রূপগঞ্জে তীব্র গ্যাস সংকট, ভোগান্তিতে গ্রাহকরা, কলকারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম

রূপগঞ্জে তীব্র গ্যাস সংকট, ভোগান্তিতে গ্রাহকরা, কলকারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম

নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জ ঃ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার যাত্রামুড়া এলাকায় অবস্থিত তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সোনারগাঁও শাখার আওতাধীন এলাকায় গ্যাসের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। মাঝে মাঝে অল্প গ্যাস সরবরাহ চালু হলেও তা রান্না করার মতো নয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার গ্রাহক। বাধ্য হয়ে গ্রাহকরা মাটির চুলায় রান্না করছেন। আবার অনেকে খাবার হোটেলগুলো থেকে খাবার সংগ্রহ করছেন। এতে করে খাবার হোটেলগুলোতে ভিড় দেখা যাচ্ছে। এছাড়া এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে শিল্প প্রতিষ্ঠানেও।
গ্রাহকদের অভিযোগ, গত দেড় সপ্তাহ ধরে গ্যাস সংকটে ভুগছেন তারা। রাতে অল্প পরিমাণে গ্যাস সরবরাহ থাকলেও দিনের বেলায় একেবারেই থাকে না। অথচ প্রতিমাসেই বিল গুনতে হচ্ছে। বকেয়া পড়লে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিচ্ছে তিতাস কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে রূপগঞ্জ উপজেলার তিতাস গ্যাসের প্রায় ৭ হাজার বৈধ আবাসিক গ্যাস সংযোগ রয়েছে। গত দেড়সপ্তাহ ধরে রূপসী, বরপা, তারাব, ভুলতা, গোলাকান্দাইল, কাঞ্চন, শান্তিনগর, কাজীপাড়া, দক্ষিণ রূপসী, মৈকুলী, মুড়াপাড়া, আমলাবোসহ উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া আড়াইহাজার উপজেলার বিনাইচর, ছোট বিনাইচর, সদর, শিবপুর, কালিবাড়ি, দুপ্তারা, সত্যবান্দিসহ অন্যান্য এলাকাও গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে।
গ্রাহকরা জানান, এখানে প্রায় ৫ হাজার বৈধ গ্রাহক রয়েছে। অধিকাংশ এলাকায় কখনও গ্যাসের চুলায় আগুন জ্বলছে, কখনো জ্বলছে না। আবার কখনো জ্বলছে নিভু নিভু করে। এতে গৃহিণীদের চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে। রূপগঞ্জ উপজেলার অধিকাংশ এলাকায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গ্যাসের চাপ নেই বললেই চলে। ভোর হতে না হতেই তিতাস গ্যাসের লুকোচুরি শুরু হয়ে যায়। সারাদিনে গ্যাস থাকে না বললেই চলে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সোনারগাঁও আঞ্চলিক শাখার বিপণন বিভাগ সূত্র জানায়, এ কার্যালয়ের আওতায় প্রায় ৩৭ হাজার আবাসিক বৈধ গ্রাহক রয়েছে। এছাড়া শিল্প ও বাণিজ্যিক সংযোগ রয়েছে ৭৫০টি। এর মধ্যে রূপগঞ্জে গ্রাহক রয়েছে প্রায় ৭ হাজার ও আড়াইহাজারে রয়েছে প্রায় ৫ হাজার সংযোগ।

তিতাস সূত্রে আরও জানা যায়, তিতাস গ্যাসের টোটাল নেটওয়ার্কে চাহিদা অনুযায়ী সাপ্লাই কম হচ্ছে। এছাড়া বেশ কিছুদিন ধরে কাতার থেকে জাহাজে করে লিকুয়িট এলএমজি এনে চট্রগ্রামে তা রিফিয়ারিং করে কনভার্টের মাধ্যমে (জাতীয় গ্রীড) ৩২ ইঞ্চি পাইপ লাইনে ঢুকানো হচ্ছে। যার ফলে প্রেসার হাফডাউন হচ্ছে। এছাড়া এমনিতে শীতের দিনে পাইপ লাইনে গ্যাস জমে যায়। গ্যাস সরবরাহে ধীরগতি থাকে। গ্যাস সংকটের এটাও আরেকটা কারণ। তবে আশা করা যাচ্ছে, আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে গ্যাস সংকটের সমাধান হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সোনারগাঁও আঞ্চলিক শাখার বিপণন বিভাগের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মেজবাউর রহমান বলেন, তিতাস গ্যাসের সাপ্লাই কম, এ কারণে গ্যাসের প্রেসার কমে গেছে। তবে এ সমস্যা শীঘ্রই দূর হয়ে যাবে।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন