লবণ পানি ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৬ টি স্লুইজ ফ্লাশিং গেট তালা ও শিকল বন্দী

লবণ পানি ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৬ টি স্লুইজ ফ্লাশিং গেট তালা ও শিকল বন্দী
মোঃ নাজমুল ইসলাম সবুজ শরণখোলা প্রতিনিধিঃ
বছরে মাত্র একবার আমন চাষের পর পতিত হয়ে পড়ে থাকা শরণখোলা উপজেলার শতশত হেক্টর আবাদী জমি চাষের আওতায় আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে । শরণখোলায় যোগদান করার প্রথম সপ্তাহেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসগর আলী এ উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন । এ উদ্যোগের অংশ হিসাবে গত দু’দিনে উপজেলার ভোলা নদী সংলগ্ন ধানসাগর ও রায়েন্দা ইউনিয়নের পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৬ টি স্লুইজ ও ফ্লাশিং গেট তালা ও শিকল বন্দী করে আটকে দিয়েছেন।
উপজেলা কৃষি বিষয়ক কর্মকর্তা কৃষিবিদ ওয়াসিম উদ্দীন জানান, এসব গেট দিয়ে ভোলা নদী সংলগ্ন গ্রামগুলোর ফসলের মাঠে লবন পানি ঢুকতো। তাই এসব গ্রামের চাষীরা ক্রমেই চাষ বিমুখ হয়ে পড়ায় এ উপজেলার শতশত হেক্টর আবাদী জমি বছরের পর বছর অনাবাদী হয়ে পড়ে থাকতো। চাষিদের কৌশলগত সকল সুবিধা ও সরকারি বিভিন্ন প্রনোদনা দিয়ে ক্রমান্নয়ে উন্নত জাতের ধান ও মৌসুম ভিত্তিক রবি শষ্যের চাষ বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে উপজেলা প্রশাসন কাজ করে যাবে বলে উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানাগেছে । এ উদ্যোগের অংশ হিসাবে উপজেলার ভোলা নদী সংলগ্ন ধানসাগর ইউনিয়নের রতিয়া রাজাপুর, খেজুরবাড়িয়া, ছানাকাটা, বান্ধাকাটা বাজার, পল্লী মঙ্গল ও রায়েন্দা ইউনিয়নের উত্তর রাজাপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৬ টি স্লুইজ ও ফ্লাশিং গেট তালা ও শিকল বন্দী করে আটকে দেয়া হয়েছে। এসময় উপজেলা নবাগত নির্বাহী কর্মকর্তা আসগর আলী, ধানসাগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাইনুল ইসলাম টিপু সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। তিনি আরো বলেন, গত বছরে এ উপজেলায় কিছু চাষী নিজেদের উদ্যোগে উচ্চ ফলনশীল ধানের চাষ করে সুফল পেয়েছে । গত বছরে ১২০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছিল। এবার ১ হাজার হেক্টর লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি ।
ধানসাগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাইনুল ইসলাম টিপু বলেন, এসব গেট দিয়ে লবন পানি ঢুকে বার বার ফসল হানির পর চাষীরা তাদের চাষের আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এবারে কিছু চাষী তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উফশী চাষে সুফল পাওয়ায় অন্যান্য চাষীদের আগ্রহ বেড়েছে। তিনি আরো বলেন, উপজেলার নবাগত নির্বাহী কর্মকর্তা ও কৃষি বিভাগ সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । এতে চাষীরা উপকৃত হবে। আগামীতে এ উপজেলায় উফশী জাতের ধান ও মৌসুম ভিত্তিক রবি শষ্যের চাষ কয়েকগুন বৃদ্ধি পাবে।
শরণখোলা উপজেলার নবাগত নির্বাহী কর্মকর্তা আসগর আলী বলেন, এ উপজেলায় যোগদান করেই কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে জানতে পারি লবনাক্ততা বৃদ্ধির কারনে এখানের চাষীরা মাত্র এক ফসল চাষ করে সারা বছর তাদের চাষের জমি পতিত ফেলে রাখেন । লবন পানি বন্ধ করতে পারলে চাষীরা তাদের জমিতে উফশী ও রবিশষ্য চাষ করতে পারবে । এ কারনে লবন পানি রোধ করতে ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৬ টি স্লুইজ ও ফ্লাশিং গেট তালা বন্দী করে দেয়া হয়েছে । পর্যায়ক্রমে ভোলা নদী সংলগ্ন অন্য গেটগুলো বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে । পতিত অনাবাদী জমি চাষের আওতায় আনতে চাষীদের সম্ভাব্য সব ধরণের সহায়তা দেয়া হবে বলে জানান তিনি ।

আপনি আরও পড়তে পারেন