নবাবগঞ্জে খাল খননে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসী, নিরব ভূমিকায় জনপ্রতিনিধিরা

নবাবগঞ্জে খাল খননে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকাবাসী, নিরব ভূমিকায় জনপ্রতিনিধিরা
সাইফুল ইসলাম: ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বাহ্রা ইউনিয়নের পশ্চিম চক বাহ্রা এলাকায় খাল খননে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।  এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এলাকার শতাধিক পরিবার।
স্থানীয়দের অভিযোগ খালের সঠিক যায়গায় খনন না করে বাড়িঘর কেটে খাল খনন করেছে সংশ্লিষ্টরা। জনপ্রতিনিধিদের জানালেও তারা কোন সহযোগিতা করে নি বরং মাটি কেটে বিক্রিতে তাদের সহযোগিতা করেছে। আর এতে  বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করলে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিয়েছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নবাবগঞ্জ উপজেলার বাহ্রা ইউনিয়নের চক বাহ্রা এলাকায় ৫০ ফিটের অধিক প্রসস্থ করে প্রায় দুই কিলোমিটার জায়গা মাটি কেটে খাল পুনঃখননের কাজ করা হয়েছে। আর এতে প্রায় শতাধিক মানুষের বাড়ি ঘর ও ফসলি জমি কাটা পরেছে। ঘর বাড়ি ভেঙ্গে আর্থিকভাবে  ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেকে। আবার অনেকে হয়েছে নিঃস্ব। অনেকের পুরো বাড়ি কেটেই তৈরি করা হয়েছে খাল। স্থানীয়দের কোন পুনঃ স্থানান্তরের ব্যবস্থা না করেই পেশি শক্তির জোড়ে কাটা হয়েছে খাল। আবার সেইসব ভুক্তভোগীদের মাটি দেয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে টাকা। টাকা নেয়ার পর মাটি কিংবা টাকা কিছুই দেয়া হয়নি তাদের। মাটি অন্যত্র বিক্রি করে পকেট ভারী করেছে সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ জালাল বলেন, খাল কাটার নামে এরা আমাদেরকেই কেটে ফেলেছে। আমাদের বেঁচে থাকাই কষ্ট হয়ে দাড়িয়েছে। খালের সীমানা রেখে তারা আমাদের বাড়ি ঘরের উপর দিয়ে খাল কেটেছে। বাঁধা দিলে বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করে।
বাবুল নামের একজন জানান, খাল কেটে উপকারের কিছুই হয়নি। আমাদের আরো ক্ষতি হয়েছে। আমাদের নিঃস্ব করে দিয়ে গেছে। দোহার নবাবগঞ্জের সাংসদ সালমান এফ রহমান ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন আমদের যা ক্ষতি করেছে তার যেনো ক্ষতি পূরণ দেয়া হয়।
ষাটোর্ধ বয়স্ক বৃদ্ধা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমি তাদের অনেক অনুরোধ করেছি তবুও তারা আমার বাড়ির অর্ধেকর বেশি কেটে ফেলেছে। সার্ভেয়ার মিলন আমার কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা নিয়েছে আমার বাড়িঘর কাটবে না বলে। আমি ঋন করে এনে টাকা দিয়েছি। তারপরও আমার বাড়ির জায়গা কেটেছে। আমার টাকাও ফেরত দেয়নি। মাটি কাটতে বাঁধা দিলে উল্টো আরো বিভিন্ন হুমকি দিয়েছে তারা। আমার পানি খাওয়ার মতো ব্যবস্থা এখন নেই।
স্থানীয় আরো একাধিক  ভুক্তভোগী অভিযোগ করে বলেন, মাটি বিক্রি করে অসাধুরা তাদের পকেট ভারী করার জন্য এই কাজ করেছেন। তা না হলে এভাবে গরিব মানুষদের মেরে কেনো এই কাজ করবে। চেয়ারম্যান, মেম্বাররাও কোন সহযোগিতা করেনি আমাদের। উল্টো তারা মাটি বিক্রিতে সহযোগিতা করেছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের।
বাহ্রা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাফিল উদ্দিন বলেন, পানি উন্নয়ন  বোর্ড যে খালটি খনন করেছে সেখানে অভিযোগ উঠেছে। সেখানে দুটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তাছাড়া এটা কৃষি প্রধান অঞ্চল। খাল খননে কৃষকদের পানি সরবরাহ ভালো হবে।
নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মতিউর রহমান বলেন, খাল খননের শেষে আমি অভিযোগ পেয়েছি। সেখানে দেখতে সরজমিনে এসিল্যান্ড সহ লোকজন পাঠিয়েছি। তাছাড়া কাজটি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তাদের ডিজাইন কিভাবে ছিলো তা আমার জানা নেই।

আপনি আরও পড়তে পারেন