সৌম্য-ফ্লেচারের দাপুটে ব্যাটিংয়ে জয়ে ফিরল খুলনা

সৌম্য-ফ্লেচারের দাপুটে ব্যাটিংয়ে জয়ে ফিরল খুলনা

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বাংলাদেশের প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) নিজেদের শুরুর দুই ম্যাচ খেলতে পারেননি সৌম্য সরকার। চট্টগ্রাম পর্বে ৩ ম্যাচ খেলে রানের দেখা পাননি। সাকুল্য করেন ১৪ রান করেন তিনি। আসন্ন আফগানিস্তান সিরিজের আগে সৌম্যর রান খরা ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। চটগ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরে রানের দেখা পেয়েছেন এ বাঁহাতি। করেছেন ৪৩ রান। সঙ্গে আন্দ্রে ফ্লেচারের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে সিলেট সানরাইজার্সকে ৯ উইকেটে হারিয়েছে খুলনা।

নিজেদের খেলা শেষ দুই ম্যাচ ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে হেরে পয়েন্ট টেবিলে পিছিয়ে পড়েছিল খুলনা। ঢাকা পর্বে ফিরে আজ (বৃহস্পতিবার) দিনের প্রথম ম্যাচে সিলেটের মুখোমুখি হয় তারা। এ ম্যাচে আগে ব্যাট করে মোহাম্মদ মিঠুনের ফিফটিতে স্কোর বোর্ডে ১৪২ রান তোলে সিলেট।

লক্ষ্য টপকাতে একেবারে বেগ পেতে হয়নি খুলনাকে। অর্ধশতক করা ফ্লেচারের সঙ্গে সৌম্যর ৪৩ রানের ইনিংসের কল্যাণে ৯ উইকেট এবং ৩৪ বল হাতে রেখে ৬ ম্যাচে নিজেদের তৃতীয় জয় তুলে নিয়েছে খুলনা টাইগার্স। অন্যদিকে পাঁচ ম্যাচে এটি সিলেটের চতুর্থ হার, জয় মাত্র ১ ম্যাচে।

শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিলেটের দেওয়া ১৪৩ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ওপেনিং জুটিতে দারুণ শুরু পায় খুলনা। কোনো উইকেট না হারিয়ে পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে তোলে ৬৫ রান। সিলেটের বোলারদের নখদন্তহীন বোলিংয়ের ফায়দা নিতে ভুল করেননি সৌম্য। রান খরায় ভুগতে থাকা এ বাঁহাতি আলগা বল পেয়ে সুযোগটা কাজে লাগিয়ে ছুটছিলেন ফিফটির দিকে। তবে বাঁহাতি নাজমুল ইসলাম অপুর বলে আউট হন ব্যক্তিগত ৪৩ রানে। যেখানে ৩১ বলে ৬টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন তিনি।

সৌম্য আউট হলে ফ্লেচারের সঙ্গে ভাঙে ৯৯ রানের পার্টনারশিপ। সৌম্যর আউট হওয়ার আগেই ফিফটির স্বাদ পান ফ্লেচার। ৩৪ বলে অর্ধশতক ছুঁয়েছেন তিনি। সৌম্য আউট হওয়ার পর ফ্লেচার আর থিসারা পেরেরা ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন। দলের রান রেট বাড়িয়ে নিতে আগ্রাসী ব্যাটিং করেন দুজন। পরে আর কোন উইকেট না হারিয়ে জয়ের বন্দরে নৌকা ভেড়ায় খুলনা। ৯ উইকেটে পাওয়া জয়ে হাতে থাকে ৩৪ বল। যেখানে ফ্লেচার সমান ৫টি করে চার-ছয়ে ৪৭ বলে ৭১ রানে অপরাজিত থাকেন। পেরেরা করেন ৯ বলে ২২ রান।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামে সিলেট সানরাইজার্স। দলীয় ৩৪ রানের মাথায় দুই বিদেশি রিক্রুটসহ ৩ উইকেট হারিয়ে বসে তারা। ওপেনার এনামুল হক বিজয় আজ একেবারেই সুবিধা করতে পারেননি। কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে আউট হন ১০ বলে ৪ রান করে। চট্টগ্রাম পর্বে সেঞ্চুরি তোলার পর রান খরায় ভুগছেন সিমন্স। আগের ম্যাচে ৯ রান করার পর আজ ঢাকায় ফিরে আউট হন ৬ রানে। যেখানে ১৯ বল খরচ করেন তিনি। ফেরেন খালেদ আহমেদের প্রথম শিকার হয়ে।

এবারের বিপিএলে সিলেট জার্সিতে মাঠে নামা কলিন ইনগ্রাম নিজেকে মেলে ধরতে পারছেন না। খুলনার বিপক্ষে এ ম্যাচে তার সংগ্রহ মোটে ২ রান। নাবিল সামাদের বাঁহাতি স্পিনে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে ফেরেন। দলীয় ৯ ওভারের মধ্যে এই ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে সিলেট। তবে সেই চাপ থেকে দলকে উদ্ধার করেন মোহাম্মদ মিঠুন ও অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। চতুর্থ উইকেটে দুজনে গড়েন ৬৮ রানের জুটি।

দারুণ খেলতে থাকা জুটি ভাঙে মোসাদ্দেক বিদায় নিলে। ৩০ বলের মোকাবেলায় তিনি করেন ৩৪ রান, হাঁকান ৩টি চার ও ২টি ছক্কা। সতীর্থকে হারালেও প্রাণবন্ত ব্যাটিং করতে থাকেন জাতীয় দলে জায়গা হারানো মিঠুন। ৪২ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করার পর আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করেন। শেষ ওভারে সাজঘরে ফেরার আগে ৫১ বলে ৭২ রান করেন মিঠুন। হাঁকান ৬টি চার ও ৪টি ছক্কা। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে সিলেটের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৪২ রান। খুলনার পক্ষে ২ উইকেট শিকার করেন খালেদ আহমেদ।

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন