই। ১ম থেকে ২য় শ্রেণীতে উঠতেই ২ বার অকৃতকার্য। সেই স্টুডেন্ট লটারি সিস্টেমে চান্স পেয়েছে ঠাকুরগাঁও জেলা স্কুলে। অসচেতন এই মা-বাবা এখন থাকতে চায় শহরে। আর এইসব কারনে নষ্ট হচ্ছে জেলা স্কুলের যুগ যুগ ধরে অর্জন করা শুনাম, সেইসাথে নষ্ট হচ্ছে শহরের ভাবমূর্তি। সন্তানের সুশিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য গ্রাম থেকে শহরে আসা সেই সচেতন মানুষটি পরিবার নিয়ে ফিরে যাচ্ছে গ্রামে, অসচেতন মানুষটির বাচ্চা জেলা স্কুলে চান্স পাওয়ায় পরিবারসহ আসছে শহরে। এভাবেই হারিয়ে যাচ্ছে হাজারো মা-বাবার পরিশ্রম ও স্বপ্নগুলো।
লটারি সিস্টেম এর নামে হাজরো মা বাবার সপ্ন ভঙ্গ ও মেধাবীদের বদলে মেধাশূন্যদের জেলা স্কুলে সুযোগ পাওয়ার নামে লটারি নামক এই শিক্ষা অবনতি সিস্টেমের অবসান হোক, এমনটা প্রত্যাশা সকলের।