ঝিনাইদহে ফুল চাষী ও ব্যবসায়ীদের ১৫কোটি টাকার ফুল বিক্রির টার্গেট

ঝিনাইদহে ফুল চাষী ও ব্যবসায়ীদের ১৫কোটি টাকার ফুল বিক্রির টার্গেট

শেখ শফিউল আলম লুলু,ঝিনাইদহ:

করোনার লোকসান কাটিয়ে ফুলের রঙে স্বপ্ন রাঙ্গাতে ব্যস্ত সময় পার করছে ঝিনাইদহের ফুলচাষীরা। প্রতিবছর ফেব্রæয়ারি মার্চ মাস এলেই এ জেলার ফুলচাষি ও ফুলকর্মীদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। বিভিন্ন জাতীয় উৎসবে এ এলাকায় উৎপাদিত ফুল ব্যবহৃত হয়। চলতি মাসেই রয়েছে তরুণ তরুণীদের প্রাণের উৎসব বসন্ত বরণ ও বিশ^ ভালোবাসা দিবস। এছাড়া রয়েছে ২১ ফেব্রæয়ারি মাতৃভাষা দিবস। এই সব উৎসবের কয়েকদিন আগে থেকেই ফুলের বাজার দাম বেড়ে গেছে। বিগত ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ দামে ফুল বিক্রি হচ্ছে, ফলে খুশি কৃষকরা। এসব দিবসের বাড়তি চাহিদা মিটাতে ব্যস্ত সময় পার করছে জেলার ফুলচাষীরা। ঝিনাইদহ থেকে ফ্রেব্রæয়ারি ও মার্চ মাসে ১৫ কোটী টাকার উপরে ফুল বিক্রয় হবে বলে জানিয়েছেন ঝিনাইদহ ফুল চাষী ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ জমির উদ্দীন।
ঝিনাইদহে প্রায় ১হাজার দুই শত ফুল চাষী রয়েছেন। ফুল তোলা, প্যাকেজিং, বিক্রেতা ও বিপননের সঙ্গে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ জড়িত। এবং ব্যবসায়ী রয়েছেন দেড় শতাধিক। এদিকে ফুল ক্ষেত থেকে সংগ্রহ ও মালা গাথা থেকে শুরু করে বিক্রি করা পর্যন্ত পুরুষের পাশাপাশি মেয়েদেরও কর্মসংস্থান হচ্ছে। জেলার শত শত মেয়েরা সারা বছরই ফুল তোলার কাজ করে।কৃষি বিভাগের তথ্যে মতে, চলতি মৌসুমে ঝিনাইদহ জেলায় ফুলের আবাদ রয়েছে ২০০ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে জেলা সদরের গান্না, কোটচাঁদপুর উপজেলার ইকড়া, কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা, মহেশপুর উপজেলার নেপা, শ্যামকুড় এলাকায় সব থেকে বেশী ফুলের আবাদ হয়ে থাকে। জেলায় আবাদকৃত মোট ফুলের মধ্যে গাদা ফুলই শতকরা ৭০ ভাগ। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় মাঠের পর মাঠে চাষ করা হয়েছে গোলাপ, রজনীগন্ধা, গøাডিওলাস, চন্দ্র মল্লিকা, জারবেরাসহ নানা জাতের দৃষ্টিনন্দন ফুল।
কোটচাঁদপুর উপজেলার ইকড়া গ্রামের গাদা ফুল চাষী হাফিজ জানান, এবার ফুলের দাম অনেক বেশী। এক বিঘা জমি থেকে এরমধ্যে গেল এক মাসে ৭০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করেছি। বসন্ত, ভালোবাসা দিবস, একুশে ফেব্রæয়ারী হয়তো আরো বেশী দাম পাবো।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক ও ঝিনাইদহ ফুল চাষী ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ জমির উদ্দীন বলেন, ঝিনাইদহ থেকে ফ্রেব্রæয়ারি ও মার্চ মাসে ১৫ কোটী টাকার উপরে ফুল বিক্রয় হবে। এর মধ্যে ৭ কোটী টাকার গাদা ফুল বিক্রি হবে। উৎসবকে ঘিরে ঢাকা, চট্রগ্রাম, কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা অগ্রিম অর্ডার দিচ্ছে। তাদের চাহিদা এতো বেশী যে আমরা সরবরাহ করতে হিমশিম খাচ্ছি। করোনার এই বিধি নিষেধ না থাকলে হয়তো ফুলের চাহিদা আরো বাড়তো। এখন ফুলের দাম অনেক বেশী। আমাদের লাভও অনেক বেশী হচ্ছে।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আজগর আলী জানান,এই মুহূর্তে ফুলের মান ভালো রাখতে কৃষকদেরকে নন-ইউরিয়া স্যার ও জৈব সার ব্যবহারে পরামর্শ দিচ্ছি। জৈব সারে ফুলের মান ভালো থাকে, স্থায়ীত্ব বাড়ে। এতে করে ফুল সহজে পচে না। এছাড়া কৃষক ও ব্যবসায়য়ীদের ফুলের মান ভালো রেখে পরিবহনের সুবিধার্থে কৃষি বিপনন অধিপ্তরের কাছে কয়েকটি কুলিং ভ্যান চেয়েছি। হয়তো অতিসত্তর তা পেয়ে যাবো। তখন আর পরিবহনে সময় বেশী লাগলেও ফুল পচবে না। এতে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে যোগ করেন এই জেলার শীর্ষ কৃষি কর্মকর্তা।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন