নবাবগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা প্রতিযোগিতা

নবাবগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা প্রতিযোগিতা
নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি.

 

শ্রী পঞ্চমী তিথি উপলক্ষে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার যন্ত্রাইল ইউনিয়নের বিলপল্লী সবুজ সংঘের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা, ঘোড়া দৌড় ও গরুর দৌড় প্রতিযোগিতা।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ক্লাব মাঠে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী এই খেলা দেখতে ভিড় করেছিলেন প্রায় পনেরো হাজার দর্শনার্থী।

বিলপল্লীতে সবুজ সংঘের সভাপতি ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নূরেআলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে স্থানীয় সমাজকর্মী আইয়ুব আলী চুন্নু।

প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মধ্যে ৫০টি টেলিভিশন ছাড়াও ৫০টি বড় পাতিল পুরষ্কার দেওয়া হয়।

দুপুর আড়াইটার পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকার নবাবগঞ্জ, মানিকগঞ্জের হরিরামপুর ও সিংগাইর উপজেলা থেকে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য গরু ও ঘোড়া আসতে থাকে ক্লাব মাঠে। মুহুর্তে বিশাল মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে জনতার ভিড়ে

গরুর কাছি ছেঁড়ার মূল প্রতিযোগিতা শুরু হয় বিকাল ৩টা থেকে। এবারের আয়োজনে ছোট-বড় মিলিয়ে ৮০টি গরু আসে বিভিন্ন এলাকা থেকে। এদের অধিকাংশ গরু ছিল বড় আকৃতির। গরুকে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য গলায় মালা এবং গায়ে রঙ মাখিয়ে  নিয়ে আসে। যে গরু মোটা কাঁছি ছিঁড়তে পারে সেই গরুর মালিককে সম্মানিত করা হয়। আর যদি কোনো গরু কাছি ছিঁড়তে না পারে, সেই গরু প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়ে।

সন্ধ্যায় যন্ত্রাইল ইউনিয়নের চরখলশি গ্রামের প্রেম পালের লাঠিয়াল দলের লাঠি খেলা দর্শকদের বিমোহিত করে। আগত দর্শকরা যেন হারিয়ে যায় সেই পুরনো দিনে।

এ উপলক্ষে মাঠের চারপাশে বসে গ্রামীণ মেলা। মেলায় বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক খাবার ও শিশুদের খেলনার পসরা সাজিয়ে থাকেন দোকানিরা। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সের শৌখিন লোকজন কেনাকাটায় ব্যস্ত হয়ে পরেন। বিকিকিনিতেও ধুম পরে এদিন।

বিলপল্লীতে সবুজ সংঘের সভাপতি মো. নূরেআলম বলেন, ‘শ্রী পঞ্চমী তিথি উপলক্ষে অনুষ্ঠানটি এলাকার সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ মিলে ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে আয়োজন করে আসছেন। এমন আয়োজন করতে পেরে আমি নিজেই মুগ্ধ। এখানে সব বয়সের হাজার হাজার নারী-পুরুষ এসে আনন্দ উপভোগ করেছেন।’

নয়নশ্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি পলাশ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের যুবসমাজ বর্তমানে মাদকের ভয়াল ছোবলের শিকার। আমি মনে করি, গ্রামবাংলার এ ঐতিহ্যবাহী খেলা প্রতিটি উপজেলায় আয়োজন করা উচিত, যাতে যুবসমাজ লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলায় মনোনিবেশ করে মাদকের ভয়াল থাবা থেকে মুক্ত হতে পারে।’

আপনি আরও পড়তে পারেন