নদীর ঢেউ এখন শুধুই স্মৃতি

নদীর ঢেউ এখন শুধুই স্মৃতি
মাহফুজ রাজা, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের বুক চিরে বয়ে যাওয়া ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা নদী নাব্য হারিয়ে মরা খালে পরিণত হয়েছে। বালু, পলি আর দখলে ক্রমশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদীর তলদেশ। এক সময়কার প্রবল খরস্রোতা নদীতে নেই পানির প্রবাহ। নদীর বুকে জেগে উঠছে চর। স্থানীয় কৃষকরা সেই চরেই ফলাচ্ছেন সোনার ফসল। নদীর চরে উন্নত জাতের গম, ভুট্রা ও বোরো ধানের আবাদ করছেন নদীর পাড়ের স্থানীয় বাসিন্দারা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, হোসেনপুরের বুকে বয়ে যাওয়া নদীগুলোয় পানি না থাকায় ভূগর্ভ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। ইতোমধ্যে অনেক নদী-নালা সরকারের উদ্যোগে খনন করে এর নাব্যতা ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তবে হোসেনপুর বাজার সংলগ্ন ব্রহ্মপুত্র নদের শাখায় কোন কার্যক্রম হয়নি। তাই দ্রুত সময়ে ব্রহ্মপুত্রের শাখা নদীর নাব্যতা দূরীকরণে খননের জন্য জোড়ালো দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভরাট হওয়ার কারণে এ নদীর অস্তিত্বই এখন বিলীন হওয়ার পথে। ভরাট হয়ে যাওয়া নদীর তলদেশে এখন বোরো ধান, গম, ভুট্টাসহ নানা ধরনের ফসলের চাষাবাদ করছেন কৃষকরা। নদীর বুকে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন নদীরপাড়ের মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, এক সময় এ নদীতে পর্যাপ্ত পানি প্রবাহ ছিল। তা দিয়ে চাষাবাদ করার পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করা হতো। নদীর তলদেশে পলি আর ভরাট করে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে জেগে উঠেছে বিশাল চর।   জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা এ নদী একসময় ছিল প্রবল খরস্রোতা এবং নদী পাড়ের মানুষের কাছে ছিল মূর্তিমান আতঙ্ক। কিন্তু বর্তমানে এ নদী নাব্য হারিয়ে ফেলায় বর্ষাকালে এর ভয়াল রূপ আর চোখে পড়ে না। নদীর ঢেউ এখন শুধুই স্মৃতি।
নাব্য কমে যাওয়ায় ক্রমান্বয়ে মরে যাচ্ছে নদী। নদীটি এখন পরিণত হয়েছে আবাদি জমিতে। চাষ হচ্ছে নানা জাতের কৃষি ফসল। কৃষিপণ্য উৎপাদন করে অনেকেই হচ্ছেন স্বাবলম্বী।
স্থানীয় কৃষক কাশেম জানান, আমাদের জমি নদী ভাঙনে তলিয়ে যায়। নদীতে চর পড়ায় আমরা পৈতৃক সম্পত্তি ফিরে পেয়ে চাষাবাদ করে ভালো আছি।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ ইমরুল কায়েস বলেন, নদীগুলোয় পানি না থাকায় ভূগর্ভ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। নদীতে পানি থাকলে ওই নদীর পানি দিয়ে নানা ধরনের ফসলের জমিতে সেচ দিয়ে ফসল উৎপাদন করা সহজ হতো। কিন্তু নদীতে পানি না থাকায় নদীর বুকেই এখন চাষাবাদ হচ্ছে। সেসব চরে উৎপাদন করছেন বিভিন্ন ফসল।

আপনি আরও পড়তে পারেন