টাক মাথায় চুল লাগানো জায়েজ?

টাক মাথায় চুল লাগানো জায়েজ?

ইসলাম মানুষের শরীরে আল্লাহপ্রদত্ত সৌন্দর্যের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপ করতে নিষেধ করেছে। এটি আল্লাহর সৃষ্টিকে বিকৃত করার শামিল, যাকে ইসলামি শরিয়ত শয়তানি কর্মকাণ্ড বলে আখ্যা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে হাদিসে এসেছে— হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন— ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) অভিশম্পাত করেছেন ওইসব নারীর ওপর, যারা পরচুলা লাগিয়ে দেয় এবং যে পরচুলা লাগাতে বলে।’ বুখারি: ৫৯৩৭

তবে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বিকৃতি না ঘটিয়ে শুধু চিকিৎসার স্বার্থে যদি শরীরের কোনো অঙ্গ বা কোনো অংশ কেটে ফেলা হয় অথবা ছেঁটে ফেলা হয় কিংবা প্রতিস্থাপন করা হয়, তবে তার অনুমতি রয়েছে।

তাই প্রাকৃতিক (আসল) চুল দিয়ে যদি কেউ এমনভাবে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট বা চুল প্রতিস্থাপন করে, যাতে করে তা নিয়মিতভাবে মাথায় গজানো স্বাভাবিক চুলের অংশে পরিণত হয় এবং এর মাধ্যমে তার টাক দূর হয়, তবে তা জায়েজ আছে।  কারণ এটি মানুষের শরীরে কিডনি, চোখ অথবা হার্ট প্রতিস্থাপন করার মতো। (রদ্দুল মুহতার ৬/৩৭৩, উমদাতুল কারী ২২/৬৪)

কৃত্রিম চুল দিয়ে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট করার বিষয়টি ভিন্ন। কারণ কৃত্রিম চুল দিয়ে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট করলে এটি মানুষের প্রাকৃতিক তথা আসল চুলের অংশে পরিণত হয় না।  তাই এর অনুমতি নেই শরিয়তে।

তবে চুল প্রতিস্থাপনের বিষয়টি শুধু অনিবার্য প্রয়োজনীয়তার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ রাখতে হবে; যেমন- কোনো ব্যক্তির টাক থাকায় তিনি সামাজিকভাবে অথবা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অবজ্ঞার স্বীকার হচ্ছেন কিংবা তাকে হেয় প্রতিপন্ন করা হচ্ছে।

শাইখ মুহাম্মদ বিন উছাইমীন (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, টাকে আক্রান্ত ব্যক্তির মাথায় চুল প্রতিস্থাপন করা হয়। তা এভাবে যে, মাথার পেছনের অংশ থেকে চুল নিয়ে আক্রান্ত স্থানে প্রতিস্থাপন করা; এটা কি জায়েয?

জবাবে তিনি বলেন, হ্যাঁ; জায়েয। কেননা এটি আল্লাহ্‌র সৃষ্টিকে এর স্বরূপে ফিরিয়ে আনা এবং দোষ দূরীকরণ শ্রেণীয়। এটি সৌন্দর্যবর্ধক ও আল্লাহ্‌র সৃষ্টিতে বৃদ্ধি শ্রেণীয় নয়। তাই এটি আল্লাহ্‌র সৃষ্টিকে পরিবর্তন করার অধীনে পড়বে না। বরং এটি যা ঘাটতি আছে সেটাকে পুনরুদ্ধার করা এবং দোষ দূরীকরণের পর্যায়ভুক্ত। -(ফাতাওয়া উলামায়িল বালাদিল হারাম,পৃষ্ঠা-১১৮৫)

ইসলাম সুওয়াল ওয়া জাওয়াব অবলম্বনে

 

আপনি আরও পড়তে পারেন