দেখা যায় না আগের মত বক পাখি

মাহফুজ রাজা,কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি ;
“মাঠে ঘাটে বকের সারি-
শুভ্র গালিব গাঁয়,,
দেখবি কারা আয়রে তোরা-
আয় ছুটে আয়”
কত চেনা-অচেনা নাম না জানা পাখিদের অভয়ারণ্য
এই দেশ, হাজারো পাখির স্বর্গ রাজ্য আমাদের দেশ। এদের মধ্যে সবার পরিচিত একটি পাখি বক। জলাশয়ের মরা মাছ ও ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ খেয়ে এরা একদিকে যেমন পরিবেশকে সুস্থ রাখছে তেমনি জমির উর্বরতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবেও অবদান রেখে যাচ্ছে।বক নিয়ে বিভিন্ন গীতি কবিদের রয়েছে অসংখ্য রচনা।আকাশের বুকে পড়ন্ত বিকেলে বকের ঝাঁকের ডানামেলে ঘুরাঘুরি দেখলে মনে হয় যেন এ যেন বীর সৈনিকেরা মাতৃভূমিকে পাহাড়া দিচ্ছে।
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের সাহেবের চর গ্রামে হাজীবাড়ীর এক জঙ্গলে বহু বছর থেকে কলোনি স্থাপন করেছে বকেরা।সুনশান এ বাঁশ ঝাড়ের সমষ্টিগত যায়গাটি বকেদের দখলে,স্থানীয়রা এ অভিমত ব্যক্ত করেছেন।একটা সময় যেমন অহরহ চোখে পড়তো বকের কলোনি হোসেনপুরের
সাহেবের চর, চরকাটিহারী, বিশ্বনাথ পুর,চর জামাইল
এহেন চরাঞ্চলগুলিতে এখন উদাসীন অবস্থা।
 বকের বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে,  এরা সবাই জলচর পাখি। গ্রামাঞ্চল বা শহরের বিভিন্ন জলাশয়ের পাড়ে প্রায়ই এদের দেখা যায়। এদের বেশিরভাগ প্রজাতি সাধারণত গ্রীষ্ম থেকে বর্ষাকালে প্রজনন সম্পন্ন করে। বর্ষাকালে বিভিন্ন জলাশয়ের পাড়ে শুরু হয় বকের বাসা তৈরির কাজ।প্রজাতিভেদে এ সময় বকের দেহে নানা ধরনের বৈচিত্র্যতা দেখা যায়। প্রজননকালে বিভিন্ন প্রজাতির বক এক সাথে কলোনীতে বাসা তৈরি করে। নিরাপদ বাসা তৈরির জন্য এরা জলাধারের পাশের উঁচু গাছগুলোকেই বেছে নেয়।কখনো কখনো বাঁশ বাগানের গভীরেও বসতি স্থাপন করতে দেখা যায়,  এক একটি কলোনীতে শত শত বক একসাথে বাসা তৈরি করে। নিবিড় পরিচর্যায় ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে বকের ছানাগুলো।গোস্ত খাবার আশে বিভিন্ন কৌশলগত আচরণে শিকার করে থাকে বক।
এই পাখিরা অসুস্থ মাছ, ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ, উভচর, সরীসৃপ প্রভৃতি প্রাণী খেয়ে বাস্তুতান্ত্রিক ভারসাম্য রক্ষা করে যাচ্ছে। কিন্তু বড় বড় বৃক্ষ ও ঝোপঝাড় কমে যাওয়ার কারণে এদের প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে বকের সংখ্যা কমে দেশের সামগ্রিক পরিবেশ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়বে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতামত,আমাদের দেশের অনিন্দ্য সুন্দর এই বকের প্রজাতিগুলো রক্ষায় আবাসস্থল সংরক্ষণের কোনো বিকল্প নেই।

আপনি আরও পড়তে পারেন