বারহাট্টায় আমন ধানের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাঁসি

বারহাট্টায় আমন ধানের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাঁসি

রিপন কান্তি গুণ, বারহাট্টা (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি;

 

নেত্রকোনার বারহাট্টায় চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফসলের মাঠ জুড়ে এবার সোনালী ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলা জুড়ে ধান ক্ষেত গুলো যেন, সোনালি রঙে সাজতে শুরু করেছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, চারদিক এখন সবুজের সমারোহ। দিগন্ত জোড়া সোনালি ধানের শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। মাঠভরা ফসল দেখে কৃষকের চোখেমুখে ফুটে ওঠেছে খুশির ঝলক। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ধান ক্ষেতে গাছের শীষ ধানে নুইয়ে পড়ছে। কৃষকরা আশা করছে, অল্প কিছুদিনের মধ্যে ধান কাটা  শুরু হবে। অপরদিকে কিছু কিছু নিচু জমির ধানের ফলন একটু দেরি করে শুরু হলেও ধানের ফলন ভালো হয়েছে।

সদর উপজেলার গড়মা গ্রামের কৃষক তপন সরকার  বলেন, ‘এ বছর ৬ বিঘা জমিতে আমন ধান লাগিয়েছিলাম। প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ১৭ মণ ধানের ফলন পাবো বলে আশা করছি।  গত বছরও ৬ বিঘা জমিতে আমনের চাষ করেছিলাম বন্যার কারণে প্রায় ৩ বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়েছিল। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সঠিক পরিচর্যার ফলে ফলন বেশি হয়েছে। এবার জমি থেকে আমন ধানের আশানুরূপ ফলন পাবো বলে আশা করছি।’

উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের কৃষক মিহির আলী জানান, ‘আমাদের ফলন ভালো হলেও ডিজেল, সার, কীটনাশকের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদনে বাড়তি খরচ গুনতে হয়েছে। যদি বাজারে ধানের দাম ভালো পাই, তা হলে লাভের মুখ দেখতে পারব।’

তিনি আরও বলেন, গত বছর বিঘা প্রতি ৩ মণ পর্যন্ত ধান পেলেও এ বছর ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকরা বিঘা প্রতি ৮ থেকে ১০ মণ পর্যন্ত ধান ঘরে তোলার স্বপ্ন দেখছি।

বারহাট্টার বিভিন্ন ইউনিয়নে আমন ধান রোপণের পর থেকে শস্য না কাটা পর্যন্ত কৃষি শ্রমিকদের হাতে কোন কাজ থাকতো না। কিন্তু বর্তমানে কৃষি শ্রমিকেরা ভুট্টা, আলু, গমসহ বিভিন্ন সবজির চাষ করে সংসার চালাচ্ছেন।

কৃষি অফিস সূত্র জানায়, উপজেলায় এবার প্রায় ২৭ হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। এরমধ্যে উফসীসহ বিভিন্ন জাতের আমনের চাষ হয়েছে। এধরনের জাতের মধ্যে রয়েছে ব্রিধান-৭১, ব্রিধান-৭২, ব্রিধান-৭৪, ব্রিধান-৮৭, ব্রিধান,৭৬ বিনা-৭ ও ১৬ জাতের ধান।

উপজেলা কৃষি অফিসার রাকিবুল হাসান বলেন, এ মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকরা ধান কেটে বাড়ি নিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে গোলায় তুলছেন।

তিনি বলেন, আমন ধান উৎপাদনের জন্য কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের নানাভাবে সহযোগীতা করা হয়েছে। কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কর্মকর্তারা কৃষকদের সবসময় পরামর্শ দিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মাজহারুল ইসলাম বলেন, কৃষকদের ধানের ন্যায্যমূল্য পাোয়ার ব্যাপারে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ নিয়েছে বলেই, ধানের মূল্য এবার ভালো হবে আশা করছি। এ ছাড়া কেউ যদি সিন্ডিকেট গড়তে চান, সে ব্যপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কাউকে ছাড়  দেওয়া হবে না। কৃষক বাঁচলে দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা থাকবে।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন