সরকার সব সময় ভুল পথে হাটে- সুনামগঞ্জে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধূরী

সরকার সব সময় ভুল পথে হাটে- সুনামগঞ্জে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধূরী
হুমায়ূন কবীর ফরীদি, জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) স্টাফ রিপোর্টারঃ
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন,  সরকার সব সময় ভুল পথে হাটে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর ঘটনা এতো দূর পর্যন্ত গড়াতো না। যদি শিক্ষা মন্ত্রী সঠিক সময়ে ভূমিকা পালন করতেন। আন্দোলন শুরু হওয়ার সাথে সাথেই শিক্ষা মন্ত্রীকে শাবিপ্রবির ক্যাম্পাসে আসা উচিত ছিল। সরকার ঐ সময় অন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের  যারা সহায়তা করেছেন তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।এই কাজটি আদো ঠিক হয়নি।  আমার টাকা আমি সাহায্য করতেই পারি। যার ফলশ্রুতিতে আমাকে কি এখন ধরে নিয়ে যাবে।
২৭ শে জানুয়ারী রোজ বৃহস্পতিবার  দুপুর ১২ টা ৩০ মিনিটের সময় সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলা বাজার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা ক্যাম্প ও অপারেশন উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এ সব কথা বলেন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাষ্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি আরও বলেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি  বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশ ডাকা ঠিক হয়নি।  এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকরা ভূমিকা পালন করতে পারতেন। কিন্তু প্রথমে কেউ এগিয়ে আসেননি। তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষার্থীদের  সমস্যা কি তা জেনে  সমাধান করা উচিত ছিল। অধ্যাপক ডা. জাফর ইকবাল যে ভূমিকা নিয়েছেন তা অত্যন্ত প্রশংশনীয়।
একজন ভিসির জন্য সরকার অন্ধ হয়ে গিয়েছে। জণগণের চিন্তা করছে না।  মানুষের অনুভূতি বুঝতে চায় না।  এই সকল ব্যপারে সরকার ভুল করাতে ঝামেলার সৃষ্টি হয়।
র‌্যাব প্রসঙ্গে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‌র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র‌্যাব) তৈরি করেছিল বিএনপি। এখন এই বাহিনী  বিতর্কিত কাজ করেছে।  ইবায়া দিয়ে ধরে নিয়ে যায়। ইয়াবা চিকিৎসা কাজে ব্যবহৃত হয়। ডাক্তার প্রেসক্রিপশন দিলে ইয়াবার দাম পড়ে মাত্র তিন টাকা। ইয়াবা নেশা হিসেবে ব্যবহার করায় আমাদের দেশে সমস্যা হচ্ছে।   ইয়াবার জন্য যদি একজন লোককে ধরে নিয়ে গিয়ে গুম করে ফেলা হয় তা হলে কেমনে হবে। নানামুখী আইন পরিপন্থী কাজ করায় বর্তমানে র‌্যাব খুব বিতর্কিত হয়ে গেছে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা ক্যাম্প ও অপারেশনের ব্যাপারে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন,  একটা ইউনিয়নে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ বসবাস করেন। প্রতিটি ইউনিয়নে কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে কিন্তু ডাক্তার নেই। আমরা গ্রাম পর্যায়ে স্বাস্থ্য সেবা দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করছি। কিন্তু করোনার অজুহাতে অনেকই আসেননি।  অথচ আজ এই জেলার একটি উপজেলায় নির্বাচন হচ্ছে।  স্বাস্থ্য সেবার ব্যাপারে সবার সহযোগিতা করা উচিত।  আমরা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে মানুষকে নাম মাত্র মূল্যে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে সারা বাংলাদেশ কাজ করছি।
এ সময় তাঁর সাথে উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, পাগলা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিচালক আব্দুল আউয়াল, জগন্নাথপুর উপজেলার সমাজসেবক হাজী সোয়েল আহমেদ খান টুনু।
চিকিৎসা টিমের নেতৃত্ব দেন গ্রামীন স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. একে এম হালিমুর রেজা মিলন। পাগলা বাজার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালের ব্যবস্থাপক নজরুল ইসলাম,
গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজের বিশেজ্ঞ চিকিৎসকগনের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, শিশু বিভাগ এর অধ্যাপক ডাঃ মোঃ মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ, নিউরো সার্জারী বিভাগ এর ডাঃ এইচ এম শাহারিয়ার সাবেদ, সিনিয়র কনসালটেন্ট শিশু সার্জারীর ডাঃ এ কে মোস্তফা,  সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান অর্থোপেডিক ডাঃ মোঃ আব্দুস সাত্তার চৌধুরী, চক্ষু বিভাগ এর বিভাগীয় প্রধান ডাঃ মোঃ ইকবাল হোসেন,  গাইনী ও অবস সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, গাইনী ও অবস ডাঃ এরশাদ জাহান নাসরিন ।মেডিসিন বিভাগ  ডাঃ মিঠুন রাজবংশী ।
গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজের চক্ষু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ গৌড় গোপাল সাহা, সহকারী রেজিস্ট্রার
মেডিসিন ডাঃ মিলন খান, সহকারী রেজিস্ট্রার গাইনী নিপা বাড়ই, সহকারী
রেজিস্ট্রার আল্টা ডাঃ বিভা, মেডিকেল অফিসার সার্জারী ডাঃ শহিদুল ইসলাম,
মেডিকেল অফিসার শিশু সাইম ভূইয়া, মেডিকেল অফিসার জেনারেল ফিজিশিয়ান দীপংকর চৌধুরী, জুনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা: মিম, ডাঃ সজিব, ডাঃ
প্রিয়াংকা, ডাঃ মনিরা , ডাঃ ‌অরিন, ল্যাব টেকনোলজিস্ট লিটন চন্দ্র সরকার, স্বাস্থ্যকর্মী মাজেদা, মবিনা ও ফারহানা তারিন সহ ২১ সদস্য বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ স্বাস্থ্য সেবা টিম।
সাংবাদিকদের  গণস্বাস্থ্যের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু বলেন, গণস্বাস্থ্য অসহায় ও গরীব মানুষের উপকার করছে ও বিনা পয়সায় চিকিৎসা স্বাস্থ্য সেবা স্বাধীনতার পর  থেকে দিয়ে আসছে।  আগামীতে এ ধরনের সেবা অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরো বলেন, এ টিমের সাথে আগামীকাল আরো ৭ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যোগদান করবেন।
আজ থেকে ২৭ সদস্যের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা টিম পাগলা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালে রোগীদের পরামর্শ দিবেন এবং অপারেশন করবেন।
উল্লেখ্য, গত ২৫ জানুয়ারী জগন্নাথপুর উপজেলার সফাত উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয় সকাল ৯ টা হতে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত ৫শত রোগী দেখেন এবং ২৬ জানুয়ারী  শান্তিগঞ্জ উপজেলার নোয়াখালী সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় ৬ শত রোগী দেখেন চিকিৎসকরা।
প্রসঙ্গত, ২৫ জানুয়ারী হতে ৩১ জানুয়ারী পর্যন্ত সুনামগঞ্জ জেলায় গণস্বাস্থ্য
মেডিকেল কলেজ অধ্যাপক  ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগন বিভিন্ন স্থানে পরামর্শ ও
অপারেশন করবেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন