নতুন রূপে রূপগঞ্জ বিএনপি

নতুন রূপে রূপগঞ্জ বিএনপি
নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জ ঃ

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির এক সময়ের ঘাঁটি ছিলো রূপগঞ্জ। বিএনপির আমলের সাবেক প্রভাবশালী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য প্রয়াত আব্দুল মতিন চৌধুরী এই রূপগঞ্জ বিএনপিকে ধরে রেখেছিলন। তার আমলে রূপগঞ্জ বিএনপি একটি শক্তিশালী ঘাঁটি ছিলেন। বিএনপির নেতাকর্মীদের এক ছাতার নিচে ধরেও রেখেছিলেন তিনি। কিন্তু তার মৃত্যুর পর রূপগঞ্জ বিএনপি অনেকটা ছন্নছাড়া হয়ে গিয়েছিল। আর দীর্ঘ এক যুগ ধরে বিএনপি ক্ষমতার বাইরে। হামলা- মামলা ও নির্যাতনের মধ্যে দিয়েই টিকে আছেন রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপি।

২০০৯ সালে কাজী মনিরুজ্জামান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এড. মাহফুজুর রহমান হূমায়ুন নেতৃত্বে রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির গঠন করা হয়েছিলো। আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যে দিয়েই এক যুগ পার করেন সেই কমিটি। অবশেষে দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন ও সদস্য সচিব মামুন মাহমুদ স্বাক্ষরক্রমে এড. মাহফুজুর রহমান হুমায়ুনকে আহবায়ক ও বাছির উদ্দিন বাচ্চুকে সদস্য সচিব কররে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট রূপগঞ্জ থানা বিএনপির নতুন আহকবায়ক কমিটি ঘোষণা করেন।

নবীণ- প্রবীণ সমন্বয়ে নতুন রূপগঞ্জ থানা বিএনপির আহবায়ক কমিটি। আগামী দিনের আন্দোলন সংগ্রামে আবারও  নতুন করে জেগে উঠবে বলে মনে করছেন তৃনমূল বিএনপির নেতাকর্মীরা। সূত্রে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আওতাধীন থানা ও পৌর বিএনপির নতুন কমিটি হয় না দীর্ঘ প্রায় এক যুগ ধরে। অন্যান্য থানার মতো রূপগঞ্জ থানাও পুরনো কমিটি দিয়ে চলছিলো বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম। কিন্তু রূপগঞ্জ থানা বিএনপি সদ্য সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির রাজনীতির মাঠে নাই।

২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পর থেকেই কাজী মনিরকে বিএনপির কোনো রাজনৈতিক মিটিং, মিছিল ও আন্দোলন সংগ্রামে দেখা যায়নি। রাজনীতি থেকে তিনিও যেনো নিজেকে একটা গুটিয়ে নিয়েছেন। রূপগগঞ্জ বিএনপির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে বিএনপির প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামেই মাঠে দেখা গিয়েছিলো বর্তমান আহবায়ক মাহফুজুর রহমান হুমায়ুনকে।

আরও জানাগেছে, রূপগঞ্জ থানা বিএনপির সদ্য সাবেক কমিটির বেশীরভাগ নেতারাই ছিলেন নিষ্ক্রিয়। কেউ কেউ রাজনীতি থেকে বিদায়ও নিয়েছেন। আবার কেউ কেউ অন্য দলে যোগও দিয়েছেন। তবে দীর্ঘ এক যুগ ধরে যারা বিএনপির সহযোগী সংগঠন যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবকদলের রাজনীতির সাথে জড়িত তারা জোড় দেয় রূপগঞ্জ মথানা বিএনপির মূল কমিটি পুনর্গঠনের জন্য। কারণ তারা সবাই এখন যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবকদলের রাজনীতির সাবেক নেতা। তাদের নতুন কোনো পরিচয় নাই।

রূপগঞ্জ থানা নতুন আহবায়ক কমিটির গঠনের মধ্যদিয়ে তারা নতুন করে দলের পরিচয় পেয়েছেন। নতুন কমিটিতে পদ-পদবী পেয়ে উৎসাহিত দীর্ঘদিন ধরে অপেক্ষায় থাকা রূপগঞ্জ থানা বিএনপির এসকল নেতাকর্মীরা। নতুন নেতৃত্বে আবার জেগে উঠবে রূপগঞ্জ থানা বিএনপি এমনটাই আশা করছেন নেতাকর্মীরা।

এ প্রসঙ্গে রূপগঞ্জ থানা বিএনপির আহ্বায়ক এড. মাহফুজুর রহমান হুমায়ুন বলেন, ২০০৯ সালের পর প্রায় এক যুগ পর রূপগঞ্জ থানা বিএনপির ৩১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন আহবায়ক কমিটি হয়েছে। নবীণ- প্রবীণ সমন্বয়ে নতুন রূপগঞ্জ থানা বিএনপির আহবায়ক কমিটি। নতুন এই কমিটি পদ- পদবী পেয়ে উৎসাহিত থানা বিএনপির নেতাকর্মীরা।

আগামীতে বিএনপির চেয়ারপারসনের মুক্তি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনে রাজপথে আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখবে আহবায়ক কমিটি। আমরা যারা এই কমিটিতে আছি সবাই ঐক্যবদ্ধ। আমরা ইতিমধ্যে পরিচিতি সভাও করেছি। আমাদের মধ্যে কোনো গ্রুপিং বা বিভেদ নেই। আমরা আহবায়ক কমিটির সকলে মিলেই ইউনিয়ন কমিটি দিবো। কোনো নেতার বলয়ের লোক নয়। যারা ত্যাগী যোগ্য তারাই কমিটিতে স্থান পাবে। সে যেই বলয়ের লোকই হোক না কোনো। তিনি আরও বলেন, জেলা বিএনপি বেধে দেওয়া ৪৫ দিনের মধ্যেই সম্মেলন করে কমিটি গঠন হবে।

আগামী মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই রূপগঞ্জ থানা বিএনপির সম্মেলন করবো আশাবাদী। আর আমরা ইউনিয়ন কমিটি গঠনের জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের জন্য তথ্য ফরম বিতরণ করেছি। যারা ইউনিয়নের প্রাথী হতে ইচ্ছুক তারা এই ফরম পূরণ করে আমাদের কাছে জমা তিবে আমরা যাচাই- বাছাই করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক কমিটি দিবো।

কমিটিতে যারা দীর্ঘদিন আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে জেল জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে সেইসব ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের অবশ্যই মূল্যায়ন করা হবে। আর ওয়ার্ড কমিটি গঠন করে সম্মেলনের মাধ্যমে তৃনমূল নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে পূর্ণাঙ্গ ইউনিয়ন গঠন হবে। আর সকল ইউনিয়নের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পর সম্মেলনের মধ্যদিয়েই ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে থানা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন