ইউরোপকে গম না দেওয়ার কারণ জানাল রাশিয়া

ইউরোপকে গম না দেওয়ার কারণ জানাল রাশিয়া

ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর বিশেষ অভিযান শুরুর পর থেকেই ইউরোপে রাশিয়া থেকে গমের চালান আসা বন্ধ রয়েছে। ফলে গত তিন মাস ধরে প্রতিদিন ইউরোপের বাজারে হু হু করে বাড়ছে গমের দাম।

ইউরোপের ২৭টি দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতাদের অভিযোগ, ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে ইউরোপের প্রতি বিদ্বেষমূলক নীতির কারণে গম সরবরাহ বন্ধ করেছে রাশিয়া।

তবে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বুধবার মস্কোতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, বিদ্বেষমূলক নীতি নয়, বরং রাশিয়ার ওপর ইইউ আরোপিত নিষেধাজ্ঞার করণেই ইইউতে গম পাঠানো বন্ধ করেছে দেশটি।

সংবাদ সম্মেলনে ল্যাভরভ বলেন, ‘যদিও পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ বলছে যে (রাশিয়ার) খাদ্যশস্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা তারা আরোপ করেনি, কিন্তু ভুলে যাচ্ছে যে নিজেদের বন্দরে রাশিয়ার জাহাজ ঢোকার ব্যাপারে আগেই নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে তারা।’

ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার অর্থনীতিকে চাপে রাখতে গত এপ্রিলে দেশটির বিরুদ্ধে পঞ্চম দফা নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইইউ। এ দফায় দেওয়া বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার মধ্যে এটিরও উল্লেখ রয়েছে যে, ইউরোপের কোনো বন্দরে রাশিয়ার জাহাজ ভিড়তে পারবে না।’

রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তার অর্থ হলো, বর্তমানে ইউরোপের বিভিন্ন বন্দরে কোনো রুশ জাহাজ ভিড়লেই সেটিকে আটক করা হবে, জব্দও করা হতে পারে; এবং যেহেতু তারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, জাহাজ জব্দ করা বর্তমানে হলে তার ইনস্যুরেন্সের অর্থ পাওয়াও অনিশ্চিত।’

‘তাই এ মুহূর্তে এত বড় ঝুঁকি নিয়ে সেখানে গম পাঠানো আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। রাশিয়ার বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা জারির মাধ্যমে ইউরোপ নিজেই রুশ গমের জন্য নিজেদের দুয়ার বন্ধ করে দিয়েছে।’

খাদ্যশস্য, বিশেষ করে গম ও ভুট্টার আন্তর্জাতিক বাজারের ৩০ শতাংশেরও বেশি চালান আসে কৃষ্ণসাগরের তীরবর্তী দুই দেশ রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে। কিন্তু গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকেই ইউরোপে গমের সরবরাহ বন্ধ রেখেছে রাশিয়া।

পাশাপাশি খেরসন, মারিউপোল ও ওডেসা—ইউক্রেনের প্রধান তিনটি সমুদ্রবন্দরের মধ্যে খেরসন ও মারিউপোল বর্তমানে রুশ বাহিনীর দখলে রয়েছে; আর ওডেসা বন্দরের আশপাশের জলসীমায় মাইন পেতে রাখার কারণে সেখানে বন্ধ রয়েছে জাহাজ চলাচল।

এদিকে, গম ও ভোজ্য তেলের সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় ইউরোপসহ গোটা বিশ্বে প্রতিদিনই বাড়ছে খাদ্যপণ্যের দাম। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্য ও খাদ্যশস্যের দাম গত আট বছরের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন