ইচ্ছাকৃতভাবেই চলন্ত গাড়িকে পিষে দিলো রুশ ট্যাংকার

ইচ্ছাকৃতভাবেই চলন্ত গাড়িকে পিষে দিলো রুশ ট্যাংকার

গত সপ্তাহে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে এটিই প্রথম এতো বড় পরিসরের সামরিক অভিযান। যুদ্ধ শুরু হতেই ইউক্রেনে হিড়িক পড়েছে দেশ ছাড়ার। আতঙ্কিত মানুষের শহর ছেড়ে, দেশ ছেড়ে পালানোর অনেক ভিডিও ও ছবি প্রকাশ পেয়েছে।

তবে শনিবার ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে রুশ আগ্রাসনের তীব্রতা ঠিক কতটা, তা ধরা পড়েছে। ভাইরাল ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাস্তায় দ্রুতগতিতে চলা একটি গাড়িকে নির্মমভাবে পিষে দিচ্ছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ট্যাংকার।

এতে গাড়িটি সম্পূর্ণ দুমড়ে-মুচড়ে গেলেও, ভাগ্যের জোরে রক্ষা পান ওই গাড়ির বৃদ্ধ চালক। শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

গত বৃহস্পতিবার ভোরে ইউক্রেনে ঢুকে হামলা শুরু করে রাশিয়ান সৈন্যরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে এটিকে অন্যতম বড় হামলার ঘটনা হিসেবে বলা হচ্ছে। ইউএনএইচসিআর বলছে, ইউক্রেনে এক লাখ ২০ হাজারের বেশি বাসিন্দা ইতোমধ্যে তাদের ঘরবাড়ি ছেড়েছে। পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে ৫০ লাখ পর্যন্ত মানুষ ইউক্রেনে ঘরছাড়া হতে পারে বলে আশঙ্কা সংস্থাটির।

সংবাদমাধ্যম বলছে, রুশ হামলা শুরুর বৃহস্পতিবার থেকেই ইউক্রেনের বিভিন্ন রাস্তায় হাজার হাজার মানুষের ভিড় দেখা যায়। বড় বড় সড়কগুলোতেও গাড়ির লম্বা লাইন পড়ে যায়। সকলেরই লক্ষ্য একটাই- নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়া। রাশিয়ার হামলা থেকে বাঁচতেই দেশের বিভিন্ন দিকের সীমান্ত পার করার চেষ্টা করছেন অনেকেই।

সামরিক অভিযানের পরিণতি যে কতটা ভয়ঙ্কর, তা গত কয়েকদিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধেই টের পেয়েছেন ইউক্রেনের মানুষ। দুই দেশের সেনার মধ্য়ে সংঘর্ষ, বোমা-ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণের একাধিক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এবার এমন এক ভিডিও সামনে এলো যেখানে নিরাপরাধ মানুষও কীভাবে বিপদে পড়ছে তার চিত্র উঠে এসেছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ভাইরাল ওই ভিডিওটি ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের। শহরের পার্লামেন্ট ভবন থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরেই ওই ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটে।ভিডিওতে দেখা যায়, প্রায় সম্পূর্ণ ফাঁকা একটি রাস্তা দিয়েই যাচ্ছিল একটি গাড়ি। একইসময়ে বিপরীত দিক থেকে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর একটি ট্যাংকারও এগোতে শুরু করে। চোখের পলক ফেলতে না ফেলতেই দেখা যায়, ট্যাংকারটি সরাসরি গাড়ির ওপর তুলে দেওয়া হচ্ছে। ভারী লোহার চেন ও চাকার ভারে নিমেষেই দুমড়ে-মুচড়ে যায় গাড়িটি। ট্যাংকারের চাকার সঙ্গেই আটকে গিয়ে উপড়ে যায় গাড়ির ছাদও।

পরে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ওই ট্যাংকারটি কিছুটা দূরে যেতেই ছুটে আসেন স্থানীয়রা। কোনোমতে গাড়ির দরজা ভেঙে ভেতর থেকে বয়স্ক এক চালককে উদ্ধার করা হয়। কিছুটা আঘাত পেলেও, ভাগ্যের জোরে প্রাণে বেঁচে যান ওই ব্যক্তি।

সংবাদমাধ্যম দ্য সান’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ওই ট্যাংকারটি স্ট্রেলা-১০ মডেলের। এই ধরনের ট্যাংকার রাশিয়া ও ইউক্রেন- উভয় দেশের কাছেই রয়েছে। তবে হামলাকারী ওই ট্যাংকারটি রাশিয়ার ছিল বলেই মনে করা হচ্ছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন