নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে সরস্বতী প্রতিমা ভাঙচুর- আটক ৬

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে সরস্বতী প্রতিমা ভাঙচুর- আটক ৬

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা প্রতিনিধি ;

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার নারাইচ গ্রামের যুব সংঘের সরস্বতী পূজামণ্ডপে হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় ৬ কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ।

গতকাল (২৬ জানুয়ারি) বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে মোহনগঞ্জ উপজেলার সুয়াইর ইউনিয়নের নারাইচ গ্রামের পূজা মন্ডপে আরতী প্রতিযোগিতা চলাকালে এ হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।

আদর্শনগর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ উপপরিদর্শক মো. হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘রাতেই আদর্শনগর ফাঁড়ি পুলিশ ও মোহনগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে হাটনাইয়া গ্রামের ছয় কিশোরকে আটক করে।

আটক হওয়া কিশোররা হচ্ছে- অনন মিয়া, নিশাদ, ফারুক মিয়া, সাবিকুল মিয়া, এসএম মুন্না খান ও অপু মিয়া। এদের প্রত্যেকের বাড়ি সোয়াইর ইউনিয়নের হাটনাইয়া গ্রামে।

নারাইচ গ্রামের যুব সংঘের কোষাধ্যক্ষ অন্তর সরকার জানান, তাদের সংগঠনের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার সকালে ভক্তবৃন্দদের উপস্থিতিতে নারাইচ গ্রামে সরস্বতী পূজা অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যার পর আয়োজন করা হয় আরতি প্রতিযোগিতার। এতে নারাইচ গ্রামের বেশকিছু তরুণ-তরুণী অংশ নেয়। এলাকার হিন্দু-মুসলিম সকলে মিলে আরতি প্রতিযোগিতা উপভোগ করি।

এ সময় অভিযুক্তরা পূজামণ্ডপে গিয়ে ভিডিও ধারণ করে। মেয়েদের ভিডিও ধারণ করতে আয়োজকরা নিষেধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে অভিযুক্ত কিশোররা নিষেধকারীদের উপর চড়াও হয়ে মারধর শুরু করে। তাদের প্রতিহত করতে গেলে একপর্যায়ে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এই সংঘর্ষ পূজামণ্ডপের সামনের সড়কে ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে অভিযুক্ত কিশোরেরা দৌড়ে গিয়ে মণ্ডপের প্রতিমা ভাঙচুর করে। এ সময় এলাকার লোকজন ওই ৬জন কিশোরকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। অভিযুক্তদের হামলায় নারাইচ গ্রামের হৃদয় বিশ্বাস ও শাওন সরকার নামে দুই কিশোর গুরুতর আহত হয়। তাৎক্ষণিক তাদের মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।

আহত শাওন সরকার ও হৃদয় বিশ্বাস বলেন, এ ঘটনার পর থেকে পূজার আনন্দ মাটি হয়ে গেছে। ঘটনার পর থেকে মণ্ডপের সকল আয়োজন বন্ধ রয়েছে। এলাকার সনাতনধর্মালম্বীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, রুবেল সরকার নামের একজন থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হবে। তাছাড়া বাকি অভিযুক্তদেরকেও আটক করা হবে।

মোহনগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ছাব্বির আহমেদ আকুঞ্জি বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাচ্ছি। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সামনের দিনে যেকোনো পূজায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আরও বেশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

আপনি আরও পড়তে পারেন